চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

এক সপ্তাহে বজ্রপাতে মৃত্যু ৫৬, বাঁচতে যা করবেন

অনলাইন ডেস্ক

৮ জুন, ২০২১ | ৩:০৭ অপরাহ্ণ

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেই বজ্রপাতে সারাদেশে ৫৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে- ৭ জুন ৯ জন, ৬ জুন ২৫ জন, ৫ জুন ৭ জন, ৪ জুন ৯ জন, ৩ জুন ৫ জন এবং ১ জুন একজনের মৃত্যু হয়েছে। ২ জুন বজ্রপাতে কারও মৃত্যুর কথা জানা যায়নি।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশে বজ্রপাতের পরিমাণ বেড়েছে। তবে বজ্রপাত সম্পর্কে সচেতন হলে মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।

এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ মজিদুল ইসলাম জানান, ‘ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে নভেম্বর পর্যন্ত যখনই মেঘ হোক তখনই বজ্রপাত হতে পারে। কালবৈশাখী যতক্ষণ সক্রিয় থাকে, সেটা বজ্রপাতের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ। তবে শীতকালে বজ্রপাত হয় না, কারণ তখন মেঘ তৈরি হয় না। আর জুনে মৌসুমী বায়ু এলে বজ্রপাত কমে যায়। বজ্রপাতের জন্য যে মেঘগুলো দরকার, সেগুলো হলে যেকোনো সময় বজ্রপাত হতে পারে।’

আরেক আবহাওয়াবিদ জানান, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বজ্রপাতের পরিমাণ বেড়ে গেছে। যে পরিমাণ বজ্রপাত হয় তার তুলনায় দেখা যায় কম। বড় বজ্রপাত হলে আমরা দেখতে পাই। অথবা মেঘ থেকে যেটা মাটি পর্যন্ত স্পর্শ করে সেটা দেখি। অসংখ্য বজ্রপাত হয়, যা চিন্তাও করা যায় না।’

বজ্রপাত থেকে বাঁচতে যা করবেন

বজ্রপাত সম্পর্কে সচেতন হলেই অনেক মৃত্যু এড়ানো সম্ভব। বজ্রপাতের সময় মৃত্যু এড়াতে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিপ্তর। সেগুলো হলো-

পাকা বাড়ির নিচে আশ্রয় নিন : ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে কোনো অবস্থাতেই খোলা বা উঁচু জায়গায় থাকা যাবে না। এ অবস্থায় সবচেয়ে ভালো হয়, কোনো দালানের নিচে আশ্রয় নিতে পারলে।

উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকুন : সাধারণত উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এসব জায়গায় যাবেন না বা কাছাকাছি থাকবেন না। ফাঁকা জায়গায় কোনো যাত্রী ছাউনি বা বড় গাছ ইত্যাদিতে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি থাকে।

টিভি-ফ্রিজ থেকে সাবধান : বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও ধরবেন না। বজ্রপাতের আভাস পেলে আগেই এগুলোর প্লাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করুন। অব্যবহৃত যন্ত্রপাতির প্লাগ আগেই খুলে রাখুন।

জানালা থেকে দূরে থাকুন : বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি থাকবেন না। জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভেতর থাকুন।

ধাতব বস্তু এড়িয়ে চলুন : বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না। এমনকি ল্যান্ড লাইন টেলিফোনও স্পর্শ করবেন না। বজ্রপাতের সময় এগুলোর সংস্পর্শ এসে অনেকে আহত হন।

গাড়ির ভেতরে থাকলে : বজ্রপাতের সময় রাস্তায় গাড়িতে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ অবস্থানে ফেরার চেষ্টা করুন। যদি প্রচণ্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টির সম্মুখীন হন, তবে গাড়ি কোনো গাড়িবারান্দা বা পাকা ছাউনির নিচে নিয়ে যান। এ সময় গাড়ির কাঁচে হাত দেয়া বিপৎজনক হতে পারে।

পানিতে নামা যাবে না : ঝড়-বৃষ্টির সময় রাস্তায় পানি জমাটা আশ্চর্য নয়। তবে বাজ পড়া অব্যাহত থাকলে সে সময় রাস্তায় বের না হওয়াই মঙ্গল। একে তো বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। উপরন্তু কাছাকাছি কোথাও বাজ পড়লে বিদ্যুত্‍স্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়।

খালি পায়ে বা পা খোলা জুতো নয়: বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপৎজনক। যদি একান্ত বেরোতেই হয়, তবে পা ঢাকা জুতো পরে বের হন। রাবারের গামবুট এক্ষেত্রে সব চেয়ে ভালো কাজ করবে।

চারপাশে খেয়াল রাখুন: বজ্রপাতের সময় রাস্তায় চলাচলের সময় আশেপাশে খেয়াল রাখুন। যেদিকে বাজ পড়ার প্রবণতা বেশি সেদিকটি বর্জন করুন। কেউ আহত হলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট