নগরীর চান্দগাঁও থানার সিএন্ডবি এলাকায় সৎ বাবা নিজে তার ৫ বছর বয়সী শিশু পুত্র সায়েমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। আজ রবিবার পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক ওই সন্তানের সৎ বাবা মো. নয়ন ঘটনা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন চান্দগাঁও থানার ওসি আতাউর রহমান খন্দকার।

ওসি জানান, গত ২৭ অক্টোবর সায়েমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ফেলে আত্মগোপনে চলে যায় ওই শিশু সন্তানের সৎ বাবা বাস হেলপার নয়ন। ওইদিন দুপুরে অজ্ঞাত পরিচয় শিশুর মরদেহটি উদ্ধার করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। পরে পুলিশ বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে আনজুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে মরদেহটি দাফন করে। একই দিন রাতে শিশু সায়েমকে অনেক জায়গায় খোঁজাখুজি করে না পেয়ে চান্দগাঁও থানায় পুলিশের দ্বারস্থ হন মা তানিয়া। তারপর গত ৩০ অক্টোবর বাস হেলপার নয়ন বাসায় ফিরলে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। টানা দু’দিনের জিজ্ঞাসাবাদেও মুখ খুলেনি সৎ বাবা নয়ন। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে সে একেক সময় একেক রকম তথ্য দিলেও শেষ পর্যন্ত গত ৩১ অক্টোবর রাতে পুলিশকে সঠিক তথ্য জানান সেই সৎ বাবা।

তবে এর আগে ভুল তথ্য দিয়ে ৩০ অক্টোবর পুলিশকে নাজেহাল করে ওই সৎ বাবা। সেদিন পুলিশকে তিনি জানান, বোয়ালখালীর কানুনগোপাড়ায় এক বন্ধুর ২০ হাজার টাকার দেনা শোধ করতে সৎ শিশু পুত্র সায়েমকে বিক্রি করে দেয় সে। কিন্তু ওই ভুল তথ্যের কারণে পুলিশ রাতেই তাকে নিয়ে বোয়ালখালী পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়। সেদিন হদিস মেলেনি নিখোঁজ সায়েমের।

পরে গত ১ নভেম্বর আবার জিজ্ঞাসাবাদে বাস হেলপার নয়ন সঠিক তথ্য দিয়ে জানিয়েছে, সে সৎ তার শিশুপুত্র সায়েমকে ‘হিংসা প্রবণ’ হয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর চট্টগ্রাম মেডিকেলের সামনে লাশ ফেলে যায়।

শিশুটির মা তানিয়া জানান, আগের ঘরের ৪ বছরের শিশু সায়েমসহ তাকে বিয়ে করেন বাস হেলপার নয়ন। থাকতেন নগরীর চান্দগাঁও থানার সিএন্ডবি এলাকার একটি কলোনিতে। পরে নয়নের ঘরে আরও একটি সন্তার হলে ছয়মাস বয়সী ছেলেটিকে নিয়ে আর্থিক টানাপোড়নে পরেন তানিয়া। সংসারে স্বামীকে সাহায্য করতে ৫ বছরের শিশু সায়েমকে বাসায় রেখে ভিক্ষাবৃত্তি করতেন। বাসায় একা রেখে যাওয়া ৫ বছর বয়সী সেই শিশু সন্তান সায়েমকে বাসা থেকে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তানিয়ার দ্বিতীয় স্বামী নয়ন।

পূর্বকোণ / আরআর