পরিবহন ধর্মঘটের কারণে হঠাৎ করেই বেড়েছে সবজির দাম। দূরের জেলা থেকে নগরীতে আসছে না প্রয়োজনীয় সবজি। তাই সবজির দাম বেড়েছে বলে জানালেন বিক্রেতারা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে দাম বেড়েছে সব সবজির। বেশ কিছুদিন ধরে বাজারে শীতকালিন সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছিল কিছু সবজির। কিন্তু টানা কয়েক দিনের অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ফের বেড়েছে সবজির দাম। তবে দাম কমেছে ব্রয়লার, লেয়ার, সোনালি মুরগি ও সামুদ্রিক মাছের। কিছুটা দাম বেড়েছে মিঠা পানির মাছের। গতকাল (বৃহস্পতিবার) নগরীর কাঁচা বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায় সব সবজিতে কেজি প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা করে দাম বেড়েছে। চকবাজারের সবজি বিক্রেতা
রিপন মিয়া বলেন, ভোর চারটার দিকে রিয়াজ উদ্দিন বাজার আড়তে যাই সবজি কিনতে। সবজি কেনার জন্য যে টাকা নিয়েছি তাতে হয়নি। উল্টো টাকা বাকি রেখে সবজি নিয়ে আসছি। সব সবজিতেই দাম বেড়েছে। তাই আমরাও বেশি দামে বিক্রি করছি।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচামরিচ ৫০ টাকা থেকে দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। শিম ১শ’ টাকা থেকে বেড়ে ১১০ টাকায়, ফুলকপি ১১০ থেকে ১২০ টাকায়, মুলা ৫০ টাকায়, বেগুন ৬০ টাকা, দেশি বেগুন ৭০ টাকা, আলু ২৫ টাকায়, বাঁধাকপি ৫০ টাকায়, টমেটো ৮০ টাকা, নতুন টমেটো ১শ’ টাকায়, বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৬০ টাকায়, ঝিঙা ৪০ থেকে ৬০ টাকায়, ধুন্দল ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, লাউ ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, ঢেঁড়শ ৫০ টাকায়, নতুন শসা ৩০ থেকে ৫০ টাকায়, তিতকরলা ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, লতি ১০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকায়, কাঁচকলা হালিতে ৫ টাকা বেড়ে এখন ২০-২৫ টাকায় ও মিষ্টি কুমড়ো ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
এদিকে গত সপ্তাহের চেয়ে সামুদ্রিক মাছের দাম কমেছে। ১৩০ টাকার লইট্টা কাল বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। রূপচাদা ৬শ’ টাকা, লাল কোরাল ৫শ’ টাকা, চিংড়ি সাইজ অনুযায়ী ৪০০ থেকে ৪৫০, ৫০০ ও ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছুটা দাম বেড়েছে মিঠা পানির মাছের। দেশি মাছগুলোর মধ্যে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২শ’ থেকে আড়াইশ’ টাকায়। কাতল ৩শ’ টাকা দরে। তেলাপিয়া ১৬০ টাকা, ফার্মের কৈ মাছ ৩শ’ টাকা। কেচকি, মলাঢেলা জাতীয় ছোটমাছগুলো ৩শ’ টাকা থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা। এছাড়া পুকুরের ছোট চিংড়িগুলো ৪শ’ টাকা, সরপুটি আড়াইশ’ থেকে ৩শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ ব্যবসায়ী কাশেম মিয়া বলেন, সমুদ্র থেকে মাছ আসছে। তাই বাজারে মিঠা পানির মাছ তুলনামূলক দাম কম।
সাতদিন আগে ব্রয়লার মুরগি ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু কাল বাজারে প্লে-কার্ডের মধ্যে উল্লেখ করেই বিক্রি করছে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১১০ টাকা। আবার কিছু কিছু দোকানে ১০৫ টাকা দরে বিক্রি করতেও দেখা গেছে। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। সোনালি মুরগি ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুরগি বিক্রেতা জাহাঙ্গীর বলেন, শীতের সময় মুরগির দাম একটু কম। তবে এখনতো বিয়ের মওসুম তাই দাম বাড়লে সোনালি মুরগির দাম বাড়তে পারে।
অপরিবর্তিত আছে গরু ও ছাগলের মাংস। হাড়ছাড়া গরুর মাংস সাড়ে ৬শ থেকে ৭০০ টাকা, হাড়সহ ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছাগলের মাংস কেজি ৭০০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাংস বিক্রেতারা বলেন, মাংসের বাজারে ধর্মঘটের কোনো প্রভাব পড়েনি। আগের মত চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস।
এ বিষয় বাজারে ক্রেতারা বলেন, পরিবহন ধর্মঘটের নামে জনগণকে জিম্মি করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে আড়তদাররা। এটি মোটেও কাম্য নয়। ক্রেতাদের সুবিধায় প্রশাসনকে শীঘ্রই বাজার মনিটরিং করে দাম কমানোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার।