চট্টগ্রাম রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

জামাই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী, খুশি শ্বশুর নারায়ণ মূর্তি

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

২৬ অক্টোবর, ২০২২ | ১২:১৭ অপরাহ্ণ

ঋষি সুনাক ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন- এই খবরে উচ্ছ্বসিত এবং গর্বিত ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এনআর নারায়ণ মূর্তি। ঋষি সুনাকের সঙ্গে নারায়ণ মূর্তির মেয়ে অক্ষতার বিয়ে হয়েছে।

প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিসেবে ঋষি সুনাক ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খবরে দেশটিতে বসবাসকারী ভারতীয়রা ব্যাপক খুশি হয়েছেন। ভারতীয়দের তুলনায় অবশ্য অনেক বেশি খুশি ঋষির শ্বশুর নারায়ণ মূর্তি।
প্রথম প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, অভিনন্দন ঋষি! আমরা তোমার জন্য গর্বিত। জীবনে সব রকম সাফল্য পাও, এই কামনা করি। আমরা নিশ্চিত, ব্রিটেনের সব অধিবাসীর জন্য ঋষি সর্বস্ব চেষ্টা করবে।

 

চিকিৎসক বাবা ও ফার্মাসিস্ট মায়ের ছেলে ঋষি। মজার ব্যাপার হলো, তার বাবা-মা দু’জনে ছিলেন পূর্ব আফ্রিকান দেশ কেনিয়া ও তানজানিয়ার বাসিন্দা। পরে তারা ব্রিটেনে চলে আসেন। ঋষির পড়াশোনা ব্রিটেনের অন্যতম বিখ্যাত উইনচেস্টার স্কুলে। তারপর উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন অক্সফোর্ডে। চাকরিজীবনে ঋষি টানা তিন বছর কাজ করেছেন গোল্ডম্যান স্যাকস গোষ্ঠীতে। তারপর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছেন। সেখানেই পরিচয় অক্ষতার সাথে। ২০০৯ সালে তাদেও বিয়ে হয়। এই দম্পতির দুই কন্যা, কৃষ্ণা এবং আনুশকা।

ঋষি সুনাক ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করেছেন- আপনি (ঋষি) ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি বৈশ্বিক ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার এবং রোডম্যাপ ২০৩০ বাস্তবায়নের জন্য উন্মুখ হয়ে আছি। দীপাবলির শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন তিনি।

 

ঋষি সুনাকের ব্যাপারে নিজের মত প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘এটা গুরুত্বপূর্ণ’ এবং ‘বেশ চমকপ্রদ’। যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জো বাইডেন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া ঋষির ব্যাপারে মন্তব্যটি করেছেন।

বলিউড অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন ইনস্টাগ্রামে নিজের একটি ছবি পোস্ট করে সুনাককে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, অবশেষে যুক্তরাজ্য ‘মাদার দেশ’ থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে একজন নতুন ‘ভাইসরয়’ পেয়েছে। সরকার ভারতের সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করার এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদী এজেন্ডা অনুসরণ করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে কংগ্রেস নেতা পালানিপ্পান চিদাম্বরম মোদিকে খোঁচা দিতে দ্বিধা করেন নি।

 

তিনি টুইটে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কিংবা যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোর পক্ষেই এমনটি সম্ভব। প্রথমে কমলা হ্যারিস, এখন ঋষি সুনক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের জনগণ তাদের দেশের অ-সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকদের আলিঙ্গন করেছে এবং তাদের সরকারের উচ্চ পদে নির্বাচিত করেছে। আমি মনে করি ভারত এবং যে দলগুলি সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদ চর্চা করে তাদের এর থেকে শেখার অনেক কিছু আছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেকেই আরো মজার সব তথ্য তুলে ধরে দাবি করেছেন, ভারততো বটেই, পাকিস্তানও ঋষির পূর্বপুরুষের আবাস ছিল বলা যাবে। দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া উল্লেখ করেছে যে, সুনাকের দাদা-দাদির বিবরণ খুব বেশি জানা না গেলেও, অন্তত এটুকু জানা গেছে, তারা উত্তর ভারতের পাঞ্জাব থেকে এসেছেন। এবং তাদের জন্মস্থান পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালা, যেটা ১৯৪৭’র বিভক্তির পর এখন পাকিস্তানের অন্তর্গত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ পরামর্শ দিয়েছেন, সবরকম বিভেদ ভুলে ভারত-পাকিস্তান- দু’ দেশই যৌথভাবে যেন ঋষিকে তাদেরই সন্তান দাবি করে। [তথ্য সহায়তা : দ্য গার্ডিয়ান]

 

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট