সংস্কারের পর ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত কালুরঘাট সেতু। গতকাল সেতুর রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেনের তিনটি ইঞ্জিন চালিয়ে নিরীক্ষা করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ দল, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীরা।
এসব ইঞ্জিনের সফল ট্রায়াল রান শেষে আজ রবিবার চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে চড়ে কালুরঘাট সেতু দিয়ে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন পরিদর্শনে যাবেন গভর্নমেন্ট ইন্সপেক্টর অব বাংলাদেশ রেলওয়ে (জিআইবিআর)।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় তিন মাসের সংস্কার কাজ শেষে গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম ২২০৪ সিরিয়ালের ইঞ্জিন রান করে সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে পশ্চিম প্রান্তে নিয়ে আসেন লোকোমাস্টার মীর এবিএম শফিকুল আলম ও সহকারী লোকোমাস্টার কামরুল ইসলাম। এরপর দুপুর ১টার দিকে ২৯২৫ সিরিয়ালের ইঞ্জিন নিয়ে সেতুর পশ্চিম প্রান্ত থেকে পূর্ব প্রান্তে আসেন লোকোমাস্টার মাহফুজুর রহমান ও সহকারী লোকোমাস্টার রোকন মিয়া।
এরপর দুপুর ২টার দিকে অত্যাধুনিক ৩০০৪ সিরিয়ালের ইঞ্জিন নিয়ে সেতুর পশ্চিম প্রান্ত থেকে পূর্ব প্রান্তে আসেন লোকোমাস্টার সাজু কুমার দাস এবং সহকারী লোকোমাস্টার বেলায়েত হোসেন জাহিদ। তিন সিরিজের তিনটি ভারী ইঞ্জিনের সফল ট্রায়াল রানের সময় বুয়েটের অধ্যাপক ড. আ ফ ম সাইফুল আমিনের নেতৃত্বে সেতু সংস্কার কাজের পরামর্শক দলের সদস্যরা, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা, সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্তসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বুয়েটের অধ্যাপক ড. আ ফ ম সাইফুল আমিন জানান, তিন কোয়ালিটির তিনটি ইঞ্জিন কালুরঘাট সেতুর ওপর পরীক্ষামূলক রান করানো হয়েছে। কোনো সমস্যা হয়নি। কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচলের জন্য কালুরঘাট সেতুর সংস্কার জরুরি ছিল। কালুরঘাট সেতুর সক্ষমতা বাড়াতেই সেতুটি সংস্কার করা হচ্ছে। যাতে ট্রেনের ভারী ইঞ্জিন চলতে পারে। এছাড়া সেতুর ডান পাশে ৬ ফুট প্রস্থের ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে পথচারীদের জন্য।
রেলওয়ে প্রকৌশলী জিসান দত্ত বলেন, কালুরঘাট সেতুর অবকাঠামোগত সংস্কার কাজের পর রেলপথ বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। বুয়েটের পরামর্শক দল নিয়মিত সংস্কার কাজ অবজারভেশন করছেন। গতকাল সেতুর ওপর তিনটি ইঞ্জিন রান করানো হয়েছে। এই ট্রায়াল রানে প্রাথমিকভাবে ইঞ্জিনের গতি রাখা হয়েছিল সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার। এ সেতুতে ক্রমান্বয়ে ট্রেনের গতি ২০ কিলোমিটারে বাড়ানো হবে। এ গতিতেই কালুরঘাট সেতু পারাপার করবে ট্রেন।
রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কালুরঘাট সেতু ট্রেন চলাচলের উপযোগী হওয়ায় আজ রবিবার দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন ও কোনো ত্রুটি আছে কি না যাচাই করতে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজার যাবে একটি ট্রেন। রবিবার সকাল ৮টায় আটটি বগি ও একটি ইঞ্জিন নিয়ে ট্রেনটি কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যাবে। এতে সরকারি রেল পরিদর্শক রুহুল কাদের আজাদ ছাড়াও রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেবেন।
এরপর আগামী ১১ নভেম্বর প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দোহাজারী-কক্সবাজার একশ কিলোমিটার রেলপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পূর্বকোণ/আরডি