চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে দায়িত্ব পালন করবেন পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবি ও আনসার

সীতাকুণ্ড পৌরসভা নির্বাচন: প্রশাসনের পদক্ষেপে সন্তুষ্ট প্রার্থীরা

সৌমিত্র চক্রবর্তী

২৭ ডিসেম্বর, ২০২০ | ৫:০৯ অপরাহ্ণ

সীতাকুণ্ড পৌরসভার নির্বাচন আগামীকাল সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে ব্যাপক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটাররা যেন বিনা বাধায় তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সেলক্ষ্যে নির্বাচনে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবি ও আনসার সদস্য। আর প্রশাসনের এ কঠোর অবস্থানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সকল মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ফলে সীতাকুণ্ড পৌরসভার প্রথম ইভিএম পদ্ধতির ভোট হয়ে উঠতে পারে চমৎকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের উদাহরণ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ড পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র ও ৯টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর (সাধারণ ও সংরক্ষিত মহিলা) পদে মোট ৭৮ জন প্রার্থী পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গতকাল ছিলো প্রচারণার শেষ দিন। শেষ মুহূর্তে এসে তাই বিরামহীন প্রচারণা চালান প্রার্থীরা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে, মাইকিং, পোস্টারিংসহ নানাভাবে তারা নির্বিঘ্নে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে মেয়র প্রার্থীরা প্রশাসনের ভূমিকায় খুশি হলেও একে অন্যের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ তুলেছেন।

এ বিষয়ে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনছুর বলেন, প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই যে তারা প্রচারণার জন্য খুবই সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। আমরা নির্বিঘ্নে প্রচারণা চালাচ্ছি। তবে আমি খবর পেয়েছি নৌকার প্রার্থীর আত্মীয় স্বজন ও লোকজন আমাদের ভোটাররা যেন কেন্দ্রে না যায় সেজন্য অত্যন্ত কৌশলে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এ বিষয়ে নজরদারির জন্য প্রশাসন ও সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

প্রায় একই ধরণের বক্তব্য সম্মিলিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী বিএনপি সমর্থক সাংবাদিক জহিরুল ইসলামেরও। তিনি বলেন, প্রচারণার শুরুতে আমার কিছু পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়া হয় প্রকাশ্যে। এরপরও নানাভাবে আমাকে চাপে রাখার চেষ্টা করলেও আমি প্রচারণা চালিয়ে গেছি। কিন্তু ভোটাররা আমাকে প্রশ্ন করছেন যে তারা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন কিনা? যদি ভোটাররা কোন বাধা ছাড়া ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেন তবে নির্বাচনে যিনিই জিতবেন আমরা মেনে নেব

এদিকে অপপ্রচার বিএনপির পুরোনো বদভ্যাস বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম। তিনি বলেন, নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এসব দেখে পরাজয়ের ভয়ে আগে ভাগেই মিথ্যা অপবাদ দিতে শুরু করেছেন বিএনপি ও নাগরিক কমিটির প্রার্থী। আসলে এটি তাদের কৌশলমাত্র।

আইন শৃঙ্খলা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। ২নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হারুন-অর-রশিদ বলেন, কতিপয় প্রার্থী জনপ্রিয়তার উপর ভরসা না করে সন্ত্রাসী-ডাকাত দিয়ে ভোটারদের ভয় দেখিয়ে জয় লাভের উদ্দেশ্যে কাজ করছে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী এখনো শক্ত থেকে নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রেখেছে।

৮নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সাংবাদিক নাছির উদ্দিন অনিক, শিবপুরের প্রার্থী জুলফিকার আলী মাসুদ শামীমসহ অন্যরাও নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে তাদেরকে ধন্যবাদ জানান।

এদিকে নির্বাচনে পুরোপুরি নিরপেক্ষ পরিবেশ গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পৌরসভা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ। তিনি বলেন, মিছিল করায় ও স্থায়ী পোস্টার দেওয়ায় আমরা নৌকার প্রার্থীকেও জরিমানা করেছি। বিএনপির সকল প্রার্থী কোন বাধা বিপত্তি ছাড়া প্রচারণা করছেন।

নির্বাচন অফিসার ও সীতাকু- উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, এবারের নির্বাচনে প্রত্যেক ভোটার যেন বিনা বাধায় ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন সে লক্ষ্যে আমাদের একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৯জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ দায়িত্ব পালন করবেন পুলিশ-বিজিবি-র‌্যাব-আনসারসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ৭’শ সদস্য।

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট