চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অরক্ষিত রেল স্টেশন: কাটা সীমানা গ্রিল দিয়ে ঢুকছে অবাঞ্চিতরা

আল-আমিন সিকদার 

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ৫:৫৯ অপরাহ্ণ

সীমানা প্রাচীর। সম্পদ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান নিরাপদ রাখতে এর ব্যবহার দেখা যায়। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে আগত যাত্রীদের ও রেল সম্পদের নিরাপত্তায় দেয়া হয়েছে লোহার গ্রিল। তবে নিরাপত্তায় দেয়া এ লোহার গ্রিলগুলো এখন অনিরাপদ। স্টেশনে রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যারাকের পাশেই গ্রিল কেটে তৈরি করা হয়েছে স্টেশনে প্রবেশের পথ। ট্রেন ছাড়ার আগে যেমন এ পথ দিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করে বিনা টিকিটের যাত্রী, তেমনি এসব যাত্রীদের জিম্মি করে টাকা আদায় করতে প্রবেশ করে হিজড়া বাহিনী। দিনভর বহিরাগতদের প্রবেশের সুযোগতো থাকছেই। এতে যেমন স্টেশনে থাকা রেলের মূল্যবান সম্পদ খোয়া যাচ্ছে তেমনি স্টেশনে চোরের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন যাত্রীরা।

তবে এনিয়ে মাথা ব্যাথা নেই রেল কর্তাদের। সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের প্রবেশমুখে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নজরদারি। যাত্রীদের টিকিট চেকের পাশাপাশি প্রযুক্তির রশ্মি দিয়ে তল্লাশি চলছে পুরো শরীর। টিকিট না থাকলে মিলছে না স্টেশনে প্রবেশের সুযোগ। তবে এতে আশ্বস্ত হওয়ার কিছুই নেই। কারণ, স্টেশন পাহাড়া দিতে গিয়ে নিজের ঘরই (নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যারাক) সামলাতে পারছে না রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও রেল পুলিশের সদস্যরা। রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যারাকের ঠিক পাশেই কেটে ফেলা হয়েছে সীমানা গ্রিলের একটি অংশ। যে ফাঁক দিয়ে অনায়াসে ভেতরে প্রবেশ করছে বহিরাগতরা। ঢুকছে টিকিটবিহীন যাত্রী ও যাত্রীদের টাকা নিতে উত্ত্যক্ত করা হিজড়ারাও। বেশকিছু তরুন, যুবক ও কিশোরদেরও এই ফাঁক দিয়ে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। যারা সকলেই ভাসমান। এসব কিশোররাই স্টেশনে ঘটাচ্ছে চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা। এমনকি, চুরি করা টাকা দিয়ে নিরাপদে মাদকও সেবন করছেন তারা স্টেশনে প্রবেশ করে।

এদিকে স্টেশনে গত একবছরে ঘটেছে প্রায় অর্ধ শতাধিক চুরির ঘটনা। চলন্ত ট্রেনের জানালা দিয়ে প্রায়ই ছোবল মেরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে যাত্রীদের মোবাইল। সুযোগ বুঝে চুরি করছে যাত্রীদের মানিব্যাগ।

স্টেশনে বহিরাগতরা চাইলেই অনায়াসে প্রবেশ করতে পারছে বলে স্বীকার করেছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. আনসার আলী। তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘ স্টেশনের সীমানা গ্রিলের একটি অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। যেখান দিয়ে চাইলেই যেমন বিনা টিকিটের যাত্রী প্রবেশ করতে পারছে তেমনি বহিরাগতরাও। এই সমস্যা সমাধানে রেলের প্রকৌশল বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। তবে বাজেট ও কর্মপরিকল্পনা এখনো ঠিক না হওয়ায় তারা এ কাজ করতে পারছেন না বলে আমাদের জানান।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্টেশনের এক নিরাপত্তা কর্মী পূর্বকোণকে বলেন, ‘ স্টেশনে হিজড়া প্রবেশ নিষেধ। কিন্তু প্রায় বছরের বেশি সময় ধরে ওই ফাঁক দিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করছে তারা। বিরক্ত করছে যাত্রীদের। গ্রিলটি মেরামত করেও কোন সমাধান আসবে না। স্থায়ী সমাধানের জন্য সীমানা গ্রিলটির উচ্চতা বাড়ানোর পাশাপাশি কাঁটাতার বসাতে হবে। তা না হলে, স্টেশনে চুরি ও মাদকসেবীদের প্রবেশ ঠেকানো যাবে না।’

 

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট