চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নিখোঁজের চার বছর পর যুবকের কঙ্কাল উদ্ধার

নিখোঁজের চার বছর পর যুবকের কঙ্কাল উদ্ধার

সীতাকুণ্ড সংবাদদাতা

১২ ডিসেম্বর, ২০২০ | ৮:৩৪ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের একটি কঙ্কাল উদ্ধার করেছে ‍পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ২০১৬ সালে দায়েরকৃত একটি মামলার সূত্রে শনিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার কুমিরার পাহাড় থেকে কঙ্কালটি উদ্ধার করা হয়। সিআইডি’র ধারণা, কঙ্কালটি ওই সময় নিখোঁজ যুবক সালাউদ্দিনের (৩৫)। তবে ডিএনএ টেস্টের ফলাফল না পাওয়া পর্যন্ত কঙ্কালটি সালাউদ্দিনের কিনা তা সর্ম্পকে তারা নিশ্চিত নন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দীঘিরপাড়া এলাকার মো. সালাউদ্দিন ২০১৬ সালের ১২ জুন নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী হাসিনা বাদি হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ মামলাটি দুই বছর তদন্ত করেও কোন সমাধান করতে না পারায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার এটি সিআইডিতে স্থানান্তর করে। পরে ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট সিআইডি এ মামলার তদন্ত শুরু করে। এ সময় মামলার সন্দেহভাজন আসামি একই এলাকার মো. আলমগীরকে (৩৩) গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠালেও আদালত থেকে জামিন পেয়েই সে লাপাত্তা হয়ে যায়। কিন্তু সিআইডি তদন্ত অব্যাহত রাখে। তদন্তে জানা যায়, নিহত সালাউদ্দিনের চাচা মুছা কুমিরার পাহাড়ের পাদদেশে চাষাবাদের সময় একটি মাথার খুলি দেখেছিলেন। এই খুলি সালাউদ্দিনের ধারণা করে তারা পারিবারিক কবরস্থান হাম্মাদিয়া মসজিদ প্রাঙ্গনে দাফন করেন। সিআইডি এ বিষয়ে চাচার সাথে কথা বলতে চেয়েও তিনি বিদেশ চলে যাওয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে ৩ ডিসেম্বর মুছা বিদেশ থেকে দেশে আসেন।

এদিকে, শনিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে গোপন সূত্রে আসামি আলমগীরের অবস্থান জানতে পেরে তাকে গ্রেপ্তার করেন সিআইডি। শেষে তদন্তের অংশ হিসেবে মাথার খুলি কুড়িয়ে পাওয়া মুছা ও আলমগীরকে নিয়ে সিআইডি’র ইন্সপেক্টর শরীফ যেখানে খুলি পেয়েছিল সেখানে অভিযান চালিয়ে মাটি খুঁড়লে মাটির নিচ থেকে একটি কঙ্কাল পাওয়া যায়।

মামলার তদন্তকারী অফিসার সিআইডি চট্টগ্রামের ইন্সপেক্টর মো. শরীফ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, তদন্তে জানা যায়, আসামি আলমগীর ও সালাউদ্দিনের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল। একবার আলমগীর জেলে যায়। এ সময় তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে সালাউদ্দিন পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। আলমগীর জেল থেকে বের হয়ে পরকীয়ার কথা জানতে পারলে সালাউদ্দিনের সাথে তার দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এর কয়েকদিন পরেই সালাউদ্দিন নিখোঁজ হয়ে যায়। এরপর তার স্ত্রী হাসিনা বাদি হয়ে প্রথমে জিডি ও পরে মামলা দায়ের করেন। মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে আলমগীরকে আসামি করা হয়। তদন্তে নেমে সিআইডি জানতে পারেন ঘটনার নিখোঁজের আগের দিন সালাউদ্দিনের সাথে আলমগীর দফায় দফায় দীর্ঘ সময় কথা বলেন। ফলে তাকে সন্দেহ করা হয়।

শরীফ আরো বলেন, আলমগীর একজন কুখ্যাত অপরাধী। এর আগেও একাধিকবার খুন-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ঘটনায় সে আগেও জেল খেটেছে। ফলে সহজে মুখ খুলছে না। শনিবার গ্রেপ্তারের পরও সে মুখ খোলেনি। তবে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করতে চেষ্টা করছি। শনিবার আমরা প্রথম খুলিটির সূত্র ধরেই ওই স্থানে গিয়ে প্রবাসী মুছা ও আলমগীরকে নিয়ে অভিযান করি। মাটি খুঁড়ে কঙ্কাল পাওয়া গেলেও এটি আসলেই সালাউদ্দিনের কিনা তা জানতে ডিএনএ টেস্ট করা হবে।

কঙ্কাল উদ্ধারের সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুল ইসলাম ও কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোর্শেদুল আলম চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 

পূর্বকোণ/সৌমিত্র-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট