চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ছবি: শরীফ চৌধুরী

রোহিঙ্গাদের বিচরণ সাতকানিয়ায়

ইকবাল মুন্না

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ

সাতকানিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বসবাস করছে রোহিঙ্গারা। তারা বিভিন্ন সময় চুরি, ডাকাতি, খুন, হত্যাসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একইসাথে অসাধু উপায়ে নাগরিকত্ব নিয়ে নিচ্ছে এমন গুঞ্জনও আছে। ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও উগ্র সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিত হামলা ও গণহত্যা চালানোর পর বাংলাদেশে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রবেশ করে। বাংলাদেশে আসা পূর্বের রোহিঙ্গারাসহ সবমিলিয়ে কক্সবাজার জেলায় তাদের জন্য তৈরি হয় আবাসভূমি। এদের ছয় লাখ এখন আছে শরণার্থীদের জন্য নির্মিত কুতুপালং মেগা শিবিরে। এটি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির।

 

অভিযোগে জানা গেছে, সাতকানিয়া উপজেলার ছদাহা, কেঁওচিয়া, আমিলাইশ, কালিয়াইশ, ধর্মপুর, বাজালিয়া, পুরানগড়, ঢেমশাসহ বেশ কয়েকটি জায়গা মিলিয়ে আনুমানিক ১০ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিক বসবাস করছে। শুধুমাত্র ছদাহা ইউনিয়নে প্রায় ৫০০ জন, পূর্ব ছদাহায় ১০০ জন, ছদাহা কেঁওচিয়া স্কুল সড়কের আশেপাশে প্রায় ২৫০ জনের মতো রোহিঙ্গা বসবাস করে বলে জানা যায়। এছাড়া ইটভাটাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে রোহিঙ্গারা। বহু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে এখানকার নারী বিয়ে করে দেশের নাগরিকত্ব অর্জন করে। এরপর তাদের কেউ কেউ বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে অবস্থান করে। কেউ দেশে নানা অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে।

 

উপজেলার ছদাহা ও কেওচিয়া সীমান্ত এলাকা হরিণতোয়াতে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে। আবার ওই এলাকায় গাড়ি চলাচলের সুবিধা নেই।

 

এছাড়া হাঙ্গর খালে সেতু না থাকার কারণে এলাকাটিতে যাওয়া খুবই দুষ্কর। তাই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, পুলিশ কেউ সেদিকে সহজে যেতে চান না। আর তারই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অপরাধের আস্তানা গড়ে তুলেছেন রোহিঙ্গারা। বিগত সময় সাতকানিয়ায় একটি ভাড়া বাসা থেকে সামসুন্নাহার (২৫) নামে এক রোহিঙ্গা নারীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় তার স্বামী মো. বাবুলকে গ্রেপ্তার করেছিল র‌্যাব।  ২০২১ সালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে রোহিঙ্গা ডাকাতের হাতে নিহত হন সাতকানিয়ার ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম ওরফে মিয়া নামে একব্যক্তি। ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি লোহাগাড়ায় রোহিঙ্গাদের হাতে খুন হন জাতীয় পার্টির নেতা আনোয়ার হোসেন। রোহিঙ্গারা নারী ব্যবসা থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসা, চোরাচালান, চুরি-ডাকাতিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত বলে জানা যায়। রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসা ক্যাম্প-১০ এর আবদুর রশিদের ছেলে ইসান বলেন, ‘আমরা পেটের দায়ে পালিয়ে এসেছি। এখানে এসে শ্রমিক হিসাবে কাজ করি, যা মজুরি দেয় সেটা দিয়ে জীবন চালায়। ’

 

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা- তুজ  জোহরা বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে কঠোর নজরদারি রয়েছে। কোন ইউনিয়ন থেকে রোহিঙ্গারা যাতে ভোটার হতে না পারে সে বিষয়ে চেয়ারম্যানদের সাথে আলাদাভাবে বৈঠক করেছি এবং কমিটি করে দিয়েছি যাতে কোন রোহিঙ্গা ভোটার হতে না পারে।’

লেখক : সাতকানিয়া সংবাদদাতা।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট