চট্টগ্রাম শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪

নতুন সাজে নান্দনিক লালদিঘি মাঠ

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ | ১:৪৫ অপরাহ্ণ

ইমরান বিন ছবুর 

এক সময়ের গাড়ির স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহৃত নগরীর লালদিঘি মাঠকে সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। বৃটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও ঐতিহাসিক ছয় দফার ৬টি ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে ‘লালদিঘি মাঠ সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন’ প্রকল্প। এছাড়াও, বসার জন্য রয়েছে বেঞ্চ, ওয়াকওয়ে ও শিশুদের জন্য কিডস জোন।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের কাজ গত বছর শেষ হলেও এখনো তা উন্মুক্ত করা হয়নি। সরকারি মুসলিম হাই স্কুলের এ মাঠের উন্নয়ন কাজ শেষেও উন্মুক্ত না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থী, শিশু-কিশোর ও এলাকাবাসী। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্বোধন শেষে এ মাঠ উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বলে জানায় চট্টগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ। 

শিক্ষা উপমন্ত্রীর আগ্রহে ‘নগরীর লালদিঘি মাঠ সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন’ প্রকল্প হাতে নিয়েছিল চট্টগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার এই প্রকল্প পরবর্তীতে ব্যয় বেড়ে হয়েছে ৪ কোটি টাকা। সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন কাজ শেষে যা উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।

উদ্বোধন শেষেই এই মাঠ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।  গতকাল রবিবার সরেজমিন লালদিঘি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ১ হাজার ২৫০ বর্গফুট দেয়ালের দুইপাশে বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা লেখা রয়েছে। মাঝখানে ঐতিহাসিক ৬ দফার ৬টি ছবি। দেয়ালের সামনে ৫০ ফুট বাই ২৫ ফুটের বিশাল মুক্তমঞ্চ। এই মুক্তমঞ্চের পূর্বপাশের দেয়ালে টেরাকোটার ম্যুরালের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে বৃটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ইতিহাস।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে ও সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, লালদিঘির মাঠের দুইপাশে লোহার নিরাপত্তা বেষ্টনী, দুটি ২০ ফুটের সাধারণ ফটক, ১টি ভিআইপি ফটক, বসার জন্য ৩৯টি বেঞ্চ। প্রতি বেঞ্চে চার থেকে পাঁচজন বসতে পারবে। ৩৪৮ মিটার দৈর্ঘ্যরে ওয়াকওয়ে, ১৮টি টেরাকোটার ম্যুরালের মাধমে বৃটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ইতিহাস। শিশুদের জন্য থাকছে কিডস জোন। এছাড়া, মাঠকে দৃষ্টিনন্দন করতে বিভিন্ন গাছ ও সোলার প্যানেল দিয়ে লাইটিংও করা হয়েছে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার সরকার জানান, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি’র আগ্রহে ঐতিহাসিক ‘লালদিঘি মাঠ সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন’ প্রকল্প নেয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী মার্চে এই প্রকল্প উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। উদ্বোধন শেষে এ মাঠ উন্মুক্ত করা হলে শিশু-কিশোররা খেলাধুলার সুযোগ পাবে। মাঠে খেলাধুলার পাশাপাশি বৃটিশবিরোধী আন্দোলন, ৬ দফার আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামের ইতিহাস জানতে পারবে।

এছাড়াও মাঠের পূর্বপাশে বাচ্চাদের জন্য একটি কিডস জোন রয়েছে। মুসলিম হাই স্কুলের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, লালদিঘি ও আশপাশের এলাকায় মুসলিম হাই স্কুলের লালদিঘি মাঠ ছাড়া আর কোনো মাঠ নেই। এই মাঠে স্কুলের শিক্ষার্থী ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিশু-কিশোররা খেলাধুলার জন্য আসতো। বর্তমানে মাঠটির সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হয়েছে। তবে কাজ শেষ হওয়ার পর মাঠটি উন্মুক্ত না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। মুসলিম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান বলেন, মাঠটি মুসলিম হাই স্কুলের হলেও সংস্কারের পর সেখানে মুসলিম হাই স্কুলের কোনো নাম ফলক বা সাইনবোর্ড বসানো হয়নি। এ নিয়ে আমরা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানিয়েছি।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট