চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জেরুজালেমে উপাসনালয়ে বন্দুক হামলা, হামলাকারীসহ নিহত ৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১১:২০ পূর্বাহ্ণ

ইসরায়েল অধিকৃত জেরুজালের প্রান্তিক এলাকার ইহুদিদের একটি উপাসনালয়ে বন্দুক হামলায় নিহত হয়েছেন ৭ জন।  আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। হামলা শেষে পালানোর সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন হামলাকারী নিজেও।

 

শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত সোয়া ৮টার দিকে ঘটে এই হামলা। ইহুদিদের সাপ্তাহিক পবিত্র দিন শনিবারের উপলক্ষে বিশেষ প্রার্থনার জন্য সমবেত উপাসনালয়ে জড়ো হচ্ছিলেন লোকজন, সেসময়ই অতর্কিতে হামলা করেন আততায়ী।

 

সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, মুখ ঢেকে রাখা এক ব্যক্তি সিনাগগের বাইরে জনতাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ছেন এবং তাতে আহত হয়ে সড়কে লুটিয়ে পড়েছেন বেশ কয়েকজন।

 

তবে সৌভাগ্যক্রমে ওই সিনাগগের কাছে পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্সকর্মীদের উপস্থিতি থাকায় দ্রুত হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিতি অ্যাম্বুলেন্সকর্মী শিমোন আলফাসি রয়টার্সকে বলেন, ‘(হামলার পর) আমরা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছিলাম। তখন সেখানকার পরিস্থিতি রীতিমতো ভয়ঙ্কর। ৭-৮ জন মানুষ রক্তাক্ত অবস্থায় সড়কে পড়ে ছিল। আমরা তাদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই।’

 

এ ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী তৎপরতা’ হিসেবে উল্লেখ করে শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে জেরুজালেম পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামলাকারী ওই ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ২১ বছর। তিনি একজন ফিলিস্তিনি এবং পূর্ব জেরুজালেমের বাসিন্দা।

 

গুলি চালানোর পর গাড়িতে করে ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন ওই ব্যক্তি, কিন্তু গাড়িতে ওঠার আগেই পুলিশের গুলিতে নিহত হন। পুলিশের বিবৃতিতে হামলাকারী ওই ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে যে গাড়িতে চড়ে তিনি পালানোর চেষ্টা করছিলেন, সেটি জব্দ করা হয়েছে।

 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির নেতৃত্বাধীন অক্ষশক্তি ইউরোপে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের ওপর যে নিধনযজ্ঞ চালিয়েছিল, তার স্মরণদিবস ছিল শুক্রবার। এছাড়া ইহুদিদের ধর্মে শনিবার দিনটি ‘সাব্বাথ’ পবিত্র দিন হিসেবে স্বীকৃত। সাব্বাথের আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন সিনাগগে বিশেষ প্রার্থনা হয়।

 

আগের দিন বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ পশ্চিম তীর এলাকার জেনিন শহরে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর এক অভিযানে নিহত হয়েছিলেন ৮ জন ফিলিস্তিনি। তারপরের দিনই জেরুজালেমের সিনাগগে হামলার ঘটনা ঘটল।

 

শুক্রবারের এই হামলার পরপরই আনন্দ মিছিল করেছে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাস। গাজা ও পশ্চিমতীরে সাধারণ জনগণের মধ্যে মিষ্টিও বিতরণ করেছে তারা।

 

ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গিভির শুক্রবার রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। সেখানে পৌঁছে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এই বর্বর হামলার উপযুক্ত জবাব দেবো। ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন।’

 

জেরুজালেমের সিনাগগে হামলার এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও কার্যালয় হোয়াইট হাউসও হামলায় হতাহতদের প্রতি গভীর শোক জ্ঞাপন করেছে।

 

গত শতকের ষাটের দশক থেকে শুরু হওয়া ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের সমাধানে গত বছর ‘দ্বি-রাষ্ট্র তত্ত্ব’(টু স্টেট থিওরি) প্রস্তাব করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। দুই পক্ষের নেতাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনার জন্য ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন সফরের সূচি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের। সেই অনুযায়ী, শনিবার জেরুজালেমে পৌঁছানোর কথা ছিল তার।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্ভাব্য সফরের কয়েক ঘণ্টা আগেই ঘটল এই হামলা। সূত্র : রয়টার্স

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট