চট্টগ্রাম শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪

হাজার টাকা কেজির আম ‘সূর্য ডিম’

মো. জহুরুল আলম, খাগড়াছড়ি

৯ জুন, ২০২১ | ২:৩১ অপরাহ্ণ

পার্বত্যাঞ্চলে উৎপাদিত ‘সূর্য ডিম’ বা মিয়াজাকি আম হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। জাপানি মিয়াজাকি আম বাংলাদেশ ও ভারতে সূর্য ডিম বা লাল আম নামেই বেশি পরিচিত। যেটি পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ও পুষ্টিসমৃদ্ধ আমের প্রজাতি হিসেবে স্থান করে নিয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

জাপানের মিয়াজাকি অঞ্চলের এ আম প্রথমবারের মতো চাষ করে সফল হয়েছেন খাগড়াছড়ির মহালছড়ির চাষি হ্লাশিমং চৌধুরী। জেলার মহালছড়ি উপজেলার ধুমনিঘাট এলাকায় ৬০ শতক বাগানে মিয়াজাকি প্রজাতির ১২০টি চারা লাগিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ফলন তুলেছেন সফল এ বাগানি।

সরেজমিনে ধুমনিঘাট এলাকার বাগানে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ি ঢালুর গাছে ঝুলছে লাল লাল আম। পোকা মাকড়ের আক্রমণ থেকে বাঁচতে কিছু কিছু গাছে ব্যবহৃত হচ্ছে ব্যাকিং পদ্ধতি। মুকুল আসা থেকে ফলন তোলা পর্যন্ত আমের যতœ নেয়ায় কোন কমতি থাকে না হ্লাশিমংয়ের। তাই অন্যান্য বাগানির চেয়ে তার ফলের চাহিদা ও গুণগত মান অনেক ভালো থাকে। পার্বত্য চট্টগ্রামে মিয়াজাকি আমের প্রথম চাষও হয় তার হাত ধরে।

জানা যায়, জাপানের মিয়াজাকি অঞ্চলে প্রথম চাষাবাদ হয় এ আমের। তাই অঞ্চলের নামানুসারে এর নাম হয় মিয়াজাকি ম্যাংগো। বিশ্বের অন্যান্য আমের চেয়ে এ আমের বাজারমূল্য যেমন বেশি তেমনি পুষ্টিগুণও অনেক। হ্লাশিমং চৌধুরী বলেন, ভারতের পুনে থেকে ২০১৭ সালে মিয়াজাকি আমের মাতৃ চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এরপর তার বাগানে কলম চারার মাধ্যমে ১২০টি চারা করেন। ২০১৯ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে লাগানো মিয়াজাকি বাগানে ফলন আসতে থাকে। ২০২০ সালেও ভালো ফলন হয়। তবে বৈরি আবহাওয়ার কারণে এ মৌসুমে ফলন কম হলেও দাম পেয়ে খুশি। প্রতি কেজি আম বিক্রি করছেন ১ হাজার টাকায়। এবার এক টন অর্থাৎ এক হাজার কেজির মতো ফলন পাবেন এবং তা বিক্রি করে ১০ লাখ টাকা আয় হবে বলে আশা তার।

মিয়াজাকি আমের চাষ সম্প্রসারণ সম্পর্কে হ্লাশিমং চৌধুরী আরও বলেন, এ আমের যে বাজারমূল্য ও চাহিদা, তা দিন দিন বাড়বে। উচ্চমূল্যের এ ফলের চারা পার্বত্য চট্টগ্রামে ছড়িয়ে দেয়ার ইচ্ছা তার। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে মাতৃ চারা কলমের কাজ চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি। মহালছড়ির এ বাগানে মিয়াজাকি আম দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় বাড়ছে প্রতিদিন। এখানকার বাগানিদের মাঝেও মিয়াজাকি আমের চারা লাগানোর ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।

খাগড়াছড়ি হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কিশোর কুমার মজুমদার বলেন, মিয়াজাকি আমের চাষ খাগড়াছড়িতে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে হর্টিকালচার সেন্টারের নার্সারিতে মাতৃ চারা উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। যদি এটি করা যায়, তাহলে এ অঞ্চলের ফলদ বাগানের সাথে সম্পৃক্তদের জীবনমান পাল্টে যাবে। কারণ, মিয়াজাকি আমের উচ্চমূল্যের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও বেশ কদর রয়েছে। পাহাড়ে এ আম ব্যাপক আকারে রোপণ করা হলে এখানকার কৃষি অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসবে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট