চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪

পাল্টে যাচ্ছে উত্তর কাট্টলী

নিজস্ব প্রতিবেদক 

২৭ জুন, ২০২১ | ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মৃতদেহ সৎকারে এখন অন্যতম ভরসাস্থল উত্তর কাট্টলী সনদ দত্ত সার্বজনীন মহাশ্মশান। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে এখন ব্যবহার উপযোগী এ প্রতিষ্ঠানটি। সরকারি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে চলছে এর আরো উন্নয়ন কাজ। পাল্টে যাচ্ছে এর পুরো অবয়ব। চট্টগ্রামবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে এবার এগিয়ে এসেছে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রায় অর্ধকোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে রিটেইনিং ওয়ালসহ রাস্তা ও গেইট নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে অফিসকক্ষসহ সৎকারে নিয়োজিতদের ব্যক্তিদের আবাসস্থল। গত বছরের ২৬ মার্চ লকডাউন শুরুর পর চট্টগ্রামে কোভিডে আক্রান্তে মৃতদের সৎকার করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছিল স্বজনদের। জেলার বিভিন্ন স্থানে মৃতদেহ সৎকারে বাধা দেয়া হচ্ছিল।

এমন অবস্থায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় করোনায় আক্রান্ত মৃতদেহ সৎকারে এগিয়ে আসে উত্তর কাট্টলী মহাশ্মশান কর্তৃপক্ষ। এরপর করোনা আক্তান্ত চট্টগ্রাম জেলার শতাধিক মৃতদেহ সৎকার করা হয় এখানে। শুরুর দিকে সৈকতের পাশে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে উঠা এ শ্মশানে দাহ করতে গিয়ে নানা প্রতিকূলতার সম্মূখীন হতে হয়েছে সৎকার করতে আসা স্বেচ্ছাসেবী ও মৃতের স্বজনদের। কর্দমাক্ত রাস্তা পেরিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে মৃতদেহ সৎকারে নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এমন অবস্থায় মোস্তফা হাকিম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন এবং সাবেক মেয়র মনজুর আলমের উদ্যোগে ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সড়ক নির্মাণ ও বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করে সৎকারের উপযোগী করা হয় শ্মশানটি। কিন্তু সমুদ্র উপকূলবর্তী এবং প্রাকৃতিক বৈরিতার কারণে বছর ঘুরতেই ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়ে মূল সড়কটি।

এছাড়া বর্ষা মৌসুমে সামুদ্রিক জোয়ারে ডুবে যায় সড়কসহ শ্মশানের কিছু অংশ। এ অবস্থায় স্থানীয় সাংসদ আলহাজ দিদারুল আলম রাস্তাটি পুননির্মাণের আশ্বাস দেন। যার প্রেক্ষিতে বর্তমানে এলজিইডি ৫২ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা প্রাকল্পিত ব্যয় ধরে উন্নয়ন প্রস্তাব তৈরি করেছে। দিদারুল আলম এমপি পূর্বকোণকে বলেন, কোভিড মহামারী শুরুর পর থেকে চট্টগ্রামে সনাতন সম্প্রদায়ের শবদেহ সৎকারে একমাত্র ঠিকানা ছিল এ মহাশ্মশানটি। এর মধ্যে পাকারাস্তা নির্মাণ ও কিছু অবকাঠামো কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে এলজিইডি’র মাধ্যমে এক কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাসহ আনুষাঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। একটি আধুনিক ও পূর্ণাঙ্গ মহাশ্মশান নির্মাণে প্রয়োজনীয় সবরকম সহযোগিতা করা হবে। এলজিইডির প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে বেড়ী বাঁধ থেকে শ্মশানে সরাসরি মৃতদেহ নেয়া সম্ভব হবে। এদিকে শ্মশান পরিচালনা পরিষদের উদ্যোগে বর্তমানে প্রায় ১৫ লক্ষটাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে অফিসকক্ষ ও শ্মশানের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের আবাসস্থান। শ্মশান পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কনকন দাশ শর্মা জানান, আবাসিক এলাকা থেকে দূরে অবস্থানের কারণে রাতের বেলা শব দাহ করতে সমস্যা হয়। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে পুরোহিত, ডোমসহ প্রয়োজনীয় লোক পরিবারসহ এখানে থাকতে পারবেন। ফলে যে কোন সময়ে শবদাহ করতে সমস্যা হবে না। সব নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে চট্টগ্রামে শবদাহ সৎকারের সমস্যা অনেকাংশে লাঘব হবে।

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট