পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চট্টগ্রামের প্রবাসী রয়েছে প্রায় ১৫ লাখ। এদের মাধ্যমে বছরে রেমিটেন্স আসে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। তারপরও নানাভাবে উপেক্ষিত চট্টগ্রামের প্রবাসীরা। এখানে নেই চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের আলাদা ভবন। নগরীর আগ্রাবাদ সিজিএস বিল্ডিং-২ এর নিচতলায় ছোট পরিসরে চলছে এ অফিসের কার্যক্রম।
আগ্রাবাদে চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৪ সালে। এরপর থেকে চট্টগ্রামবাসীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে এ অফিস। তারপরও প্রতিষ্ঠার ৭৯ বছরেরও পেল না আলাদা ভবন। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের মধ্যে কেবল চট্টগ্রাম জেলায় প্রবাসীর সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে চট্টগ্রামের অবদান সবচেয়ে বেশি। কিন্তু ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসটিতে সেভাবে সেবার পরিধি বাড়ানো হচ্ছে না। এতে হতাশ প্রবাসীরা।
চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘১৯৪৪ সালে এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত কার্যালয়টি বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস হিসেবে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ অফিসে বর্তমানে লোকবল রয়েছে ২৫ জন। মাঠ পর্যায়ে এর কার্যক্রম জোরদারকরণ এবং উপজেলা পর্যায়ে কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস স্থাপন এখন সময়ের দাবি।’
পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার বলেন, ‘প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় দেশের ৬৪ জেলায় কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের আলাদা ভবন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। চট্টগ্রামেও এক ছাদের নিচে সব ধরনের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে এ ভবন নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে নগরীর নাসিরাবাদে বাংলাদেশ কোরিয়ান কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সংলগ্ন ১০ কাঠা জমি বাছাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব অনুমোদন পেলে সেখানে নির্মাণ হবে চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের আলাদা ভবন।’
এদিকে শুধু আলাদা ভবন সংকট নয়, চট্টগ্রামের লোকজনকে এখনো স্মার্টকার্ডের জন্য ছুটতে হয় ঢাকায়। তাতে সময় ও অর্থের অপচয়ের পাশাপাশি ভোগান্তিরও শিকার হন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ থেকে পৃথিবীর ১৭৬ দেশে জনশক্তি প্রেরণ করা হয়। এর মধ্যে ২০১৬ সালের ৩১ জুলাই চট্টগ্রাম থেকে মাত্র সাতটি দেশের প্রবাসীদের জন্য বহির্গমন ছাড়পত্র ও স্মার্টকার্ড প্রদান করা হয়। দেশগুলো হচ্ছে সৌদি আরব, বাহরাইন, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর। অবশিষ্ট ১৬৯টি দেশের বহির্গমন ছাড়পত্রের জন্য প্রবাসীদের ছুটতে হয় ঢাকায়। স্মার্টকার্ড বা কম্পিউটার ম্যাগনেটিক চিপ কার্ডে বিদেশগামী একজন প্রবাসীর ছবি, আঙ্গুলের ছাপসহ ১৮ ধরনের তথ্য থাকে। আবেদন করার সর্বোচ্চ দুই কর্মদিবসের মধ্যে একজন প্রবাসীকে স্মার্টকার্ড সরবরাহ করা হয়। বহির্গমন ছাড়পত্রের অংশ হিসেবে এই কার্ড দেওয়া হয়। কিন্তু চট্টগ্রামে ৭ দেশ ব্যতিত অন্য দেশগুলোর জন্য স্মার্টকার্ড নেওয়ার সুযোগ না থাকায় প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা।
পূর্বকোণ/এএস