চট্টগ্রাম রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪

দাবায় উপলব্ধি’র দুই কন্যার সাফল্য

মরিয়ম জাহান মুন্নী

২৭ আগস্ট, ২০২২ | ১২:৩১ অপরাহ্ণ

জীবনের অনেক অপূর্ণতা ছোট ছোট সাফল্যের মাধ্যমে যেন পূর্ণতা পাচ্ছে। বাবা-মা নেই তো কি হয়েছে, জীবন কখনো কারো জন্য থেকে থাকে না। তবে সেই জীবনে বাবার (শেখ ইজাবুর রহমান) ভালোবাসায় পরিপূর্ণতা পাচ্ছে সামাজিক সংগঠন ‘উপলব্ধি’র এ মেয়ে শিশুদের জীবন। এবার সফলতার আরেকটি মাইলফলক স্থাপন করেছেন উপলব্ধি’র দুই কন্যা সানোয়ারা আক্তার ও নাসরিন আক্তার। দুই জনেই দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সানোয়ারা বিজ্ঞান বিভাগ ও নাসরিন ব্যবসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছে। দুই জনই পড়াশোনায় যেমন ভালো, তেমনি ভালো খেলাধুলায়। পিছিয়ে নেই চিত্রাংকন, গান আর কবিতা আবৃত্তিতে। বাবা-মা বিহীন এ দুই মেয়ের একমাত্র ঠিকানা ফিরিঙ্গি বাজারের চার তলায় প্রতিষ্ঠিত সামাজিক সংগঠন ‘উপলব্ধি’তে।

এবার তারা দুইজনই জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগীদের নিয়ে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত উন্মুক্ত মহিলা আন্তর্জাতিক রেটিং দাবা টুর্নামেন্ট-২২ এ একজন তৃতীয় ও আরেকজন সপ্তম হয়েছেন। প্রতিযোগিতায় দেড় শতাধিক প্রতিযোগী অংশ নেয়। সানোয়ারা এবং নাসরিনের স্বপ্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া।

সানোয়ারা জানায়, দাবা খেলা, গান শোনা আর কবিতা আবৃত্তি তার খুব পছন্দের। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সানোয়ারা জানায়, অন্য বোনদের সাথে পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়মিত দাবা খেলতাম। পরে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি। দেড় শতাধিক প্রতিযোগীর মধ্যে আমি সপ্তম স্থান লাভ করি। সাফল্য অর্জন খুবই আনন্দের। বিশেষ করে আমাদের সাফল্যে যখন ‘বাবা’ খুশি হয় তখন বেশি ভালো লাগে।

উপলব্ধি’র হয়ে বিজয়ী নাসরিন জানায়, এখানকার বোনদের সাথে দাবা খেলে বহুবার জিতেছি। প্রতিযোগিতার খবর শোনার পর আমিও অংশগ্রহণ করি। সাত রাউন্ডের মধ্যে ছয়টায় জিতে তৃতীয় হয়েছি। যেকোনো সফলতাই ভালো লাগে। তবে এখানেই আমি থামতে চাই না। জাতীয় এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও খেলতে চাই। জিতে আসতে চাই। জীবনের অনেক না পাওয়া এ সাফল্যগুলোর মাধ্যমেই যেন পূরণ হচ্ছে আমার। এভাবেই এগিয়ে যেতে চাই।

এসময় নাসরিন আরো বলেন, যদিও সুদূরপ্রসারী চিন্তা হবে। তবুও আমার ইচ্ছে আছে পড়াশোনা করতে দেশের বাইরে যেতে। পড়াশোনা শেষ করে দেশের মানুষদের জন্য কিছু করতে চাই।

একইভাবে সানোয়ারা বলেন, বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করছি। ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। তারপর দেশের জন্য কিছু করতে চাই।

উপলব্ধি’র প্রতিষ্ঠাতা শেখ ইজাবুর রহমান বলেন, আমার এখানে বর্তমানে ৭২ জন মেয়ে আছে। যাদের মধ্যে হাজার রকমের প্রতিভা আছে। কেউ পড়াশোনায় ভালো তো কেউ অন্য এক্টিভিটিজে ভালো। সবাই আবার পড়াশোনায় ভালো হয় না। অনেকে অন্যগুলোতে ভালো হয় না। সব মিলিয়ে অনেক সময় এদের সামলানো যেমন সহজ তেমনি কখনো কখনো খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

 

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট