চট্টগ্রাম বুধবার, ০১ মে, ২০২৪

সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে

ইফতেখারুল ইসলাম

১১ জুলাই, ২০২১ | ১২:০৬ অপরাহ্ণ

দেশের ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে গেলে বুঝার উপায় নেই দেশে এখন কঠোর লকডাউন চলছে। সকাল থেকে প্রচ- যানজট, শ্রমিকরা একে অপরের গা ঘেঁষে মালামাল উঠানামা করছেন। কারো মুখে মাস্ক নেই। গতকাল শনিবার সরেজমিন পরিদর্শনে এই চিত্র দেখা গেছে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে চাক্তাইয়ের একাধিক শ্রমিকের সাথে আলাপকালে তারা জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানা কিংবা বাসা থেকে তাদের বের না হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ তারা কাজ করলেই চাল কিনতে পারেন। কাজ না করলে উপোস করতে হবে। মাস্ক-হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রসঙ্গে তারা বলেন, তাদের দৈনন্দিন চাহিদার তালিকায় জিনিষগুলো নেই। কারণ মাস্ক এবং হ্যান্ডস্যানিটাইজার কেনার সামর্থ তাদের নেই। এমনকি করোনা নিয়ে ভাবার সময়ও তাদের নেই। পেটে ভাত না থাকলে করোনা নিয়ে ভেবে কী হবে, এমন প্রশ্নও করেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বেড়ে গেছে। বিভিন্ন জেলা-উপজেলার দোকানদাররা ঈদের চাহিদাকে সামনে রেখে ভোগ্যপণ্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তাতে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যস্ততা কিছুটা বেড়েছে। একারণে এখানে সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই।
জানতে চাইলে বক্সিরহাট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী নুরুল হক পূর্বকোণকে বলেন, বড় ব্যবসায়ীরা এবং সংগঠনের নেতৃবৃন্দ করোনার ভয়ে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে আসে না। শ্রমিকরা আল্লাহর বিশেষ রহমত নিয়ে বেঁচে আছে। শ্রমিকরাতো ব্যবসায়ীদের কাজই করছে।
সাবেক কাউন্সিলর জামাল হোসেন পূর্বকোণকে বলেন, শ্রমিকদের পাশে কোন ব্যবসায়ী সংগঠন সেভাবে দাঁড়ায়নি। অথচ এখানে যেসব বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে তারা চাইলে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে পারতেন। এখন করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে। মাস দুয়েক আগে কিছু সহযোগিতা শ্রমিকরা পেয়েছে। এ সময়ে শ্রমিকদের ন্যূনতম মাস্ক সরবরাহ করতে পারতো। শ্রমঘন এই বাণিজ্যিক এলাকায় একটি করোনা পরীক্ষার বুথ স্থাপনের দাবি শুরু থেকেই উঠেছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি।
জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জ ট্রেড এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ সগীর আহমদ পূর্বকোণকে বলেন, গত রমজানেও শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। চিটাগং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পক্ষ থেকে কয়েক দফা মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে সাধ্যমত শ্রমিকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। তবে এ সময়ে ব্যবসা নেই বললেই চলে। অনেক শ্রমিক বেকার। সব শ্রমিককে চাহিদা অনুযায়ী সহযোগিতা করা সম্ভব হচ্ছে না। শ্রমিদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার জন্য তিনি বিত্তবান ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানান।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন পূর্বকোণকে বলেন, করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে তারা সংগঠনের পক্ষ থেকে তিন দফায় ২৫ হাজার মাস্ক বিতরণ করেছেন। মাঝিদের দেয়া হয়। তারা ব্যবহার করে না। খাদ্য সহায়তাও দেয়া হয়েছে। সামনে আবারো দেয়ার পরিকল্পনা আছে। যেকোন দুর্যোগে তারা সংগঠনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন বলে জানান তিনি।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট