চট্টগ্রাম সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আসছে ১০ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ইঞ্জিন

মিজানুর রহমান 

২৩ আগস্ট, ২০২১ | ১:০১ অপরাহ্ণ

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে দেশে আসছে আরো ১০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন)। ইতোমধ্যে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দাই রোটেম এসব লোকোমোটিভ তৈরি করে দক্ষিণ কোরিয়ার বুশান বন্দরে পাঠিয়েছে। সেখান থেকে জাহাজে করে লোকোমোটিভগুলো দেশে আনা হবে।

সব প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী মাসেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে অত্যাধুনিক এসব লোকোমোটিভ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের হাতে এসে পৌঁছাবে। লোকোমোটিভগুলো ট্রায়াল রান শেষে রেলের বহরে যুক্ত হলে ইঞ্জিন সংকট কিছুটা কমবে।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান- দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিক, দ্রুতগতির এবং বিশ্বমানের করতে বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য বিদেশ থেকে ২০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লোকোমোটিভ আমদানির প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। প্রায় ৭০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০টি মিটারগেজ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লোকোমোটিভ সরবরাহের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান হুন্দায় রোটেমের সঙ্গে চুক্তি করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

চুক্তি অনুযায়ী- গত ৯ জুন জাহাজে করে প্রথম ধাপে ১০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মিটারগেজ লোকোমোটিভ বাংলাদেশে পাঠায় হুন্দায় রোটেম। সেই সময় দেশে আসা ১০টি লোকোমোটিভ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস করে চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ডে রাখা হয়। ১৩ জুন ১০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লোকোমোটিভের একটি চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর ট্রেন পাহাড়িকা এক্সপ্রেসে যুক্ত করে ট্রায়াল রান শুরু করা হয়।

প্রথম ধাপে আসা সব লোকোমোটিভ সফল ট্রায়াল রান শেষে গত সপ্তাহে রেলের বহরে যুক্ত করা হয়। এখন চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপে আরো ১০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লোকোমোটিভ পাঠাচ্ছে হুন্দায় রোটেম। যা আগামী মাসেই বাংলাদেশ রেলওয়ের হাতে এসে পৌঁছাবে বলে আশা করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

তারা জানান- বর্তমানে রেলের বহরে যেসব লোকোমোটিভ রয়েছে সেগুলো ম্যানুয়াল। হুন্দায় রোটেম থেকে কেনা ২০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লোকোমোটিভ পুরোটাই ডিজিটাল সিস্টেমে চলবে। লোকোমোটিভের শীতাতপ যন্ত্র চলবে ইঞ্জিনের শক্তি থেকে। এ কারণে ইঞ্জিনের শক্তিও বেশি থাকবে এসব লোকোমোটিভে। বর্তমানে যেসব ইঞ্জিন রয়েছে তা ১ হাজার ৫০০ হর্স পাওয়ারের। নতুন ইঞ্জিনগুলো ২ হাজার ২০০ হর্স পাওয়ারের।

নতুন আনা লোকোমোটিভে চালকদের জন্য নানা অত্যাধুনিক সুবিধা রয়েছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ক্যাবে (চালকদের বসার ও ট্রেন পরিচালনার স্থান) বসে ট্রেন পরিচালনা করা লোকোমাস্টার বেলাল উদ্দিন মুঠোফোনে পূর্বকোণকে বলেন, এক কথায় অসাধারণ অনুভূতি। ঠা-া হাওয়ায় ধুলাবালিহীন ক্যাবে বসে ট্রেন পরিচালনা করতে পেরে দারুণ লেগেছে। প্রতিটি ট্রেনে এই ধরনের লোকোমোটিভ থাকলে ট্রেন পরিচালনা করা আরো উপভোগের হতো।

রেলওয়ের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লোকোমোটিভ সংগ্রহ প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ হাসান মনসুর পূর্বকোণকে বলেন- কোরিয়া থেকে আমদানি করা ২০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লোকোমোটিভের দ্বিতীয় ও শেষ চালান আগামী মাসে দেশে আসবে। ইতোমধ্যে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দায় রোটেম এসব লোকোমোটিভ তৈরি শেষে  দক্ষিণ কোরিয়ার বন্দরে পাঠিয়েছে। সেখান থেকে জাহাজে করে লোকোমোটিভগুলো দেশে আনা হবে।

তিনি বলেন, সব প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী মাসেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে অত্যাধুনিক এসব লোকোমোটিভ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের হাতে এসে পৌঁছাবে বলে আমরা আশাবাদী। প্রথম ধাপে দেশে আসা ১০টি এবং দ্বিতীয় ধাপের ১০টি লোকোমোটিভ রেলের বহরে যুক্ত হলে ইঞ্জিন সংকট কিছুটা কমবে। পাশাপাশি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লোকোমোটিভের যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শীতাতপ লোকোমোটিভ থাকলেও বাংলাদেশে এই প্রথম।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন