চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রিপোর্ট সংগ্রহের জন্য এখন থেকে আর লাইনে দাঁড়াতে হবে না। ঘরে বসেই পাওয়া যাবে মেডিকেল টেস্টের রিপোর্ট। দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর মধ্যে চমেক হাসপাতালেই প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে অনলাইনে রিপোর্ট ডেলিভারির ব্যবস্থা। গত এক সপ্তাহ ধরে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলেও আজ শনিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন হাসপাতালের ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগের অটোমেশন এবং অনলাইনে রিপোর্ট প্রদান কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে এই ব্যবস্থার উদ্বোধন করবেন।
চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতাল ল্যাবে অনলাইনে রিপোর্ট ডেলিভারির সুবিধা থাকলেও সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হিসেবে প্রথম এই সুবিধা চালু করল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। অনলাইনে রিপোর্ট ডেলিভারির ফলে রোগী ও স্বজনদের হাসপাতাল আসার ভোগান্তি কমবে এবং দ্রুত চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করা সম্ভব হবে।
প্যাথলজি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শুভাশীষ বড়ুয়া জানালেন, প্রতিদিন এ বিভাগে সহস্রাধিক রোগী বিভিন্ন পরীক্ষা করাতে আসেন। আগে তাদের রিপোর্ট নিতে আবার হাসপাতালে আসতে হতো। অনেকেই রিপোর্ট হারাতেন কিংবা দীর্ঘ অপেক্ষায় ভুগতেন। এবার সেই ভোগান্তির অবসান হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন এই ব্যবস্থায় প্রতিটি রিপোর্টের সঙ্গে থাকবে একটি কিউআর কোড। মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে কোড স্ক্যান করলেই রিপোর্ট খুলে যাবে। রোগীর নাম, বয়স, আইডি নম্বর বা মোবাইল নম্বর দিয়েও সার্চ করে পাওয়া যাবে রিপোর্ট। বিশেষ করে যেসব রোগী শহরের বাইরে থাকেন, কিংবা বারবার হাসপাতালে আসতে পারেন না। তাদের জন্য এটি বড় সুবিধা। চিকিৎসকরাও অনলাইনে রোগীর রিপোর্ট দেখতে পারবেন। এতে দ্রুত চিকিৎসা সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে।
প্যাথলজি বিভাগের পাশাপাশি ভবিষ্যতে অন্যান্য বিভাগেও এই অনলাইন রিপোর্ট ডেলিভারি কার্যক্রম চালুর পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন বলেন, প্রাথমিকভাবে প্যাথলজি বিভাগে চালু করা হলেও পর্যায়ক্রমে রেডিওলজিসহ অন্য বিভাগেও এই ডিজিটাল সেবা চালু করা হবে। এতে রোগীদের সময়, অর্থ এবং ভোগান্তি কমবে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, এখন থেকে প্যাথলজি বিভাগে পরীক্ষা করা রোগীরা নির্ধারিত ওয়েবসাইট বা পোর্টালে গিয়ে নিজের নাম, আইডি নম্বর, বয়স বা মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে রিপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন। পরীক্ষার কাগজে থাকা কিউআর কোড স্ক্যান করেও রিপোর্ট দেখা যাবে।
বর্তমানে চমেক হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে অন্তত ৩৫টির বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এখানকার পরীক্ষাগুলোর মূল্য দেশের অন্যান্য ল্যাবের তুলনায় অনেক সাশ্রয়ী। সিবিসি পরীক্ষা যেখানে বাইরের ল্যাবে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, সেখানে চমেকে করা হয় মাত্র ২০০ টাকায়। ইউরিন পরীক্ষা ২০ টাকায়, ডায়াবেটিস নির্ণয় ৬০ টাকায়, লিভার ও কিডনির এসজিপিটি-এসজিওটি পরীক্ষা মাত্র ২০ টাকায়। সবচেয়ে ব্যয়বহুল ডোপ টেস্টের জন্যও এখানে খরচ মাত্র ৯০০ টাকা, যা বেসরকারি ক্লিনিকে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়।
পূর্বকোণ/ইবনুর