চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

দেয়ালে লিখে পরোক্ষ হুমকি !

রায়হান উদ্দিন, চবি

২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ | ৩:৪৩ অপরাহ্ণ

পরীক্ষার জন্য বন্ধ ক্যাম্পাসে এসেছেন। জরুরি প্রয়োজন সেরে ফিরতে রাত সাড়ে এগারোটা বেজে গেলেও রাস্তাটা ক্যাম্পাসেরই। তবুও চবি যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দুই ছাত্রী শিকার হলেন হেনস্থার। “এই মেয়ে, এত রাতে বাইরে কি?”

এভাবেই প্রথম বর্ষের চার ছাত্র তাদের শাসিয়েছে। করেছেন বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল আচরণও। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে চলছে সমালোচনাও। জুনিয়র হয়ে সিনিয়র ছাত্রীকে হেনস্থা আর শাসানোর সেই কটুকথাগুলোই এখন পরিণত হয়েছে হেনস্থাকারীদের প্রতিবাদের ভাষাতেও। এই যেন চোরের মায়ের বড় গলা। হেনস্থা করেও কান্ত হননি, বরং দেয়ালে চিকা মেরে পরোক্ষ হুমকিও দিয়ে যাচ্ছেন দুষ্কৃতকারীরা।

আর তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের দেয়ালে এখনো জ্বলজ্বল করছে ‘‘এই মেয়ে, এত রাতে বাইরে কি?” সংশ্লিষ্টরা বলছেন এ ধরণের দেয়াল লিখন সচেতন কোনো মানুষের হতে পারে না। যারা এ কাজটি করেছে তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তারা। জানা যায়, দেয়াল লিখনের নিচে লেখা সিএফসি (১৯-২০)। এটি বগিভিত্তিক সংগঠন ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী বলে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

তিনি পূর্বকোণকে বলেন, সিএফসিকে ফাঁসাতে অন্য কেউ এ কাজ করতে পারে। সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে সিসি ক্যামেরা আছে, প্রশসানের উচিত ক্যামেরা দেখে জড়িতদের শনাক্ত করা। যে বা যারা এ কাজ করুক ছাত্রলীগ এসব ক্ষেত্রে আপসহীন। এসব অপশক্তিদের বিচার হোক। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে বাসায় ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে হেনস্থার শিকার হন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দুই ছাত্রী। অভিযুক্ত ৪ জন হলেন, আরবি বিভাগের জুনায়েদ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের রুবেল এবং দর্শন বিভগের ইমন ও রাজু। অভিযুক্তরা সকলে ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

গতকাল ওই চার ছাত্রের বিরুদ্ধে প্রক্টর বরাবর লিখিত দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিও তুলেছেন তারা।

ভুক্তভোগীরা জানান, তারা আমাদের হেনস্থা করেছে। আবার গভীর রাতে কল দিয়ে কোনো অভিযোগ না দিতে হুমকিও দিয়েছেন। আর গতকাল রবিবার দেয়ালে লিখে পরোক্ষ হুমকি দিচ্ছেন তারা। আমরা নিরাপত্তা নিয়ে আসলে শঙ্কিত। যারা হেনস্থা থেকে শুরু করে হুমকিদাতা ও দেয়াল লেখক, তাদের সবাইকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দিযেছেন। আমরা অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয় যৌন নির্যাতন সেলে পাঠিয়ে দিব। সেলের সদস্যরা মিটিং করে কার্যকর প্রদক্ষেপ নিবেন। বিষয়টি নিয়ে আমরাও খুব আন্তরিক। অভিযুক্তদের ছাড় দেয়া হবে না। দেয়াল লিখনের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, আমরা সিসি ক্যামরা দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে পারলে তাদেরকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট