চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ঝুঁকিতে আশঙ্কার চেয়েও চার গুণ বেশি মানুষ

নাসরিন আকতার

৩১ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:০৫ পূর্বাহ্ণ

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে ঝুঁকির মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। এতোদিন সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে যে পরিমাণ মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হতো বাস্তবে এ সংখ্যা তার প্রায় চার গুণ বেশি।

এমনটাই উঠে এসেছে বিজ্ঞান সাময়িকী ন্যাচার কমিউনিকেশনস-এ প্রকাশিত নতুন এক গবেষণায়। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

গবেষণা প্রতিবেদনে কার্বণ নিঃসরণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমানো এবং উপকূলীয় প্রতিরক্ষা জোরালো করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় ২০৫০ সাল নাগাদ ৩০ কোটি মানুষের বসতির জমি বছরে অন্তত একবার ডুবে যাবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে প্রতিবেদনে। আর ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে বছরে বন্যার পরিমাণ বাড়বে আট গুণ। আগে ধারণা করা হতো সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে আট কোটি মানুষ। স্যাটেলাইট ডাটা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই গবেষণা করা হয়েছিল। এতে উঁচু ভবন ও গাছের উচ্চতার ক্ষেত্রে বাড়তি অনুমান করা হয়েছিল। তবে নতুন গবেষণায় এসব ভুল এড়াতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় চার গুণ।

গবেষকরা বলছেন, নাসা-র করা আগের গবেষণা থেকে নতুন গবেষণার পার্থক্য বিশাল। গবেষণাটির প্রধান প্রণেতা ছিলেন অলাভজনক সংবাদ প্রতিষ্ঠান ক্লাইমেট সেন্ট্রালের সিনিয়র সাইন্টিস্ট স্কট কাল্প। তিনি বলেন, এই গবেষণা আমাদের জীবদ্দশাতেই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শহর, অর্থনীতি, উপকূলীয় সীমানা এবং পুরো বৈশ্বিক অঞ্চল পুনর্নির্মিত হওয়ার আশঙ্কার দিকটি দেখিয়েছে। ঢেউয়ের উচ্চতা

বৃদ্ধির ফলে দেশগুলো ক্রমবর্ধমানভাবে যে প্রশ্নের মুখোমুখি হবে তা হলো উপকূলীয় প্রতিরক্ষা তাদের কী পরিমাণ আর কত সময় ধরে সুরক্ষা দিতে পারবে? দৃশ্যত জলবায়ু পরিবর্তন সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসবে এশিয়ায়। এই মহাদেশেই পৃথিবীর জনসংখ্যার সবচেয়ে বড় অংশ বসবাস করে। ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে বার্ষিক বন্যার পরিমাণ বাড়বে আট গুণ, ভারতে সাতগুণ আর চীনে বাড়বে তিন গুণ। ইন্দোনেশিয়া এরইমধ্যে হুমকি টের পেতে শুরু করেছে। দেশটির সরকার ইতোমধ্যেই রাজধানী শহর জাকার্তা থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। জাকার্তা বন্যার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। নতুন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ইন্দোনেশিয়ায় দুই কোটি ৩০ লাখ মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছে। আগে ধারণা করা হচ্ছিল, দেশটিতে ৫০ লাখ মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

আরও অনেক দেশকেই হয়তো ইন্দোনেশিয়ার পথ অনুসরণ করতে হতে পারে; যদি না সমুদ্র এলাকার প্রতিরক্ষা জোরালো করা না হয় বা কার্বণ নিঃসরণ কমানো না হয়। [সূত্র : ডয়চে ভেলে]

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট