চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

ক্রেতা নেই, নেই সেই বাহারি নাম

ইফতেখারুল ইসলাম 

১ মে, ২০২১ | ২:৩৬ অপরাহ্ণ

স্বাভাবিক সময়ে রমজানের ক্রেতা সামাল দিতে নিয়োগ দেয়া হত অস্থায়ী বিক্রেতা। বাহারি নাম দিয়ে বিক্রি হত নানা ডিজাইনের কাপড়। এবার ক্রেতাও নেই, কাপড়ের সেই বাহারি নামও নেই। অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীর দোকান বন্ধ করে গ্রামে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ভাল নেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। বেচা-বিক্রি নেই। তাই অনেক দোকানি এবার নতুন কাপড়ও তুলেনি।

একাধিক ক্রেতা-বিক্রেতার সাথে আলাপকালে জানা যায়, লকডাউনের কারণে এমনিতেই মানুষ কেনাকাটা করার জন্য মার্কেটে যাচ্ছে না। তবে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তশ্রেণির কিছু মানুষ আছে যারা রমজানে দান-দক্ষিণা পেয়ে থাকেন। এই টাকা দিয়ে তারা ক্ষুদ্র ও মাঝারি মানের দোকানে কেনা-কাটা করেন।

কিন্তু করোনা মহামারী দীর্ঘ হওয়ায় এবার মানুষের মাঝে দান করার প্রবণতা কমে গেছে। গতবার করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পর মানুষ গোপনে এবং প্রকাশ্যে ব্যাপকহারে দান করেছে। জাকাত দেয়ার হারও বেশ ভাল ছিল। এবার সেই প্রবণতায় কিছুটা ভাটা পড়েছে। তাই নিম্ন ও নিম্ন  মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে। একারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি মানের দোকানদারদের ব্যবসায় বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।

চকবাজারের চক ভিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী তুষার কান্তি পাল বলেন, প্রতিবছর রমজানের মাঝামাঝি সময়ে তারা দিনে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার কাপড় বিক্রি করেন। এবার দিনে দুই হাজার টাকাও বিক্রি নেই। দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন তুলতেই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অথচ সারাবছর অপেক্ষায় ছিলেন রমজান মাস তথা ঈদ বাজারের আশায়। গতবছরও করোনার কারণে মার খেয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, এবারো একই চিত্র। যেহেতু বেচা-বিক্রি নেই। তাই কাপড় আনার জন্য ঢাকায়ও যাননি তিনি। অতিরিক্ত ক্রেতা সামলাতে প্রতিবার রমজান মাসে অতিরিক্ত বিক্রয়কর্মী নিয়োগ দিতে হত। হতাশার সুরে তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে দোকান বন্ধ করে শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যেতে হবে।

লালদিঘি পাড়স্থ মহল মার্কেটের শাহ গদী ক্লথ স্টোরের স্বত্বাধিকারী কাদের জানান, করোনার কারণে ব্যবসা মন্দা হওয়ায় ইতোমধ্যে একজন কর্মচারীকে বিদায় করে দিয়েছেন। তার ১০ লাখ টাকার ব্যাংক ঋণ আছে। গত মাসের কিস্তি দিতে পারেননি। এমাসের কিস্তিও পরিশোধ করতে পারবেন কিনা সন্দেহ আছে। আপাতত দোকান ভাড়া, বাসা ভাড়া দিয়ে এবং খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন।

চক বাজার কে বি প্লাজার কাপড়ের দোকানদার আবদুল্লাহ আল রাজীব সুমন পূর্বকোণকে জানান, তারা মূলত পাইকারি বিক্রেতা। তবে খুচরাও বিক্রি করেন। করোনার কারণে ব্যবসা মন্দা উল্লেখ করে বলেন, খুচরা বিক্রেতাদের বেচা-বিক্রি না হলে পাইকারদেরও ব্যবসা হয় না। করোনার কারণে লকডাউন চলছে। তাছাড়া মানুষ ভয়ে ঘর থেকে বেরও হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে আশানুরূপ ব্যবসা না হওয়াটাই স্বাভাবিক।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট