চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মহেশখালীর সাপমারার ডেইল মসজিদ অলৌকিক মসজিদ হিসাবে পরিচিত

এ.এম হোবাইব সজীব, মহেশখালী

৭ মে, ২০২১ | ২:৫০ অপরাহ্ণ

মহেশখালী উপজেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ ধলঘাটা ইউনিয়ন। আদিকাল থেকে এ দ্বীপে মানুষের যাতায়াতের এক মাত্র ভরসা ছিল নদী পথ। নৌকা দিয়ে যেতে হত এ দ্বীপে। নদী পথ ছাড়াও বছর দুয়েক ধরে বর্ষাকাল ছাড়া গাড়ি করে পৌঁছা যায় গন্তব্যে ।

উপজেলার প্রাচীনতম ও অলৌকিক মসজিদটি ধলঘাটা ইউনিয়নের নদীরকুল ঘেঁষে সাপমারার ডেইল নামক এলাকায় অবস্থিত। কারো ওপর জুলুমবাজরা অবিচার করলে তার সঠিক বিচার পাওয়া যায় সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে। এবং শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পরীক্ষায় ফলাফল ভাল করার আশায় এ মসজিদে আসেন নিয়মিত।

এ ধরনের নানা বিশ্বাস নিয়ে ধলঘাটা সাপমারার ডেইল প্রাচীনতম মসজিদে আসেন মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ। তবে সফলতার গল্প বেশি। প্রতি শুক্রবারে বিভিন্ন মানতে আসা সব ধর্মের মানুষের বিশ্বাসের সম্মিলন ঘটে এই মসজিদে।

মুসলমানরা নামাজ পড়তে আসার পাশাপাশি ভিন্ন ধর্মালম্বীরা আসেন দেয়ালে চুন লেপন, এখানে লোকেরা নিয়মিত মান্নাত করে ও দূরদূরান্ত থেকে জিয়ারত করার জন্য নারী-পুরুষেরা আসেন। মসজিদের নামে গরু, ছাগল, টাকা-পয়সা মান্নত করলে ফল পাওয়া যায় বিধায় মসজিদটির নাম দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে ছাগল ও জবাই করে আগত মুসল্লিদের মাঝে তবারুক বিতরণ করেন।

ঘটিতে পানি রেখে কিছুক্ষণ পর পান করা, মোমবাতি প্রজ্বলনসহ নানা মানত হাসিলের উদ্দেশ্যে। এই চিত্র শুক্রবারে বেশি হলেও সপ্তাহের প্রতিদিনই দেখা যায়। উপজেলা সদর থেকে কালারমারছড়া হয়ে নদী পথে ৩৩ কি. মি. এবং সড়ক পথে মাত্র ৪৮ কি. মি. দক্ষিণ পশ্চিমে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প সড়ক ঘেঁষে গিয়ে ধলঘাটা সাপমারার ডেইল এ মসজিদটি অবস্থিত।

জানা যায়, ধলঘাটা সাপমারার ডেইল মসজিদ ১৮৫৪ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে মাটির দেয়াল খড়ের চাউনি দিয়ে এ মসজিদে নামাজ পড়া হত, পরে ১৯৭৮ সালে প্রখ্যাত ব্যক্তি হাজী আমিন শরিফ নিজস্ব অর্থায়নে, নিজস্ব জায়গায় ইট পুড়িয়ে মসজিদটি পাকা করেন।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় প্রায় শত শত বছর পূর্বে এ মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জনশ্রুতি আছে, মসজিদসংলগ্ন একটি কবরস্থান আছে, সেখানে আল্লাহ’র প্রিয় বান্দা অলিগণ শায়িত আছেন বলে কিছু কারামতি দ্বারা প্রমাণিত হয়। এই মসজিদে বিভিন্ন নিয়তে ও মানত করে আসা মানুষ সফলতা অর্জন করায় এটি অলৌকিক মসজিদ হিসাবে পরিচিত।

সাপমারা ডেইল মসজিদ কমপ্লেক্স পরিচালনা কমিটির সভাপতি মৌলভী সিকান্দর আলী পূর্বকোণকে জানান, এই মসজিদের কবরস্থানে অনেক কামেল বুজুর্গ ব্যক্তিদের কবর আছে বলে এটির আরেক নাম অলৌকিক মসজিদ। এখনো শত শত লোক বিভিন্ন নিয়তে এই মসজিদে ভিড় করতে দেখা যায়। এই মসজিদে বিভিন্ন নিয়তে ও মানত করে আসা মানুষ আশানুরূপ সফলতা অর্জন করে বলে জানা গেছে। তিনি আরোও বলেন, আমি নিজেও এই মসজিদের অনেক অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট