চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

চিড়িয়াখানার নান্দনিক রূপ

মরিয়ম জাহান মুন্নী 

৩ মার্চ, ২০২১ | ১:০১ অপরাহ্ণ

দু’পাশে সুউচ্চ পাহাড়। পাহাড়ের মাঝখানে ইটের তৈরি লাল, নীল, হলুদ ও সবুজ রঙে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ। পথের দু’পাশে ফাঁকা জায়গায় প্রাকৃতিক পরিবেশে চিত্রাহরিণ, জলহস্তি ও জিরাফের বাসস্থান। দৃশ্যটি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার পাহাড়ের উপর প্রাকৃতিক পরিবেশে তৈরি করা সিঁড়ি ও পশুর খাঁচা। গত বছর চিড়িয়াখানার প্রথম সিঁড়ির উদ্বোধন করা হলেও নতুন করে আরো পাঁচ একর জায়গা জুড়ে তৈরি করা হয়েছে এ দৃষ্টিনন্দন সিঁড়ি। যা এখনো উদ্বোধন করা হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, পাহাড়ের উপরে ১০.২ একর জায়গা জুড়ে করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন পথ। সে পথের ফাঁকে ফাঁকে পশুপাখির খাঁচা। পেয়ারা, সফেদাসহ বিভিন্ন ফলের বাগান। পাহাড়ি রাস্তার দেয়ালে আঁকা হয়েছে নানারকম পশুপাখির ছবি। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এখনো পর্যন্ত জিরাপ ও জলহস্তি না থাকলেও নতুন এ পাহাড়ি সিঁড়ির পাশে জায়গায় করা হয়েছে এ দু’টি প্রাণীর জন্য।

চিড়িয়াখানার চিকিৎসক ও ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ জানান, আমরা চিড়িয়াখানার অনেকগুলো জায়গা বেদখল থেকে উদ্ধার করেছি। সেই জায়গাগুলোতেই নতুন করে সিঁড়ি করা হয়। সিঁড়ির পাশে পুকুরের মত ডোবাটিতে জলহস্তি রাখবো। পাশের জঙ্গল একটাতে চিত্রহরিণ অন্যটিতে জিরাফ থাকার ব্যবস্থা করছি। খুব শীঘ্রই এ জায়গাগুলোতে জলহস্তি ও জিরাফ নিয়ে আসবো। 

দীর্ঘদিনের অবহেলিত চট্টগ্রামের চিড়িয়াখানা এখন নতুন সাজে সজ্জিত। বাঘ, সিংহ, জেব্রা, সাপ, হরিণ, বানর, ভাল্লুক, উল্লুক, কুমির, শিয়াল, খরগোশ, ময়ূর, গয়াল, ঘোড়া ও পাখিসহ প্রায় ৬৩ প্রজাতির ৬২০টি দেশি-বিদেশি পশু-পাখি আছে। আরো আছে বিরল প্রজাতির সাদা ডোরাকাটা বাঘ। আছে প্রাকৃতিক পক্ষীশালা। চিড়িয়াখানার সেই শূন্য খাঁচা এখন আর দেখা যায় না। প্রতিটি খাঁচা এখন পশু-পাখিতে পরিপূর্ণ। কিন্তু পাঁচ বছর আগেও চট্টগ্রামের চিড়িয়াখানা অনেকটা নামমাত্র দৃশ্যমান ছিল। যেখানে ছিল না পর্যাপ্ত পশু-পাখি। খালি ছিল প্রায় খাঁচা। ছিল না সৌন্দর্যের ছোঁয়া। তাই চিড়িয়াখানায় হিসেবে এ চিড়িয়াখানাটি ততটা গুরুত্বর ছিল না দর্শনার্থীদের কাছে। কিন্তু ২০১৪ সালের আগে চিড়িয়াখানা আর বর্তমানের চিড়িয়াখানায় এ যেন আকাশ-পাতাল পার্থক্য। বেড়েছে দর্শনার্থীর ভিড়।

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলেন, প্রতিদিন দর্শনার্থীর ভিড় হচ্ছে। ছুটির দিন ৭ থেকে ১০ হাজার দর্শনার্থীও আসে। আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ২ থেকে ৩ হাজার দর্শনার্থী হয়।ব্যবসায়ী মো. জসিমউদ্দীন ঘুরতে এসেছেন পরিবার নিয়ে। তিনি বলেন, আগের চেয়ে খুব সুন্দর হয়েছে চিড়িয়াখানা। আগেতো খাঁচাগুলো ফাঁকা ছিল। এটি এখন শিশুদের ঘুরার উপযুক্ত হয়ে উঠেছে। শুধু তিনিই নয়, পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন অনেকে। চিড়িয়াখানার সৌন্দর্যে মুগ্ধ দর্শনার্থী।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট