চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলেই ধারণা করা যাবে মৃত্যুর কারণ : এডিসি হুমায়ন

শিশু আরিয়ানের মৃত্যুর দুই মাসেও ক্লু পায়নি পুলিশ

মৃতদেহ ফুলে যাওয়ায় শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন আছে কিনা জানতে পারেনি পুলিশ

নাজিম মুহাম্মদ

২ জানুয়ারি, ২০২১ | ১১:২১ পূর্বাহ্ণ

ছয় বছরের মেহেরাব ইসলাম আরিয়ান নিহতের দুই মাস পার হলেও জানা গেল না নিষ্পাপ এ শিশুর মৃত্যুর কারণ। গত ২৯ অক্টোবর নিখোঁজের তিনদিনের মাথায় পানিতে ভাসমান অবস্থায় শিশু আরিয়ানের মৃতদেহ উদ্ধার করে হালিশহর থানা পুলিশ। থানা পুলিশ ছাড়াও ঘটনার পর পর পুলিশের অপরাধ বিভাগ (সিআইডি) পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। প্রয়োজনীয় আলামতও সংগ্রহ করে। রাজধানী ঢাকা থেকে মা বাবার সাথে নানার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল আরিয়ান।

জানতে চাইলে, নগর পুলিশের পশ্চিম জোনের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) হুমায়ন কবির জানান, শিশু আরিয়ানের মৃত্যুর কারণ এখনো উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি। এডিসি হুমায়ন বলেন, আরিয়ানের মৃতদেহটি পচে ফুলে যাওয়ায় আঘাতের কোন চিহ্ন আছে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব হয়নি। আমরা এখনো ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পায়নি। তবে প্রতিবেদনটি হাতে পেলে কিভাবে মারা গেছে তার একটি ধারণা পাওয়া যেতো। আরিয়ান রাজধানী ঢাকার নাখাল পাড়ার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জুয়েলের ছেলে। হালিশহর শাপলা আবাসিকে তার নানার বাসা। করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘদিন ঘরবন্দী শিশুটিকে মায়ের সাথে তার নানার বাড়িতে রেখে বাবা সাইফুল ইসলাম জুয়েল কর্মস্থল ঢাকায় চলে যান।

গত ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আরিয়ান নানার বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। এ ঘটনায় তার মা মারজান আক্তার ওই রাতেই পাহাড়তলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। এছাড়া এলাকাতে মাইকিং করা হয়েছিল। ঘটনার তিনদিন পর (৩০ অক্টোবর) দুপুরে স্থানীয়রা হালিশহর থানার পুলিশকে জানায়, শাপলা আবাসিকের বিপরীতে হালিশহর থানাধীন দারুল ফোরকান মাদ্রাসার পাশে নির্মাণাধীন একটি ভবনের ভেতর জমে থাকা পানিতে এক শিশুর লাশ ভাসছে। এরমধ্যে হালিশহর থানার ওসি পাহাড়তলী থানার ওসির কাছ থেকে জানতে পারেন সেখানে আরিয়ান নামে ছয় বছরের এক শিশু নিখোঁজের ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তার মা। শিশুটির পরনে একটি গেঞ্জি ও হাফ প্যান্ট ছিল। তা দেখে তার স্বজনরা শনাক্ত করেন যে এটি আরিয়ানের লাশ।

লাশটি যে প্লটে পাওয়া গেছে সেই প্লটে ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ হয়েছে। ভবন নির্মাণ বন্ধ থাকায় সেখানে দুই/আড়াই ফুট পানি জমে ছোট ছোট কচুরিপানায় ভরে আছে। সেই পানিতে উল্টো হয়ে ভাসছে শিশু আরিয়ান। হালিশহর থানার ওসির উপস্থিতিতে দুই ব্যক্তি পানিতে নেমে আরিয়ানের লাশ তুলে আনে। শিশুটির মৃতদেহ পচে ফুলে গেছে। হাত পা গুলো ছড়ানো অবস্থায় শক্ত হয়ে আছে। যে ডোবায় মৃতদেহ পাওয়া গেছে সেখানে পাওয়া গেছে শিশুটির স্যান্ডেল জোড়া ।

থানা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে। মৃতদেহটি ফুলে যাওয়ায় শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন আছে কিনা তা জানতে পারেনি পুলিশ।

আরিয়ানের পরিবারের দাবি, ছেলেটি বিকেলে বের হয়ে বাসার বাইরে খেলছিল। রাস্তা পার হয়ে সন্ধ্যার সময় এসে পানিতে নামবে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাছাড়া বাসা থেকে বের হয়ে একা একা এতদূর আসা শিশুটির পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ সে তো এই এলাকার কিছুই চিনে না।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট