চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

দাওয়াতে গিয়ে গৃহপরিচারিকাকে পেটালেন এস আই আরাফাত

নাজিম মুহাম্মদ

৮ মে, ২০২৩ | ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

দামি স্যুট-প্যান্ট পরা একজন ভদ্রলোক হাতে প্লাস্টিকের মোটা পাইপ নিয়ে হাতবাঁধা এক কিশোরীকে পিটাচ্ছে। এ ধরনের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্যুট-প্যান্ট পরিহিত ব্যক্তি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আরাফাত। কিশোরীকে অমানবিকভাবে পিটানোর ভিডিও ছড়ানোয় এস আই আরাফাতকে ক্লোজড করে নগর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। চকবাজার জোনের সহকারী কমিশনার বিষয়টি তদন্ত করছেন। বিষয়টি জানতে সহকারী কমিশনার (চকবাজার জোন) শহীদ উল্লার মুঠোফোনে গতকাল (রবিবার) সন্ধ্যায় একাধিকবার ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে চকবাজার থানার পরিদর্শক (ওসি) মনজুর কাদের জানান, কিশোরীকে পিটানোর ভিডিও প্রকাশ হবার পর এস আই আরাফাতকে গত ২০ এপ্রিল ক্লোজড করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। সহকারী কমিশনার মহোদয় বিষয়টি তদন্ত করছেন।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত এসআই আরাফাত কিশোরীকে পিটানোর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আসলে আমি কিশোরীকে শাসন করেছিলাম। ঘটনাটি গত নভেম্বর মাসের। নগরীর মোমিন রোড এলাকায় বন্ধু রাশেদের বাসায় দাওয়াতে গিয়েছিলাম। আপনি খেয়াল করে দেখবেন আমার গায়ে স্যুট পরা ছিল। ওই কিশোরী রাশেদের বাসায় গৃহপরিচারিকা। স্বর্ণালংকার চুরির অভিযোগে বন্ধুর স্ত্রী কালো ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে কিশোরীকে পিটাচ্ছিল। মারধর থেকে বাঁচাতে শাসন করতে গিয়ে কিশোরীকে প্লাস্টিকের
পাইপ দিয়ে হালকা মারধর করেছি।
ওই কিশোরীকে মারধর থেকে বাঁচিয়েছেন এমন দাবি করে এস আই আরাফাত বলেন, আমার বন্ধু রাশেদের স্ত্রী খুবই খারাপ মহিলা। আমি যখন কিশোরীকে মারধর করেছিলাম তখন বন্ধুর স্ত্রী গোপনে ভিডিও করে ছড়িয়ে দিয়েছে। মূলত দাওয়াত দিয়ে আমাকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে। ওই মহিলা কত খারাপ এবং ওদের বাসার কিশোরী গৃহপরিচাকে কেন মেরেছি রাশেদের সাথে কথা বললেই আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন। এসআই আরাফাতের দেয়া রাশেদের মুঠোফোন নম্বরে গতকাল (রবিবার) সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি মিটিংয়ে আছেন বলে ফোনের লাইন কেটে দেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), চট্টগ্রামের সভাপতি এডভোকেট আকতার কবির বলেন, এটি আমলযোগ্য অপরাধ। উচিত ছিল ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা। বিচারিক আদালতে এ অপরাধের বিচার করা। কোন সাধারণ লোক যদি এ ধরণের ঘটনা করতো নিয়ম অনুযায়ী প্রথমেই থানায় মামলা দায়ের হত। আইন সম্পর্কে অবগত থাকা একজন পুলিশ সদস্যের এমন কাণ্ড কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
আকতার কবির বলেন, এমনিতেই পুলিশের প্রতি মানুষের অনাস্থা, অবিশ্বাস রয়েছে। ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করলে পুলিশের ভাবমূর্তি বাড়ত। ঘরের ছেলে বলে নিজেরা বিষয়টি তদন্ত করছে হয়তো। এতে পুলিশের ভাবমূর্তি কমবে বৈ বাড়বে না।

 

 

পূর্বকােণ/এ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট