চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল: ৮ স্পটে উচ্ছেদ ফেব্রুয়ারির শুরুতে

আল-আমিন সিকদার 

৩০ জানুয়ারি, ২০২১ | ২:৪৪ অপরাহ্ণ

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের বেদখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধার ও রক্ষায় গৃহীত মাস্টার প্ল্যানের পর গত ডিসেম্বরে উচ্ছেদ অভিযানে নামে রেলওয়ে। টানা দুই দিন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয় জোড় ডেবার পাড়জুড়ে। টানা দুই দিনের অভিযানে উচ্ছেদ করা হয় ৫৩১ টি স্থাপনা। উদ্ধার করা হয় প্রায় দুই একর ভূমি। তবুও শেষ পর্যন্ত জোড় ডেবার পাড়কে সম্পূর্ণ দখলমুক্ত করতে পারেনি রেল।

দুই দিনের বাজেট নিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে নেমে শেষ করতে পারেনি ৩০ শতাংশ কাজ। তবে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দখলমুক্ত হতে যাচ্ছে জোড় ডেবা। পাশাপাশি এ মাসেই নগরীর ৮টি স্পট অবৈধ দখলমুক্ত করার ছক এঁকেছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ। পূর্বাঞ্চলের ভূ-সম্পত্তির তথ্যমতে, রেলওয়ের ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে বেদখলে থাকা জমির পরিমাণ দুই হাজার একর।

এরমধ্যে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম শহরেই বেদখলে আছে প্রায় ২০ একর জমি।  পূর্বাঞ্চল ভূ-সম্পত্তি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুই সিটি এলাকায় রেলের শতকোটি টাকার জমি বেদখলে আছে। এসব জমি উদ্ধার করে সংরক্ষণের পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে লাভ করতে মাস্টার প্ল্যান হাতে নিয়েছে রেলওয়ে। এ মাস্টারপ্ল্যানের ছক অনুযায়ী গত বছরের ডিসেম্বর থেকে লাগাতার উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা ছিল ভূ-সম্পত্তি বিভাগের। তবে জনবল ও পুলিশ সংকট থাকায় এ অভিযান শুরু হয় ডিসেম্বরের শেষ দিকে। জোর ডেবার পাড় দখলমুক্ত করতে দুই দিনের পরিকল্পনা নেয়া হলেও সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।

পরবর্তীতে জানুয়ারিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর আবারও পিছিয়ে যায় উচ্ছেদ অভিযান। কারণ, চসিক নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে করতে মাঠে দিনরাত কাজ করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ সদস্যরা। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে হলে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং শতাধিক পুলিশ সদস্যের প্রয়োজন হয়। নির্বাচনের কারণে তাই আটকে যায় উচ্ছেদ অভিযান। তবে ফেব্রুয়ারিতে লাগাতার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা কঙ্কন চাকমা পূর্বকোণকে বলেন, ‘রেলের জমি অবৈধ দখলমুক্ত করতে মাস্টারপ্ল্যানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলেও নির্বাচনের কারণে থেমে যায়। এছাড়া আমার বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তাও বেশকিছু দিন ছুটিতে ছিলেন। নির্বাচন শেষ। এখন ফেব্রুয়ারিতে লাগাতার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। প্রথম দিকে জোর ডেবার অবশিষ্ট অংশ উচ্ছেদ করা হবে। পরবর্তীতে এ মাসের মধ্যেই ফয়’স লেক এলাকার ৮টি ম্পটে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে। এমনকি পরবর্তীতেও যাতে কেউ উদ্ধার হওয়া জমি দখলে নিতে না পারে সে পদক্ষেপও নেয়া হবে। যা প্রতিটি উচ্ছেদের পর চলমান থাকবে’।

পূর্বাঞ্চলের ভূ-সম্পত্তির তথ্য বলছে,  রেলওয়ের ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে বেদখলে আছে দুই হাজার একর জমি। শুধুমাত্র চট্টগ্রাম শহরেই বেদখলে আছে রেলের প্রায় ২০ একর জমি। সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এ ২০ একর জমির আনুমানিক মূল্য হাজার কোটি টাকা। একইভাবে, শুধুমাত্র ঢাকা শহরে অবৈধ দখলে রয়েছে রেলের প্রায় ৫০ একর জমি। যার আনুমানিক মূল্য চার হাজার কোটি টাকা।

এদিকে, বেদখলে থাকা এসব জমি উদ্ধারে রেল প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করলেও স্থায়ীভাবে মিলছে না সমাধান। উদ্ধার হওয়া জায়গা রক্ষায় বরাবরই উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে রেল। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে রেলের কর্মচারী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী মহল। যার বদৌলতে রেলের জমি দখলে নিয়ে আবাসন তৈরি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি মহল।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট