চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সংগীতা, করবী ও মিথিলা নাট্যশিল্পী-ত্রয়ীর অন্তর্কথন

নাদো প্রতিবেদক

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ২:০৮ পূর্বাহ্ণ

নাগরদোলা বৈঠকী শিল্প-আড্ডা ধরতে চায় তিন অধ্যায়ের তিন শিল্পীত মানুষকে। প্রতি মাসেই চেষ্টা থাকবে শিল্পের বিভিন্ন শাখার এমন তিনজনকে উপস্থাপন করতে, যারা তাদের মতো করে সময়ের গতিপথ নির্ধারণের চেষ্টা করেছেন। কেউ মাঝে থমকে গেলেও আবারও ফিরে আসার উদ্যোগ নিয়েছেন স্বকীয় শিল্পের ভিত্তিমূলে। এবারে নাট্যজগতের তিন অভিনয় শিল্পীকে নিয়ে আজকের বৈঠকী আড্ডা।
নৃত্য দিয়েই শুরু হয়েছিলো সংগীতা চৌধুরীর পথ চলা কিন্তু সময়ের এক বিস্ময়কর ফেরে নাটকই হয়ে উঠেছে তার আরাধ্য।
একসময় গ্রুপ থিয়েটারের একনিষ্ঠ নাট্যকর্মী ছিলেন মিথিলা চক্রবর্তী। মাঝে পড়াশোনা ও সংসার জীবনের টানাপড়েনে ছেদ পড়ে নাট্যচর্চায়। কিন্তু নাটকের প্রতি তার দায়বদ্ধতা থেকে সরে যাননি কখনো। সে কমিটমেন্ট থেকেই আবারো ফিরছেন তার প্রিয় নাট্যাঙ্গনে।
অন্যদিকে, সংগীত শিল্পী করবী দেশের অধীত বিষয় হচ্ছে, শুদ্ধ সংগীত-চর্চা। বিশেষ করে পঞ্চকবির গানকেই নিজের অভিজ্ঞান করে নিয়েছেন। তবে ছোটবেলা থেকেই নাটকের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকলেও গ্রুপ থিয়েটার নাট্যচর্চার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েছেন সম্প্রতি।
শুরু হচ্ছে তিন নাট্যকন্যার বৈঠকী আড্ডা:
করবী দাশ : সংগীতা, নাচ দিয়েইতো তোমার শুরু আমরা জানি। সেই সময়কার কথা একটু বলবে?
সংগীতা চৌধুরী : আমাদের পরিবারে সবসময়েই শিল্পচর্চা ছিলো। বড়দি আবৃত্তি শিল্পী ইন্দিরার কাছে আমার নাচ শেখা শুরু। পরে আলাউদ্দিন ললিতকলা একাডেমিতে নৃত্যগুরু রুনু বিশ^াসের কাছে দীর্ঘদিন তালিম নিয়েছি। শিল্পকলা একাডেমিতেও নাচ শেখার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি। সেই সুবাদে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ও নতুন কুঁড়িতে নাচ ও আবৃত্তিতে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছি। সে সময় তোমার সঙ্গেও আমার প্রায় দেখা হতো বিভিন্ন প্রতিযোগিতাÑ মনে আছে?
করবী : হুম, আলাউদ্দিনে যেতাম আমরা। তুমি নাচে আর আমি গানে ছিলাম। কতো যে প্রতিযোগিতায় আমরা নাচ ও গানে অংশ নিয়েছি তার হিসেব মেলাতে পারবো না এখন।
মিথিলা চক্রবর্তী : সংগীতা তোমার সঙ্গে পরিচয় কিন্তু শিল্পকলায় নাচ শিখতে এসে। আর করবীর সঙ্গে পরিচয় অপর্ণাচরণ স্কুলে পড়ার সুবাদে।
সংগীতা : হুম, আমি আর মিথিলা একসাথে নাচ শিখেছি।
করবী : ওহ্! তাই? মিথিলার শুরুটাও তাহলে নাচের মাধ্যমেই?
মিথিলা : তা বলতে পারো। তবে খুব বেশিদিন শিখিনি। ছোটবেলায় বিভিন্ন সংগঠনের সাথে নাচে-গানে অংশ নিয়েছি এটুকুই।
সংগীতা : মিথিলা, এবার তোমার নাটকে কাজ করা নিয়ে কিছু শুনতে চাই।
মিথিলা : মঞ্চনাটক দেখতে দেখতে একটা ভালোলাগা তৈরি হয়েছিল। এরপরই নিজের ভেতর মঞ্চে অভিনয় করার আগ্রহ তৈরি হয়। ইন্টারে পড়ার সময়টাতে সমীকরণ থিয়েটারের নাট্যজন মাশরুজ্জামান মুকুট ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয়। মূলত তার উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় আমার মঞ্চে অভিনয়ের স্বপ্ন-পূরণের দ্বার খুলে যায়।
করবী : এর পরতো মঞ্চনাটকের সাথে সম্পৃক্ত হলে। সেসময় কি কি কাজ করেছিলে তুমি?
মিথিলা : হুম, ঐ সময় একটানা অনেকগুলো নাটকে কাজ করেছি। নাট্যকার স্বপন ভট্টাচার্য্যরে নির্দেশনায় ‘টু ইডিয়টস’-এর ‘অলকা’ চরিত্রে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে যাত্রা শুরু হয়। তার কাছেই আমার অভিনয়ের হাতেখড়ি বলা যায়। পরবর্তীতে তার উৎসাহে এবং নিজের মনের তাগিদেই কাজ করিÑ অহিদুল আলম টিপুর নির্দেশনায় ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম’, মোস্তফা কামাল যাত্রার নির্দেশনায় ‘মৃচ্ছকটিক’ ও ‘কবিয়াল রমেশ শীল’, আমিনুর রহমান মুকুলের নির্দেশনায় ‘মলকাবানু’-তে অভিনয় করি। এরপর অভিনয়ে ছেদ পড়ে এটা তো আগেই জেনেছিস।
সংগীতা : বাহ! অনেকগুলো কাজ করেছ তো! এবার করবী তুমি বল, তোমার গানের শুরুটাতো আমরা জানি। নাটকে অভিনয় কি ছোটবেলাতেই শুরু করেছিলে?
করবী : ঘটনাচক্রে তাই ছিলো। আমাদের বাড়ির কাছেই ছিলো রামকৃষ্ণ মিশন। মিশনে প্রতিবছর একটা নাটক মঞ্চস্থ হতো। সেখানে আমার এক দিদি অভিনয়ের মহড়া দিচ্ছিলো। আমি গিয়েছিলাম তাকে ডাকতে। গানের ক্লাসে যাবো বলে। ডাকতে গিয়েই ওই নাটকের নির্দেশক প্রণব দাশগুপ্তের নজরে পড়ি। তিনি সেই দিনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আমাকে দিয়ে ‘দেবী সারদা’র চরিত্রে অভিনয় করাবেন। শুরুটা তাঁর হাতধরেই।
মিথিলা : তোমার গান নিয়ে একটু একটু করে এগিয়ে চলাটা আমি উপভোগ করি। কারণ, সবসময় যোগাযোগটা আমাদের মধ্যে ছিলো। কিন্তু সংগীতার সাথে মাঝখানে অনেক দিনের বিরতি ছিলো।
সংগীতা : মিথিলা, এবার তোমার নাটকে কাজ করা নিয়ে কিছু শুনতে চাই।
সংগীতা : হ্যাঁরে। আমি জাহাঙ্গীরগর বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ার কারণে ঢাকায় চলে আসা।
করবী : সেই সুবাদেই হয়তো তোমার ঢাকায় থিতু হওয়া। আর এক এক করে এক একটা ক্ষেত্রে কাজ করে সুযোগগুলো পাওয়া তাই না?
সংগীতা : একদম। নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন স্যারের সাহচর্য আমার জীবনে অন্যমাত্রা যোগ করেছিল। সেটা বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ার কারণেই বলতে হবে।
মিথিলা : কিভাবে অভিনয়ের সাথে যুক্ত হলে একটু বলো আমাদের।
সংগীতা : স্যারের গনের দল ‘কহন কথা’ যা দিয়ে উনার সাথে পরিচয়। তারপর বিশ^বিদ্যালয়ের নাট্যতত্ত্ব বিভাগে কোরিওগ্রাফি দিয়ে সংকীর্তন নাট্য-সম্প্রদায়ের সাথে যুক্ত হওয়া। শুরু হয় ‘কিনু কাহারের থেটার’ দিয়ে। তারপর নাট্যজন তারিক আনাম খানের নাট্যকেন্দ্রে কাজ করা শুরু। এখনো নাট্যকেন্দ্রের সদস্য হয়ে কাজ করছি। সম্প্রতি মহড়া চলছে সাইদ আহমেদের অনুবাদ ও নির্দেশনায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় নাটকের। যার মঞ্চায়ন হবে সহসা।
করবী : আচ্ছা! মিথিলাকে আমরা পরবর্তীতে আর মঞ্চে পেলাম না কেন?
মিথিলা : পরিস্থিতি বন্ধু। মানুষ চাইলেও পরিস্থিতি আমাদের নিজেদের পাল্টে অন্য মানুষরূপ ধারণা করতে বাধ্য করে। যেমনটা তোমারও হয়েছিলো করবী। তুমি এটা খুব ভালো করেই বুঝতে পারবে।
সংগীতা : একটু খুলে বল না মিথিলা! কেন তুমি অভিনয় থেকে দূরে সরে গেলে?
মিথিলা : বিয়ে হয়ে গেলো। তার উপর পড়াশোনা, শ^শুরবাড়ির দায়িত্ব, সন্তানদের সময় দেয়া। তবে এখন ভাবছি নিজের ইচ্ছাশক্তির ঘাটতি ছিল বৈকি। নিজের চর্চিত সব দায়দায়িত্বের মধ্যে থেকেও কাজ করে যাচ্ছেন এমনও অনেকে আছেন। হয়তো আমি পারিনি। আর আমরা যে সময়টাতে কাজ শুরু করেছিলাম তখন নারী চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কর্মীরও অপ্রতুলতা ছিলো। পরিবার থেকে রাজি হতো না। যদিও এখন সে অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছে। তোমাদের এগিয়ে যাওয়া দেখে সত্যিই গর্বিত হই।
করবী : হুম, আমরা তিনজনই ’৯৩ ব্যাচের বন্ধু। কিন্তু সংগীতার দৃঢ়তা, পরিশ্রম, অধ্যবসায়Ñ সর্বোপরি কাজের গতিকে ধরে রাখার প্রয়াস তাকে আজ একটা দৃঢ় অবস্থানে নিয়ে আসতে সাহায্য করেছে। শুনলাম তুমি একটা পদে মনোনীত হয়েছো. কোথায় একটু বলবে?
সংগীতা : আমিতো নেপথ্যে কণ্ঠ দিচ্ছি দীর্ঘদিন। থিয়েটারে অভিনয় ছাড়াও আরো কিছু কাজ আমি অনেকদিন ধরে করে আসছি। দীপ্ত টিভির সুলতান সোলায়মানের স্ত্রী ‘হুররম’ চরিত্রে কণ্ঠ দিয়ে বেশ সুনাম অর্জন করেছি। এছাড়া এটিএন বাংলায় ‘জান্নাত’, চ্যানেল আইয়ে ‘লুকানো ভালোবাসা’, দুরন্ত টিভিতে ‘টিপ দ্যা মাউস’, ‘সিসিমপুর’-সহ অনেকগুলো বিদেশী নাটকের বাংলা ডাবিং-এ অংশ নিয়েছি। এ কাজের সূত্র ধরে আমরা ‘ভয়েস এন্ড ডাবিং প্রফেশনালস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ গঠন করি। বর্তমানে আমি এর সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। যাক্, আমার কাজ নিয়ে অনেক কথা হলো। এবার তোমার কাজের কথা একটু শুনি। করবী, গান নিয়েতো তোমার আরো বেশি জড়িত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু আমরা তোমাকে সেভাবে পাইনি কেন?
করবী : আসলে একদম নিশ্চুপ ছিলাম বা সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে দূরে ছিলাম এটা বলা যাবে না। অল্প-স্বল্প কাজ করেছি বিভিন্ন সময়। তবে চলার গতি ছিলো মন্থর। কারণ, সুযোগের অভাব। অথবা এভাবে যদি বলি কাজের গতিকে ধরতে না পারার যোগ্যতার অভাব ছিলো হয়তো। দেখো, আমার ৮-৯ বছর বয়স থেকে ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে কাজের শুরু। সেই সময়কার বিটিভিতে প্রচারিত শিশুমেলা দিয়ে শুরু করেছিলাম। তারপর নতুন কুঁড়ির জাতীয় পুরস্কার অর্জন আমাকে আরো বেশি আত্মবিশ^াসী করে তুলেছিলো। তখন নিজের সংগীতচর্চায় আরো মনোযোগী হই। তারপর একে একে ঈদের অনুষ্ঠান, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান, আমরা নতুন এসব অনুষ্ঠানে নিয়মিত চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা গিয়ে করেছিলাম। কিন্তু একটা সময়ে এসে থামতে হলো। পড়াশুনা, বিয়ে, সংসার, সন্তান এসবও আমার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়েছে বলে আমি মনে করি। তাই কিছুদিন এ জীবনটাকেও উদ্যাপন করতে চেয়েছি নিজের মতো করে। আবার, মনোযোগী হয়েছি।
মিথিলা : সত্যি, তোমাদের দেখে আমি নিজেও বেশ প্রাণিত হই। আমারও কাজ করার তাগিদটা বেশ অনুভব করছি। আবারও সেই পরিচিত ভালোলাগার জায়গায় মঞ্চনাটকে কাজ করতে চাই।
সংগীতা : কাজতো শুরু করেছো, আমি জানি।
মিথিলা : হুম, রোহিঙ্গাদের নিয়ে সচেতনতামূলক ‘পাপেট শো’তে নেপথ্যে কণ্ঠ দিয়েছি। শুরু করেছি। দেখা যাক। তুমিওতো রোহিঙ্গাদের নিয়ে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছো। একটু খুলে বলবে?
সংগীতা : অনেকগুলো চলচ্চিত্রে কাজ করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে ‘কোয়ার্টার মাইল কান্ট্রি’, প্রসূন রহমানের ‘জন্মভূমি’Ñ যেটা জাতিসংঘের হাউজ অব কমনস্-এ প্রদর্শিত হয়েছে। তাছাড়া তানভীর মোকাম্মেলের ‘রূপসা নদীর বাঁকে’, সজীব ওয়াহিদের ‘জাস্ট এ জোক ডারলিং’ এবং সম্প্রতি ফখরুল আরেফিন খানের ‘গ-ি’ মুক্তি পেয়েছে। আর মঞ্চে কাজ করছি নিয়মিত অনেক দলের সাথে।
করবী : অভিনন্দন বন্ধু তোমাকে, তুমি এভাবে এগিয়ে যাও। তোমার এগিয়ে চলা আমাদের জন্যেও গৌরবের।
সংগীতা : ধন্যবাদ বন্ধু। তুমিও এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছো জেনে আমারও ভালো লাগছে। দেশের বাইরেও অনুষ্ঠান করেছো শুনলাম।
করবী : হুম, কোলকাতায় আগরতলায় কয়েকটা অনুষ্ঠান করেছি। তেমন উল্লেখ করার মতো কিছু নয়। তবে কয়েকটা চ্যানেলে গান গাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। ‘তারা’, ‘গ্লোব টিভি’ বিশেষ করে ‘আকাশবাণী’-তে একটা সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে অংশ নেয়াটা ছিলো আমার জন্য গৌরবের। এছাড়া আগরতলায় ভুবনেশ^রী টিভি আর আমাদের দেশে বিটিভি ছাড়াও চ্যানেল আইন, বৈশাখী টিভি, মাছরাঙা ও একুশে টিভিতে আমার বেশ কয়েকটা অনুষ্ঠান সম্প্রচার হয়েছে।
মিথিলা : তোমার পরের দিকে এসে আবার অভিনয় করার কথাতো জানলাম না।
করবী : ছোটবেলায় অভিনয় করেছিলাম সখ করে। তারপর আবার কাজ শুরু করি যখন ‘ফুলকি’ সহজপাঠে শিক্ষকতা শুরু করি। কবি ও কলামিস্ট আবুল মোমেনের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় তাঁর পা-ুলিপি নিয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে অনেকগুলো শিক্ষামূলক নাটিকায় অংশ নিয়েছি ফুলকির শিশুদের সঙ্গে। তারপর বিশিষ্ট নাট্যকার শান্তনু বিশ^াসের উৎসাহে ‘কালপুরুষ’-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হই। তার স্ত্রী নাট্যজন শুভ্রা বিশ^াসের নির্দেশনায় ‘যদি আর একবার’ নাটকে গুরুত্বপূর্ণ ‘বনলতা’ চরিত্রে অভিনয় করেছি।
মিথিলা : তোমাদের কাজের কথা শুনে ভালো লাগছে। নতুন করে নাটকে কাজ শুরু করার উৎসাহ পাচ্ছি।
সংগীতা : দেখো, এখন গ্রুপ থিয়েটার নাট্যচর্চায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে রেপার্টিরি থিয়েটারের মাধ্যমে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে অভিনয় করতে পারছে নাট্যকর্মীরা। তুমিও এভাবেও কাজ করতে পারো। আমি নিজেও কাজ করেছি কয়েকটা গ্রুপের সাথে। তার মধ্যে রোকেয়া রফিক বেবীর নির্দেশনায় ‘সুতায় সুতায়’, ‘হ্যানা ও শাপলা’, সাইদ সুমনের নির্দেশনায় ‘জবর আজব ভালোবাসা’ এবং মঞ্চসারথী আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘হেমলেট’ উল্লেখযোগ্য।
করবী : অনেকগুলো টিভিসিতেও অংশ নিয়েছো, তাই না?
সংগীতা : হুম, গ্রামীণফোন, হরলিক্স, র‌্যাব, এয়ারটেলসহ প্রায় ৪০টিরও বেশি বিজ্ঞাপন চিত্রে কাজ করেছি। ওহ! তোমরা জানো হয়তোÑ বাংলাদেশের প্রথম প্রতœনাটক ‘মহাস্থান’-এ লীলাবতী ও সূত্রধরের ভূমিকায় অভিনয় করেছি। যার ভাবনা, পরিকল্পনা, নির্দেশনায় আছেন লিয়াকত আলী লাকী।
তিন নাট্যকন্যার সঙ্গে এভাবেই শেষ হলো কথোপকথন পর্ব। এই আলাপচারিতায় উঠে এসেছে গ্রুপ থিয়েটার নাট্যজগতের কিছু ভেতরের খবর। স্বাধীনতা উত্তর সময়ে গ্রুপ থিয়েটার নাটকই সমাজ পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে এসেছিল। আজ তার ক্ষয়িষ্ণু অবস্থার চিত্রও ফুটে উঠেছে এই আলাপে। তবুও সবার মধ্যে নাটককে ধারণ করার প্রত্যয় আশার বাণী শোনায় আমাদের।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট