এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় আসছে একাধিক নতুন প্রযুক্তিগত চমক। হজযাত্রীদের নিরবচ্ছিন্ন মানসম্মত সেবা দিতে বাংলাদেশ, মক্কা ও মদিনায় স্থাপন করা হচ্ছে ‘হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’। যেখানে হাজিদের লাগেজ হারানো, অসুস্থতা বা পথ হারিয়ে ফেলার মতো পরিস্থিতি এড়াতে সার্বক্ষণিক সহায়তা করবে এ প্রযুক্তি। শুধু তাই নয়, বিশেষ মোবাইল এপসের মাধ্যমে যেকোন সমস্যার তাৎক্ষণিক সহায়তা পাবেন হাজিরা। থাকছে আরও নানান সুবিধা, যা সহজ করবে হজযাত্রা।

জানা গেছে, এবারের হজ সামনে রেখেই হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার নামক এই এপসটি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্মমন্ত্রণালয়। যা আগামী ২০-২২ এপ্রিলের মধ্যে এ বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। চালু হওয়ার পর সেন্টার থেকে হজযাত্রীদের বিভিন্ন সেবা, উদ্ভূত সমস্যার সমাধান, অভিযোগ নিষ্পত্তি, প্রশ্নের জবাব ও প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত মিলবে এ সেবায়।

এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় হজ পালন নির্বিঘ্ন করতে বাংলাদেশে, মক্কা ও মদিনায় ‘হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টারে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর একটি এ্যাপস’র মাধ্যমে হজযাত্রীদের বিভিন্ন সেবা, উদ্ভূত সমস্যার সমাধান, অভিযোগ নিষ্পত্তি ও প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত একত্রে প্রাপ্তির ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর এ নিয়ে কাজ শুরু করে ধর্মমন্ত্রণালয়।

তথ্যমতে হজযাত্রীদের সুবিধার্থে সকলের মোবাইল সিম থাকবে কম খরচে রোমিং সেবা-সক্ষম। এর ফলে সৌদি আরবে গিয়ে হজযাত্রীদের নতুন করে সৌদি কেম্পানির মোবাইল সিম কিনতে হবে না। এতে হাজিদের সঙ্গে তাঁদের পরিবার-পরিজনের যোগাযোগের সমস্যা দূর হবে। এছাড়া সৌদিআরবে নগদ টাকা বহনের ঝুঁকি কমাতে সব হজযাত্রীকে ইসলামী ব্যাংকের ‘ডেবিট কার্ড’ দেওয়া হবে, যাতে করে সৌদিআরবে গিয়ে হজযাত্রীরা এটিএম বুথ থেকে প্রয়োজনীয় রিয়াল তুলে খরচ করতে পারেন। লাগেজ ট্র্যাক করতে থাকবে ইলেকট্রনিক চিপ, যার অবস্থান জানা যাবে কল সেন্টার থেকে। তৈরি হচ্ছে প্রশিক্ষণমূলক ভিডিও ও গাইডলাইন বুকলেট, যাতে যাত্রীরা যেকোনো পরিস্থিতিতে প্রস্তুত থাকতে পারেন।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (হজ অধিশাখা) মো. মঞ্জুরুল হক গণমাধ্যমকে জানান, হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের কাজ চলছে। এটি আশকোনা হজ অফিসে স্থাপন করা হবে। একই সঙ্গে মক্কা ও মদিনায় আমাদের হজ অফিসে এটি থাকবে। একটি এ্যাপ করা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা সেন্টার ও এ্যাপ উদ্বোধন করবেন। এবারের হজ সামনে রেখেই এটা করা হবে। এ্যাপটি ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়ে গেছে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে। এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি মাধ্যমে ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে ৮৭ হাজার ১০০ জন হজ পালন করবেন। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয়ে শেষ হয় ২৬ ডিসেম্বর। হজযাত্রীদের ভিসা ইস্যু শুরু হয়েছে ১৯ ফেব্রুয়ারি। আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে শুরু হবে হজ ফ্লাইট।

পূর্বকোণ/ইব