চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

করোনাভাইরাসের লক্ষণ ও বাঁচার উপায়

অনলাইন ডেস্ক

২৬ জানুয়ারি, ২০২০ | ১২:০৬ অপরাহ্ণ

চীনে ছড়িয়ে পড়া নিউমোনিয়া জাতীয় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্ত হয়েছেন আরো প্রায় ১ হাজার ৩০০ জন।

এ ছাড়া প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে ইউরোপ-আমেরিকাসহ আরো সাতটি দেশে। তবে এসব দেশে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, এই ভাইরাসটি জুনোটিক। অর্থাৎ ভাইরাসটি পুশুর শরীর থেকে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির সংস্পর্শে এলে অথবা তার সঙ্গে হাত মেলালে ভাইরাসটি সুস্থ মানুষের শরীরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো- এই ভাইরাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে প্রাথমিকভাবে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টের লক্ষণ দেখা যায়।

বিজ্ঞানীদের মতে, ভাইরাসটি মানুষের শরীরে প্রবেশের পাঁচ দিন পর সংক্রমণের এসব লক্ষণ দেখা দেয়। আর এক সপ্তাহের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এ সময় রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। এছাড়া এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কিডনিসহ দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যেতে পারে। নিউমোনিয়া, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম এই করোনাভাইরাসের দেখা মিললেও বর্তমানে এটি দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনামেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি পাওয়া গেছে। যেকোনো সময় এটি মহামারি আকার ধারণ করতে পারে। তাই সকলকে এখনই এ বিষয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

তবে করোনাভাইরাসের কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন এখনো আবিষ্কার না হলেও এর হাত থেকে বাঁচতে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

চিকিৎসকদের মতে, করোনাভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো- আক্রান্ত ব্যক্তি বা স্থান থেকে দূরে থাকা। ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন বা এই ভাইরাসটি বহন করছেন তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। এ জন্য যতটা সম্ভব ঘরের বাইরে না যাওয়া। তার পরও যদি জরুরি কাজে বাহিরে যেতে হয়, তাহলে সব সময় ফেসমাস্ক ব্যবহার করা। যাতে কোনো আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশ না করতে পারে। এছাড়া বাস, ট্রেন জাতীয় গণপরিবহনগুলোতে ভ্রমণ না করা। কারণ এসব জায়গায় প্রচুর মানুষের ভিড় থাকে এবং সেখান থেকে ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কোনো কারণে বাইরে গেলে বাসার দরজা-জানালা ভালো করে বন্ধ করে যাওয়া এবং বাসায় ফিরে হ্যান্ডওয়াশ বা লিকু্ইড সোপ দিয়ে ভালো করে হাত ধোঁয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সারাদিন ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ থাকলে অন্য কোনো রোগে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সকালে ঘণ্টা খানেকের জন্য জানালা খোলা রাখতে বলেছেন চিকিৎসকরা। এর ফলে ঘরে পর্যাপ্ত পরিমাণ সতেজ বাতাস ও সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারবে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, করোনাভাইরাসটি কোনো পশুর দেহ থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করেছে। তাই মাংস বা ডিম রান্না করার আগে সেটিকে পর্যাপ্ত সময় রান্না করতে হবে, যাতে সেগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণ সিদ্ধ হয়। পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর ফলমূল, শাক-সবজি ও পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। যেকোনো কিছু খাওয়ার আগে বা রান্না করার আগে সেটিকে ভালো করে পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ময়লা জামা-কাপড় ফেলে না রেখে নিয়মিত তা ধুয়ে রাখা এবং ঘর ও কাজের জায়গা পরিষ্কার করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এর পরও অসুস্থ বোধ করলে বা পরিচিত কেউ আক্রান্ত মনে হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেছেন তারা।

 

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট