চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আহা কি আনন্দ!

সাইমুম চৌধুরী

৮ জানুয়ারি, ২০২০ | ২:১৯ পূর্বাহ্ণ

২০১৯ এর শেষদিন ৩১ ডিসেম্বর আমাদের ক্ষুধে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবনের বার্ষিক পরীক্ষার সাফল্যের খবর জানান দিল দেশবাসীকে। তাদের সাফল্যে তাদের শিক্ষক ও অভিভাবকসহ পুরো জাতি গর্ববোধ করছে।

পত্রিকান্তে জানা যায় ২০১৯ এর ৩১ ডিসেম্বর সরকারিভাবে প্রকাশিত হয় প্রাথমিক, জেএসসি এবং ইবতেদায়ি ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষার ফল। জানা যায় এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী এবং জেএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ৪৩ লাখ। পাশের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই সন্তোষজনক। ২০১৯ এর জেএসসিতে পাশের হার ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীরা ২ শতাংশ বেশি। জিপিএ-৫ পাওয়ার বেলায়ও ছাত্রীরা এগিয়ে। জানা যায় গেল বছরের তুলনায় এবার প্রাথমিক এবং ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় পাশের হার কমেছে। তবে জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা স্কুলে কমলেও মাদ্রাসাগুলোতে বেড়েছে। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের জেএসসির পাশের হার গত দুই বছরের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। ২০১৭ সালে পাশের হার ৮১ দশমিক ১৭ শতাংশ। ২০১৮ সালে ছিল ৮১ দশমিক ৫২ শতাংশ।

২০১৯ এর এসে তা বেড়ে ৮২ দশমিক ৯২ শতাংশ এসে দাঁড়িয়েছে। সে হিসেবে গেল বছরের (২০১৮) চেয়ে জিপিএ -৫ বেশি পেয়েছে ৮১০ জন। এরপরও চট্টগ্রামের ফল সন্তোষজনক নয় বলছেন সংশ্লিষ্ট বোদ্ধারা। এর কারণ হলো দেশের নয়টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অবস্থান অষ্টম।
এক নম্বরে আছে বরিশাল শিক্ষাবোর্ড। উল্লেখ্য বরিশালে পাশের হার ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ। আর ২য় স্থানে থাকা রাজশাহী বোর্ডের পাশের হার ৯৪ দশমিক ১০ শতাংশ। চট্টগ্রাম বোর্ডের পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পার্বত্য জেলার ফলাফল উল্লেখ করেছে। পার্বত্য জেলার ফল পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টজন নানা সীমাবদ্ধতা যেমন সেখানে ভালোমানের স্কুলের অভাব, ভালো মানের শিক্ষকের অভাব, যোগাযোগের সুব্যবস্থা অভাবকে দায়ী করছেন। যাক পিছিয়ে পড়া পাহাড়ীদের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছাতে সরকারকেই অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণে এগিয়ে আসার অনুরোধ রইল।
২০১৯ এর বিদায়ের পরদিন ২০২০ এর সূর্য উঠলো বাংলাদেশের আকাশে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে এদিন প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে নতুন পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হয়েছে। নতুন বই পেয়ে শিক্ষার্থীদের সে কি আনন্দ।

এই আনন্দ না দেখলে বুঝা যায় না। জানা যায় এ বছর ৪ কোটি ২৭ লাখ ৫২ হাজার ১৯৮ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৩৫ কোটি ৩৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৯৭ কপি বই ছাপা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা বই পাচ্ছে ২ কোটি ২ লাখ ১ হাজার ৯২০টি। বছরের প্রথম দিনে নতুন বই পেয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে সে কি আনন্দ তা স্বচক্ষে না দেখলে বুঝার উপায় নেই। এ দৃশ্য দেখে আমি মোহিত। তখনি মনে পড়লো ষাট সত্তর বছর পূর্বে আমার ছাত্রজীবনের কথা। সে সময় স্কুল থেকে বুক লিষ্ট দেয়ার পর কখন বাবা নতুন বই কিনে দেবেন সে চিন্তায় বিভোর থাকতাম। তখন অনেকের ভাগ্যে নতুন বই জুটবে না। নতুন বইয়ের গন্ধও পেতাম না অনেকে। পুরনো বই বাবা কিনে আনতেন আন্দরিকল্লা থেকে। তাতেই আমরা খুশি থাকতাম। এখন সময় পাল্টিয়েছে। শিক্ষা বছরের প্রথম দিনেই ছাত্রছাত্রীদের হাতে (প্রথম থেকে নবম শ্রেণী) নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দিচ্ছে পাঠ্য বই উৎসবের মাধ্যমে। এখন অভিভাবকদের দায়িত্ব তাঁদের সন্তানদের আগামী দিনের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নিজেরা অধিক মনযোগী হবেন। এটাই আশা রইলো। মনে রাখতে হবে আজকের শিশু আগামী দিনের বাংলাদেশ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট