চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

একজন ফারাজ করিমের আলোর পথে হেঁটে যাওয়ার গল্প

জাহেদুল আলম হ রাউজান

২৩ জুন, ২০২২ | ১:০৫ অপরাহ্ণ

কখনো অন্যায়ের প্রতিবাদ, কখনো অগ্নিদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো কিংবা মহামারী করোনাকালীন দুর্যোগ মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়া, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া। সবখানেই এখন তার দেখা মেলে। আর তিনি হলেন ‘মানবিকতার দূত’ ফারাজ করিম চৌধুরী। আবার তিনি কখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজনীতি, সমাজের নানা অবিচার, অসঙ্গতি তুলে ধরেন ফেসবুক লাইভ কিংবা ভিডিও আপলোড দিয়ে। কখনো সশরীরে গিয়ে অন্যায়-অবিচারের সমাধান দেন। বয়স ২৯ পেরোয়নি এখনো। এই বয়সেই মানবিক গুণাবলী নিয়ে সবার নজর কাড়ছেন তিনি। ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে তার আলোর পথে হেঁটে যাওয়ার গল্প। তিনি আর কেউ নন চার চারবারের নির্বাচিত সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর সুযোগ্য সন্তান। বাবার সুনাম ধারণ করে নয়, নিজ গুণ, কর্মে-পরিচিতিতে এগিয়ে যেতে চান তিনি। ইতিমধ্যে তিনি নানা ইতিবাচক কর্মকাণ্ড করে সুনাম অর্জনের পাশাপাশি সারাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছেন। এবার তিনি সুনামগঞ্জের বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দেশের মানুষের কাছে একজন মানবতাবাদী তরুণ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ পুত্র ফারাজ করিম চৌধুরী গত সোমবার থেকে নিজেই সুনামগঞ্জে ত্রাণ নিয়ে বানভাসিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় দুর্গত মানুষের কাছে নিজ হাতে ত্রাণের প্যাকেট তুলে দিয়েছেন। ত্রাণের পাশাপাশি ঘোষণা দিয়েছেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ঘর নির্মাণের জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দের।
‘এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ফাউন্ডেশন’র ব্যানারে পরিচালিত এই ত্রাণ কার্যক্রমের মানবিক কর্মযজ্ঞের সারথি হিসেবে রয়েছেন ৫০ জনের একটি স্বেচ্ছাসেবক কর্মী বাহিনী। তাদের অনেকে জানান, মঙ্গলবার থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত অতি বন্যাদুর্গত অঞ্চল সুনামগঞ্জের সুরমা, দারাইর গাঁও, মইনপুর, হাল্লরগাঁও, খাইতনতর, গোদার গাঁও, জগন্নাথপুর, হালুয়াঘাট, ধোপাখালী স্লুইচ গেইট, দোয়ারা বাজারসহ বিভিন্ন প্রান্তিক, দুর্গম জনপদে ফারাজ করিম নিজে ছুটে গিয়ে ১০ হাজার পরিবারকে ত্রাণসামগ্রী তুলে দিয়েছেন। প্রত্যক গ্রামে ৩শ থেকে ৫শ পর্যন্ত ত্রাণের প্যাকেট দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ফারাজ করিম চৌধুরী গতকাল বুধবার বিকেলে পূর্বকোণকে বলেন ‘গত দুইদিনে ৪ ট্রাকে ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের ২৫ টন সামগ্রী বন্যাকবলিত অসহায় নারী-পুরুষকে দেয়া হয়েছে। আরো ৭-১০ দিন এখানে অবস্থান করে সহযোগিতা করে যাবো। তাহেরপুর গ্রামটা নতুন করে পুর্নবাসন করার জন্য ক্ষতিগ্রস্তদের ৫০ লাখ টাকা প্রদানের ঘোষণা আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) ফেসবুক লাইভে দেয়া হবে। আমার পাশে যদি মানুষজন দাঁড়ায়, আমি আরো শক্তিশালী হবো। আমি আল্লাহ’র উপর ভরসা করছি।’
ফারাজ করিমের টিমে থাকা সেচ্ছাসেবকরা জানান, সুনামগঞ্জের বন্যাদুর্গতদের জন্য প্রদান করা ত্রাণের প্যাকেটে ছিল খাদ্যসামগ্রী, জরুরি ওষুধ, মোমবাতি, দিয়াশলাই, পানি। সুনামগঞ্জ যাওয়ার আগে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে সেসব ত্রাণসামগ্রী প্যাকেটজাত করার কাজ চলে।’ সোমবার সকাল ৬টায় ফারাজ করিম চৌধুরী ২টি ট্রলার নিয়ে কোনরকম লাইফ সাপোর্ট ছাড়াই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খরস্রোতা সুরমা নদী পাড়ি দিয়ে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামে ত্রান নিয়ে যান। একইভাবে গতকাল বুধবারও ২ ট্রলার দিয়ে ছুটে যান বানভাসি মানুষের কাছে।

পূর্বকোণ/এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট