চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ডায়াবেটিস রোগীদের করোনায় করণীয়

ডা. গোলাম মোর্শেদ

১১ জুলাই, ২০২১ | ৪:০১ অপরাহ্ণ

করোনা প্রতিরোধে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরী। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে তাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। এবং যাদের করোনা হয়ে গেছে তাদের যদি সুগার অনেক বেশি থাকে অর্থাৎ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকে তাহলে তাদের করোনা থেকে মারাত্মক জটিলতা হওয়ার আশঙ্কাও বেশি। তাই করোনা যাতে সহজে না হতে পারে সেজন্য ডায়াবেটিস খুবই ভালো নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। করোনা হলেও যাতে ক্রিটিকাল ডিজিজ না হয় অথবা মারাত্মক জটিলতা না হয় সেজন্য সুগার খুবই ভালো নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কিন্তু করোনার সময়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ আরও দুরূহ হয়ে পড়েছে।

এদিকে আবার বেশি বেশি ফল খাচ্ছেন অনেকে। ফলে চিনি থাকে। সুতরাং ফল খেলে ডায়াবেটিস বাড়বেই। করোনার কারণে একদিকে মানুষ বাইরে বের হতে পারছে না। ব্যায়াম করতে পারছে না অন্যদিকে আবার বেশি বেশি ফল খাচ্ছে। সব মিলিয়ে সুগার বেড়ে যাচ্ছে। তাই অনেকেরই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

যাদের করোনা পজেটিভ তারা একটু টেনশনে পড়ে যাচ্ছেন। টেনশনের কারণে আবার সুগার বেড়ে যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে করোনা রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা বেশ দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে। আর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে করোনা থেকে মারাত্মক জটিলতা হওয়ার আশংকা অনেক বেশি। তাই যে করেই হোক ডায়াবেটিস ভালো নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সেজন্য বাসার ভিতরে প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। যাদের ট্রেডমিল মেশিন আছে তারা ১০ মিনিট ওটাতে দৌঁড়ান। আর যাদের মেশিন নাই তাদের যেহেতু বাসায় খুব জোড়ালো ব্যায়াম করা হয়ে ওঠবে না তাই দিনে দুইবার ব্যায়াম করুন। প্রতিবার ২০-৩০ মিনিট করে ব্যায়াম করুন। বাসায় বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করা সম্ভব। আপনি রুমের মধ্যে হাঁটতে পারেন। অথবা রোপ স্কিপিং করতে পারেন। ছোটবেলায় অনেকেই দড়ি লাফ খেলেছেন৷ বাসায় এটি করতে পারেন। অথবা বুকডাউন দিতে পারেন। উঠবস করতে পারেন। বাসার ভিতরে আসলে অনেক প্রকার ব্যায়াম করা সম্ভব। শুধু আপনার ইচ্ছা থাকতে হবে। করোনার সময়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এবং সেটা ভয়ঙ্কর হতে পারে।

তাই ডায়াবেটিস রোগীকে এ সময়ে ৫ টি কাজ করতে হবে। তা হলো ডায়াবেটিসের ঔষধ যাতে বাদ না পরে সেটা লক্ষ রাখতে হবে। ঘরের মধ্যে হলেও প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে। খাবার দাবার ডায়াবেটিসের নিয়ম মেনে করতে হবে। প্রতি সপ্তাহে সুগার মাপতে হবে। কোন মানসিক টেনশন করা যাবে না এবং ঘুম ঠিক রাখতে হবে। খাবার দাবার একদম নিয়মমাফিক খেতে হবে। সব কিছু বাদ দিলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। তাই ফল, সবজি, ডিম, দুধ, মাছ, মাংসসহ সকল ভালো ভালো খাবার খাবেন। তবে বেশি খেয়ে ডায়াবেটিস যাতে না বাড়ে সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। বাসার ভিতর সব সময় শুয়ে বসে না থেকে বাসার বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকলে সেটা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য ভালো হবে। যারা ডায়াবেটিসের ঔষধ খাচ্ছেন বা ইনসুলিন নিচ্ছেন তারা নিয়মিত সুগার চেক করে দেখবেন। খালি পেটে ৪-৬ এবং খাবারের দুই ঘণ্টা পর ৬-৮ থাকলে ভালো। সুগার ১০ এর বেশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ বা ইনসুলিন এডজাস্ট করে নিবেন।

মনে রাখবেন অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস করোনার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়।

লেখক: ডা. গোলাম মোর্শেদ; সহকারী অধ্যাপক, কার্ডিওলজী, মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট