চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

চীনা নাগরিকদের গোয়াদর ছাড়ার হুমকি দিয়েছে পাকিস্তানি বিক্ষোভকারীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৪ জানুয়ারি, ২০২৩ | ৪:৪২ অপরাহ্ণ

এশিয়ায় চীনের বিআরআই (বেল্ড এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ) এর জন্য পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দরের সম্প্রসারণ নিয়ে বিক্ষোভের ফলে চীন ও পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সম্পর্ক হুমকির মুখে পড়েছে। গত সপ্তাহের শেষদিকে, পাকিস্তানের এক নেতা, চীনা নাগরিকদেরকে গোয়াদর ছেড়ে চলে যাবার কথা বললে ঘটনা নতুন মোড় নেয়।

গোয়াদর রাইটস মুভমেন্টের সঙ্গে যুক্ত মাওলানা হিদায়াত উর রহমানের নেতৃত্বে প্রায় দুই মাস ধরে এ বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভের মধ্যে প্রধানত গোয়াদর বন্দরের প্রবেশপথ এবং গোয়াদর ইস্ট বে এক্সপ্রেসওয়ে অবরুদ্ধ করা হয়েছে, যা বন্দরটিকে পাকিস্তানের প্রধান হাইওয়ের সাথে সংযোগ করে।

বিক্ষোভকারীরা গোয়াদরে নিরাপত্তা চ্যাকপয়েন্টগুলো হ্রাস এবং গভীর সমুদ্রে ট্রলিং বন্ধ করার মতো দাবি জানায়। বিক্ষোভকারীরা সরকারকে ইরানের সাথে অনানুষ্ঠানিক সীমান্ত বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা সহজ করার দাবি জানায়। যদিও এই দাবিগুলো গোয়াদরে চীনা প্রকল্পের সাথে সরাসরি সংযুক্ত নয়।

গত বছর, রেহমান ৩২ দিনেরও বেশি সময় ধরে একই ধরনের বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সরকার তার উত্থাপিত দাবিগুলি সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর তিনি সরে আসেন। কিন্তু সরকার কোনও ধরনের সমাধানই করেনি।

উগ্রপন্থী হলেও, চীনা নাগরিকদের সতর্কতা জারি করার রেহমানের এ সিদ্ধান্ত, সরকারকে আলোচনায় বাধ্য করার পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গোয়াদর বন্দর কম্পাউন্ডে আনুমানিক ৫০০ চীনা নাগরিক বসবাস করছে।

২০২১ সাল থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে রয়েছে চীনা নাগরিকেরা। ২০২১ সালের জুলাইয়ে, দাসু জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সাইটের দিকে যাওয়ার পথে বোমা হামলায় কমপক্ষে নয়জন চীনা শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটে।

এসব কর্মকান্ডে চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তানের উপর চাপ প্রয়োগ করছে বেইজিং। গত মাসে যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, শেহবাজ শরীফ বেইজিং সফরে যান, তখন নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি ছিল আলোচনার শীর্ষে।

পাকিস্তান চীনের বিশেষ অর্থনৈতিক সম্পর্কের ফলে, চীনকে গোয়াদরের গভীর সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে মধ্য এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের বাজারে সবচেয়ে সহজতর প্রবেশাধিকার দেবে পাকিস্তান।

মহাসড়ক, রেলপথ এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন সহ সিপিইসি-এর জন্য ৫০০ কোটি ডলারেরও বেশি ব্যয় হবে। গোয়াদর বন্দর এই উদ্যোগের মূলে রয়েছে।

২০১৫ সালে যখন সিপিইসি চালু হয়, তখন এটি স্থানীয় বিক্ষোভের মুখে পড়ে। পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রশাসনের সময় তার সরকার এবং চীনের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে প্রকল্পটি তার গতি হারায়। তবে নতুন প্রশাসন সিপিইসিকে পুনরুজ্জীবিত করতে আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট