চট্টগ্রাম শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪

নতুন সেতুর স্বপ্ন সত্যি হচ্ছে!

মিজানুর রহমান 

৯ ডিসেম্বর, ২০২১ | ১২:৪৩ অপরাহ্ণ

কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর উপর নতুন সেতু নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু হয়েছে অবশেষে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী ১২ দশমিক ২ মিটার উচ্চতার সড়ক কাম রেলসেতু নির্মাণে এই সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হচ্ছে। জটিলতা কাটিয়ে মাঠ পর্যায়ে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু হওয়ায় এই সেতু নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন কর্ণফুলীর দুই তীরের মানুষ।

নতুন সেতু নির্মাণে মাঠ পর্যায়ে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু হয়েছে গত বুধবার। এদিন দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত প্রকল্প এলাকায় কাজ করেন সম্ভাব্যতা সমীক্ষার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান ইউশিন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের বিশেষজ্ঞরা। এর আগে নগরীর সিআরবি এলাকায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের দপ্তরে রেল কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তারা।

ইউশিন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার শন কি ইউন, ইউশিন বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার পার্ক কিওন ওক, দোহওয়া বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার হং জং ওক এবং দাতা সংস্থা কোরিয়া এক্সিম ব্যাংকের ঢাকা রিপ্রেজেন্টেটিভ অফিসের প্রতিনিধি সিউক চ্যাংগমিনের নেতৃত্বে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা কাজে মোট ৯ জন বিশেষজ্ঞ অংশ নেন। অর্থায়ন ও নকশা একবার চূড়ান্ত হলেও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের আপত্তিতে জটিলতায় পড়ে নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণ প্রকল্প। বিআইডব্লিউটিএ’র পরামর্শ অনুযায়ী উচ্চতা বাড়িয়ে সেতু নির্মাণে নতুন করে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, ডিপিপি প্রণয়নের প্রয়োজন দেখা দেয়। এ নিয়ে দাতা সংস্থা এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে দেনদরবার শুরু করে রেলওয়ে।

দীর্ঘ দেনদরবার শেষে নতুন করে সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় সম্মত হয় এক্সিম ব্যাংক। এ জন্য গত ২২ অক্টোবর ইউশিন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তি করে দাতা সংস্থাটি। চুক্তি অনুয়ায়ী গতকাল থেকে মাঠ পর্যায়ে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে ইউশিন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের বিশেষজ্ঞ দল। ২০২২ সালের ২৯ মে এর মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে তাদের।

সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) মো. আহসান জাবির পূর্বকোণকে করেন, বিআইডব্লিউটিএ’র পরামর্শ অনুযায়ী নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণ করতে গেলে নতুন করে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার প্রয়োজন দেখা দেয়। দাতা সংস্থা এক্সিম ব্যাংকের মনোনীত প্রতিষ্ঠান গতকাল থেকে এই কাজ শুরু করেছে।

তিনি বলেন, সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু হওয়ার অর্থ এই সেতু নির্মাণে আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। ভায়াডাক্টসহ প্রায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষে এক্সিম ব্যাংক অর্থায়নের পরিমাণ নিশ্চিত করবে। আগামী বছরেই আমরা ডিপিপি প্রণয়নের কাজ করতে চাই। যত দ্রুত সম্ভব কালুরঘাটে নতুন সেতু নির্মাণে মূল কাজ শুরু করতে চাই।

কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর উপর সেতু নির্মাণে প্রকল্প নেয় রেলওয়ে। নদীর নাব্যতা থেকে ৭ দশমিক ৬ মিটার উচ্চতায় এই সেতু নির্মাণে ২০১৮ সালে প্রস্তাবিত প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ১৫১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩৭২ কোটি ২৫ লাখ এবং প্রকল্প সাহায্য ৭৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। কোরিয়া এক্সিম ব্যাংক এতে অর্থায়ন করতে সম্মত হয়।

তবে বিআইডব্লিউটিএ’র আপত্তিতে বন্ধ হয়ে যায় প্রকল্পটি। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ১২ দশমিক ২ মিটার উঁচুতে সেতু নির্মাণের অনুরোধ জানায় সংস্থাটি। এতে ঝুলে যায় সেতু নির্মাণ প্রকল্প।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট