চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

গতি ফিরেছে ৬৮৪ ফ্ল্যাট নির্মাণে

ইমাম হোসাইন রাজু 

৮ নভেম্বর, ২০২০ | ২:১৯ অপরাহ্ণ

করোনার ধাক্কায় কিছুটা স্থবির থাকলেও তা কাটিয়ে পুরোদমে শুরু হয়েছে আগ্রাবাদের সিজিএস কলোনির ৬৮৪ ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ। ইতোমধ্যে ২৫ শতাংশেরও বেশি কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ।

যদিও গেল সাত মাস ধরে করোনায় বন্ধ ছিল প্রায় চার’শ কোটি টাকায় নির্মাণাধীন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের জন্য ২০ তলা বিশিষ্ট ৯টি ভবন। তবে চলমান কাজ একই গতিতে সামনের দিনগুলোতে করা গেলে আগামী জুন মাসের মধ্যেই সমাপ্ত করতে পারবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। 

তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সালের শুরু থেকে আগ্রাবাদের সিজিএস কলোনিতে থাকা ১১ টি ভবনের স্থলে ৯ টি বহুতল আবাসিক ভবনে ৬৮৪ টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। ৩৯৫ কোটি ৪৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯২৭ টাকা ৮৩ পয়সা মূল্যে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য নির্মিত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। চুক্তি অনুযায়ী এ প্রকল্পের কাজ ২০২১ সালে শেষ হওয়ার কথা।

কিন্তু করোনার মহামারী শুরু হওয়ার পর চলতি বছরের ১৫ মার্চ থেকে বন্ধ করা হয়ে যায় নির্মাণ কাজ। এতে করে সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা নিয়েও শুরু হয় শঙ্কা। তবে দীর্ঘ সাত মাস কাজ বন্ধ থাকার পর অক্টোবর থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করা হয়েছে। এতদিন কাজ বন্ধ থাকলেও সঠিক সময়ের মধ্যেই তা সম্পন্ন করতে চায় বলে জানিয়েছেন গণপূর্ত বিভাগ। এজন্য পূর্বের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি শ্রমিক দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনেও দেখা যায়, ইতোমধ্যে নয়টি ভবনের প্রায় ৫ থেকে ৬ তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে থাকা চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগ-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আশিফ ইমরোজ পূর্বকোণকে বলেন, ‘করোনার হানা সিজিএস’র নির্মাণাধীন ৬৮৪ ফ্ল্যাটেও লেগেছে। এখানে যে সকল শ্রমিক কাজ করতো, তাদের বেশিরভাগই উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা। দেশে করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে তারা গ্রামেই ফিরে যান। যার কারণে বন্ধ হয়ে যায় নির্মাণ কাজও। তবে অক্টোবর থেকে পুরোদমে কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এখন যে গতিতে চলছে, এমন চলতে থাকলে আগামী জুন মাসের মধ্যেই মূলকাজ শেষ করা সম্ভব হবে।’

এর আগে ২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের আগ্রাবাদস্থ সিজিএস কলোনিতে ৯টি বহুতল ভবনে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য ৬৮৪ ফ্ল্যাট নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। ৯টি পৃথক ভবনের ২০ তলা বিশিষ্ট এসব ভবনের মধ্যে ৬০৫ বর্গফুটের ১৫২টি ফ্ল্যাট, ৮৫০ বর্গফুটের ৩০৪টি ফ্ল্যাট এবং ১ হাজার বর্গফুটের ২২৮টি ফ্ল্যাট রয়েছে। যাতে দুই, তিন এবং চার নম্বর প্যাকেজে কাজ করছে চারটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

এরমধ্যে দুই নম্বর প্যাকেজটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জিকেভি এবং ফ্রেন্ডস ইন্টারন্যাশনাল (জেবি) সাথে চুক্তি হয় ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি। যাতে ৮৫০ বর্গফুটের একটি ও ৬৫০ বর্গফুটের দুটি ভবন রয়েছে। এরমধ্যে ৬৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে ১৫২টি। বাকি ৭৬টি ৮৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট। যাতে ১১০ কোটি ৮৩ লাখ ২৩ হাজার ৩৯৫ টাকা ৫৭ পয়সা চুক্তি করা হয়।

চুক্তি অনুযায়ী ডব্লিও-২ নামে প্যাকেজটির কাজ আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে শেষ হবে। তিন নম্বর প্যাকেজটি এম জামাল এন্ড কোম্পানির সাথে ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর চুক্তি করা হয়। এতে ৮৫০ বর্গফুটের তিনটি ২০ তলা বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট রয়েছে ২২৮টি। ১২৪ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৭২০ টাকায় চুক্তি করা হয় প্রতিষ্ঠানটির সাথে।

চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বরেই কাজ শেষ হওয়ার কথা। আর প্যাকেজ-৪ এ ১ হাজার বর্গফুটের ২২৮ টি ফ্ল্যাটের তিনটি পৃথক ভবন স্থাপন করা হবে। ভবন স্থাপনের চুক্তি করা হয় জিকেবিপিএল এবং রয়েল এসোসিয়েটের সাথে। ২০১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বর এ চুক্তি করা হয়। যা চলতি বছরের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ভবন নির্মাণে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬০ কোটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৮১২ টাকা ২৬ পয়সা।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট