চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল

সেমিফাইনালের পথে এগিয়ে গেল চট্টগ্রাম আবাহনী

চট্টগ্রাম আবাহনী ৪, ইয়ং এলিফ্যান্টস ২

দেবাশীষ বড়–য়া দেবু

২৪ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:২২ পূর্বাহ্ণ

সরলদোলকের মতো দুলছিলো ম্যাচের ভাগ্য। ম্যাচের রংও পাল্টাচ্ছিলো ক্ষণে ক্ষণে। এতে শেষ হাসিটা ছিল চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের। দলটি প্রথমে গোল করে এগিয়ে গেলেও পরপর ২ গোল হজম করে পিছিয়ে যায় এবং অনেকক্ষণ চাপের মধ্যে থাকতে হয়েছিলো। শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতার খোলস থেকে বেরিয়ে আসে বীর দর্পে। এতে সমর্থকদেরও নিরাশ হতে হয়নি। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশনে খেলতে নামা চট্টগ্রাম আবাহনী গতকাল ৪-২ গোলে বিধ্বস্ত করেছে লাওসের ইয়াং এলিফ্যান্টসকে। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ খেলায় প্রথমার্ধে ২-১ গোলে এগিয়েছিলো ইয়াং এলিফ্যান্টস। গতকালসহ টানা ২য় জয়ে সেমিফাইনালে খেলার পথে নিজেদের ভিত শক্ত করেছে এ টুর্নামেন্টের প্রথমবারের চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনী। পরের ম্যাচে কাল শুক্রবার মোহনবাগানের সাথে কমপক্ষে ড্র করলেই সেমিফাইনালে চলে যাবে চট্টগ্রাম আবাহনী। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে মোহনবাগানকে হারানো ইয়ং এলিফ্যান্টস গতকালের পরাজয়ে আপাতত কিছুটা দুরে সরে গেছে। তবে তাদের সম্ভাবনা একেবারে উবে যায়নি। পরের ম্যাচে মালদ্বীপের

টিসি স্পোর্টসকে হারাতে পারলে তাদের কপালও খুলে যেতে পারে। কিন্তু পরের ম্যাচে মোহনবাগান যদি চট্টগ্রাম আবাহনী এবং ইয়ং এলিফ্যান্টসও মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসকে হারিয়ে দেয়। তখন আবাহনী, মোহনবাগান ও ইয়াং এলিফ্যান্টস’র পয়েন্ট সমান হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে হেড টু হেড পদ্ধতিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ নির্ধারণ করা হবে। গতকাল খেলার শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের উপর চাপিয়ে খেলে চট্টগ্রাম আবাহনী। এতে ৫ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো স্বাগতিকরা। কিন্তু ডানপ্রান্ত থেকে রহমত মিয়ার হাওয়ায় ভাসানো বলে সোহেল রানার দর্শনীয় হেড কিপার কোনমতে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। ১০ মিনিটে সমর্থকদের উল্লাসে মাতিয়ে এগিয়ে যায় চট্টগ্রাম আবাহনী। এ সময় সতীর্থ আরিফুরের বাড়ানো বলে লুকা রতকোভিচ বামদিক দিয়ে বিপদসীমানায় ঢুকে পড়েন। তারা বাড়ানো বলে চিনেডু ম্যাথিউ নিখুঁত টোকায় বল জালে জড়ান (১-০)। পরের মিনিটেই সমতা আনতে পারতো অতিথিরা। কিন্তু বক্সের ঠিক উপর থেকে মারা বনফাচান বনকংয়ের শট ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়। অবশ্য সমতা আনতে দলটি খুব একটা সময় নেয়নি। কয়েক মিনিট পরেই দেখার মতো এক গোলে সমতায় ফেরে ইয়াং এলিফ্যান্টরা। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে চট্টগ্রাম আবাহনীর জাল কাঁপিয়ে দেন আফিক্সাই থানাখান্তি (১-১)।

২৫ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো চট্টগ্রাম আবাহনী। কিন্তু অধিনায়ক জামাল ভুইয়া’র দুর্দান্ত ফ্রি-কিক এলিফ্যান্ট কিপার কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। ৩৫ মিনিটে এগিয়ে যায় অতিথিরা। আবাহনীর উজবেকিস্তানী ডিফেন্ডার ইকবাল জনের অমার্জনীয় ব্যর্থতায় বল পেয়ে যান এলিফ্যান্টস দলের কিওহোনাম। একেবারে ঠান্ডা মাথায় দেখে শুনে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন (২-১)।

প্রথমার্ধে ২-১ গোলে পিছিয়ে থাকা চট্টগ্রাম আবাহনী দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই সমতা আনার জন্য চাপ প্রয়োগ করে খেলতে থাকে। এতে করে ৭ মিনিটেই সাফল্য পায় স্বাগতিকরা। এ সময় বাদিকে সোহেল রানার সেন্টার থেকে রটকোবিচ লুকা দর্শনীয় হেডে’র গোলে দল সমতায় ফেরে (২-২)। ২৭ মিনিটে আবারো লিড পায় চট্টগ্রামের দলটি। আরিফুলের লম্বা থ্রোতে গোলমুখে সৃষ্ট জটলায় অধিনায়ক জামাল ভুইয়ার মাটিঘেষা শট জালে আশ্রয় খুঁজে নেয় (৩-২)। এরপর সুযোগ হাতছাড়া হলেও ৩২ মিনিটে চতুর্থ গোল পেয়ে উল্লাসে মাতে আবাহনীর গ্যালারিপূর্ণ সমর্থক ও কর্তারা। জামালের কর্নারে মাথা ছুইয়ে অতিথিদের কফিনে শেষ পেরেকটি ঢুকিয়ে দেন দিদিয়ের (৪-২)। শেষ দিকে

অন্তত নিশ্চিত ২ গোল হাতছাড়া করে ইয়াং এলিফ্যান্টস। ৩৮ মিনিটে চিটপাসংয়ের নিশ্চিত গোলের শট ফেরান কিপার মোহাম্মদ নেহাল। ৪২ আফিক্সাইয়ের ফ্রি-কিক কিপারকে ফাঁকি দিলেও ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়। এতেই প্রথম পরাজয়ের স্বাদ পায় অতিথি দলটি। খেলা শেষে ম্যাচ সেরা জামাল ভুইয়াকে প্রাইজমানি ও ক্রেস্ট তুলে দেন হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান এবং রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল ও সিজেকেএস নির্বাহী সদস্য অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট