চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ভাদ্রের ভ্যাপসা গরমে অসুখ এড়ান, মেনে চলুন এসব নিয়ম

অনলাইন ডেস্ক

২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ৫:০৭ অপরাহ্ণ

ভাদ্র মানেই হয় গনগনে আঁচে ঝলসে দিচ্ছে দিনভর, নয়তো মেঘলা হয়ে মুখভার করে বসে থেকেও বৃষ্টির দেখা নেই, উল্টো বাড়িয়ে চলেছে আপেক্ষিক আর্দ্রতা।

এমন ভ্যাপসা গরমে তরতাজা মানুষই যেখানে নাকাল হয়ে পড়েন, সেখানে শিশু, গর্ভবতী মহিলা, বয়স্ক মানুষ ও রোগীদের অবস্থা হয় আরো বেগতিক ৷ কাজেই এমন গরমে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতেই হবে৷ না হলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন৷

নিজেকে সুস্থ রাখতে ও অসুখ এড়াতে তাই কিছু সাবধানতা নিতেই হবে। সতর্ক থাকতে হবে বাড়িতে কোনো বিশেষ রোগে আক্রান্ত সদস্য থাকলেও। অসুস্থতার ধরন ও তার প্রতিকার সম্পর্কে ধারণা থাকলে রোগ সামলানো সহজ হয়।

ভ্যাপসা গরমের অসুস্থতা

  • এমন গরমে অতিরিক্ত কাজ, খেলা বা ব্যায়াম করলে পেশিতে তীব্র ব্যথা হতে পারে৷ একে বলে হিট ক্র্যাম্প৷
  • ঘাম ও চড়া রোদের যুগলবন্দিতে র‌্যাশ বেরোতে পারে চামড়ায়৷
  • রান্নারান্না সেরেই এসি চালিয়ে বিশ্রাম নিলে, বাইরে থেকে এসে ঘাম না শুকিয়ে ঠান্ডা জল খেলে বা ঠান্ডা ঘরে বসে পড়ার মতো অনিয়ম করলে জ্বর–সর্দি–কাশি এড়ানো কঠিন৷
  • ভাদ্রের রোদের দিন হিট এক্সারসানে খুব বেশি ঘাম হয়৷ রোগী ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়েন৷ দ্রুত শ্বাস পড়ে৷ তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা না নিলে এখান থেকে হিট স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা প্রবল৷
  • হিট সিনকোপ নামের সমস্যায় রোগী হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যান৷
  • হিট স্ট্রোকে তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কমজোরি হয়ে হঠাৎ শরীরের তাপ বেড়ে যায়৷ ১০৫ ডিগ্রির উপর৷ এটা কিন্তু জ্বর নয়৷ এর সঙ্গে ঘাম হয় না বলে শরীরের তাপ বেরোতে পারে না৷ বিপদ বাড়ে৷
  • ভাদ্রে সারাদিন খুব ভ্যাপসা গরমের পর সন্ধ্যের দিকে ঝড়বৃষ্টি এলে হঠাৎ ৭–৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমে যায়। এজমার রোগীদের এই সময় যত্নে রাখুন। তাপমাত্রার ওঠানামায় এঁদের অ্যাটাক হতে পারে৷

বিপদ ঠেকাতে

  • হলদেটে ইউরিন হলে বা ইউরিনের পরিমাণ কমে গেলে অধিক পরিমাণে পানি পান করুন৷পানি খাওয়ার বিধিনিষেধ থাকলে অবশ্য আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
  • ডিহাইড্রেশন এড়াতে মদ–কফি–কোলা খাওয়া কমান৷ হালকা খাবার খান, পেট একটু খালি রেখে৷ বেশি খেয়ে রোদে বেরোবেন না বা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়বেন না৷
  • চড়া রোদ এড়ানো সম্ভব না হলে বেরুনোর আগে এক গ্লাস পানি পান করুন৷ প্রেশার–সুগার না থাকলে নুন–চিনির জল বা ওআরএস খেতে পারেন৷ এক–আধবার ডাবের জল, টাটকা ফলের রস বা ঘোলও খেতে পারেন৷ রাস্তার জল, শরবত বা কাটা ফলের রস খাবেন না৷
  • রোদে বেরুলে ছাতা/টুপি, সানগ্লাস ও হালকা সুতির পোশাক পরুন।
  • রোদে বা গরমের মধ্যে অনেক ক্ষণ টানা কাজ করবেন না৷ কাজের ফাঁকে ঠান্ডা জায়গায় বসে বিশ্রাম নিয়ে আবার কাজে ফিরুন৷
  • হাঁপানি রোগীরা এই সময় দিনের শেষে আকাশে মেঘ দেখলে প্রিভেন্টার ইনহেলারের একটা পাফ নিন৷ বা যদি মনে হয় কষ্ট শুরু হতে পারে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধের ডোজ বাড়ান৷

সমস্যা হলে

পেশিতে ব্যথা হলে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা জায়গায় গিয়ে ব্যথা না কমা পর্যন্ত বিশ্রাম নিন৷ ওআরএস খেতে হবে৷ ছাতা, টুপি ও সানস্ক্রিনে সান বার্ন ও র‌্যাশ ঠেকানো না গেলে দিনে দু’তিন বার ঠান্ডা জলের ঝাপটায় মুখ ধুয়ে ক্যালামাইন লাগান৷ এন্টিএলার্জিক ওষুধ খেতে হতে পারে৷

হিট এক্সারশন হলে গরম থেকে সরে গিয়ে বিশ্রাম নিন৷ কষ্ট না কমা পর্যন্ত লবণ–চিনির শরবত বা ওআরএস খেতে থাকুন৷ ডাবের পানিও খেতে পারেন৷ কষ্ট কমতে শুরু করার পর হাত–মুখ ধুয়ে ফ্যান বা এসি চালিয়ে কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিন৷

 

 

 

পূর্বকোণ/ময়মী

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট