চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ইসির চট্টগ্রামের তদন্তে কিছুই মেলেনি, আসছে ঢাকার কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ নভেম্বর, ২০২২ | ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ

সাতক্ষীরা জেলার ভোটার নিবন্ধন ফরম দিয়ে টাকার বিনিময়ে চট্টগ্রামে রোহিঙ্গাদের ভোটার করার কোনো সূত্র খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি। অধিকতর তদন্তের জন্য চট্টগ্রামে আসছেন নির্বাচনের কমিশনের তদন্ত কমিটি। আগামী ২৭ নভেম্বর এ তদন্ত কমিটি চট্টগ্রামে আসার কথা রয়েছে।

 

গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা নাগরিকদের ভোটার করার অভিযোগে পাঁচজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও দু’জন রোহিঙ্গাসহ ১০ জন গ্রেপ্তার করেছিল নগর গোয়েন্দা পুলিশ। নগরীর হালিশহর আবাসিক এলাকার বি-বøকে হালিশহর হাউজিং এস্টেট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করিয়ে দেওয়ার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছিলেন গ্রেপ্তার হওয়া তথ্য সংগ্রহকারীরা।

 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কামাল হোসেন, সোনা মিয়া, নুরুল আবছার, সামসু মাস্টার ও পারভীন আক্তার (২৫)। কামাল ও পারভীন রোহিঙ্গা নাগরিক। অন্য পাঁচজন হলেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অস্থায়ী কর্মচারী ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ইয়াসিন আরাফাত, নূরনবী, মিজানুর রহমান, ফরহাদুল ইসলাম ও ইমন দাস।

 

এ ঘটনার তদন্তে নেমেছিল নির্বাচন কমিশনের চট্টগ্রামের তিন সদস্যের একটি টিম। সাতক্ষীরায় বিতরণ করা ভোটার ফরম-২ কীভাবে চট্টগ্রামে এল. আর কোন উপজেলায় তা ব্যবহার করা হয়েছে কীনা-এ বিষয়ে কোনো সূত্র খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. কামরুল আলম গতকাল পূর্বকোণকে বলেন, ‘এ বিষয়ে পুলিশ মামলা করেছে। পুলিশ তদন্ত করছে। এ বিষয়ে আরও যাচাই-বাছাই করার জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনে লিখেছিলাম।’

 

কামরুল আলম বলেন, ‘চট্টগ্রামে রোহিঙ্গা নাগরিকের বসবাস বেশি। তাই সারাদেশের সঙ্গে না করে আলাদা সময় নিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনার সুপারিশ করেছি। এতে ভালো করে যাচাই-বাছাই করার সুযোগ থাকবে।’

 

এদিকে, রোহিঙ্গা নাগরিকদের ভোটার করার বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম আসছেন নির্বাচন কমিশনের তদন্ত কমিটি। নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব (সংস্থাপন) মোহাম্মদ এনামুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে সাতক্ষীরা জেলায় বিতরণকৃত ফরম-২ দিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় রোহিঙ্গা ভোটার নিবন্ধন কাজে ব্যবহার, উক্ত কাজের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রমে শুনানি আগামী ২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা, নগরীর পাহাড়তলী ও জেলার লোহাগাড়া, হাটহাজারী নির্বাচন কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে।

 

এছাড়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কামরুল আলম পূর্বকোণকে বলেন, ‘পাহাড়তলী থানায় হালনাগাদ কার্যক্রম চালানোর সময় গ্রেপ্তারকৃত ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা যেসব এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন, এসব এলাকায় যাচাই-বাচাই ও তদন্ত করা হবে।’

 

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট লাকী নামে এক রোহিঙ্গা নারী নির্বাচন কার্যালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র তুলতে গেলে এনআইডি জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে। ওই রোহিঙ্গা নারী টাকা দিয়ে ভোটার হয়েছেন বলে স্বীকার করেছিলেন। এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের কর্মচারীসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। এ ঘটনার পর পুলিশ, কাউন্টার টেররিজম ও দুদক ১১টি মামলা করেছিল।

 

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট