দৈনন্দিন খাবারে ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল রসুন। সব ধরনের তরকারিতে স্বাদ বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হয় রসুন। অনেকে রসুনের আচার খেতেও পছন্দ করেন। এই রসুনে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। ঔষধিগুণে সমৃদ্ধ এ উপাদানটি প্রাচীনযুগে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হওয়ায় রসুনকে সুপারফুডের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
রসুনের মধ্যে থায়ামিন (ভিটামিন বি১), নায়াসিন (ভিটামিন বি৩), রিবোফ্লাবিন (ভিটামিন বি২), প্যান্টোথ্যানিক অ্যাসিড (ভিটামিন বি৫), ভিটামিন বি৬, ফোলেট (ভিটামিন বি৯), সালফার কম্পাউন্ড ও সেলেনিয়াম ইত্যাদি উপাদান রয়েছে। যা খুবই উপকারী। রসুনে রয়েছে অ্যালিসিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সেলেনিয়াম ক্যানসার কোষ ধ্বংস করে ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। রসুন রক্ত পরিশোধন করে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। রসুনে রয়েছে অ্যান্টিফাংগাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ, যা বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
রসুন হজমের ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায় ও কোষের বিভিন্ন ক্ষতি প্রতিরোধ করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও ওজন কমাতে এটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। রসুন প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় ইউরিন ইনফেকশন কমায়। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
রসুন বিভিন্ন হরমোনাল অসামঞ্জস্যতা প্রতিরোধ করে। শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। মেনোপজের সময় রসুন খেলে উপকার পাওয়া যায়। রসুনে থাকা নানা উপাদান পুরুষদের ফার্টিলিটির সমস্যা ঠিক করতে সাহায্য করে। এটি টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ায় এবং শুক্রাণুর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে রসুন খুবই উপকারী।
রসুনের উপকারিতা পাওয়ার জন্য সকালে খালিপেটে খেতে বলা হয়। রসুনে যে সালফার কম্পাউন্ড থাকে চিবিয়ে খেলে সেটার কার্যকারিতা বেড়ে যায়। ঝাঁঝালো স্বাদের জন্য খেতে না পারলে মধু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন ভর্তা, শাক রান্না ও মুড়ি মাখানোতে কাঁচা রসুন দিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
রসুন ভাজলে বা রান্না করলে তাপে এটির প্রধান রাসায়নিক উপাদান অ্যালিসিনের গুণাগুণ নষ্ট হয়। কাঁচা রসুন কেটে ১৫ মিনিট খোলা জায়গায় ছড়িয়ে রেখে তারপর খাওয়া হলে অ্যালিসিন সহজে হজম হয়। রসুনের আচার খেলে জীবাণুনাশক গুণ পাওয়া যায় না। তবে অন্যান্য উপকারিতা পাওয়া যাবে।
পূর্বকোণ/ইবনুর