চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

চবিতে কর্মচারী নিয়োগসহ অনিয়মের তদন্তে দুদক

অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ১৪২ জন কর্মচারী নিয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ মে, ২০১৯ | ২:৩৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের (চবি) বিরুদ্ধে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ১৪২জন কর্মচারী নিয়োগ এবং ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। ইতিমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের একটি টিম তদন্তে মাঠে কাজ করছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জানা যায়, আগামী ১৫ জুন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। তবে শেষ সময়ে এসে নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
এদিকে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ে এ অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়োগের অনুসন্ধানের জন্য গত ২১ মে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মো. আব্দুল করিম দুই সদস্যের একটি কমিটি করে চিঠি ইস্যু করেন। কমিটির সদস্যরা হলেন দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়,চট্টগ্রাম-২ এর উপ-পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম ও উপ-সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন। চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১৪২ জন কর্মচারী নিয়োগ এবং ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগের অনুসন্ধানের জন্য দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হলো। কমিটি এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক আইন ২০০৪ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭ অনুসরণপূর্বক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুসন্ধান কার্যক্রম সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
এর আগে ৩ ফেব্রুয়ারিতে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক সভায় বিশ^বিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত ও বিভিন্ন অভিযোগের অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনুমোদ পায় সংস্থাটির অনুসন্ধান ও তদন্ত বিভাগ। পরে গত ৮ মে এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ও সমন্বিত জেলা কার্যালয়,চট্টগ্রাম-২ এর উপ-পরিচালক মো. মাহবুবুল আলমকে চিঠি ইস্যু করেন প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত-১) এস এম মাসুদুল হক। ওই চিঠিতে অনুসন্ধানপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়,চট্টগ্রাম-২ এর উপ সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন পূর্বকোণকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগ অভিযোগের ফাইল আমাদের হাতে এসেছে। দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা গ্রহন করতে বলা হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। বিভিন্নভাবে তথ্য-উপাত্তও সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে কমিশনকে প্রতিবেদন পাঠানোর চেষ্টা করবো’।
এদিকে এসব বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের (চবি) উপচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত: গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের ৫১৯ তম সিন্ডিকেট সভায় বিশ^বিদ্যায়ে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর ১৪২জন কর্মচারী নিয়োগ চুড়ান্ত হয়। তবে এ বিষয়ে গনমাধ্যমে সিন্ডিকেট সভার সদস্যরা জানান এ বিষয়ে সভায় কোন নাম উপস্থাপন করা হয়নি। তাদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেয় বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রভাবশালী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের আত্মীয়স্বজনের পাশাপাশি বিশ^বিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত ও অস্ত্রধারীদের নিয়োগ দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে।
এবিষয়ে উপচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেছেন, বোর্ড যেসব নাম সুপারিশ করেছেন তাদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পরে তা সিন্ডিকেট অনুমোদন করেন। যদিও সিন্ডিকেটে নামগুলো প্রকাশ না করার বিষয়ে তিনি বলেন, কিছু জটিলতার কারণে নামগুলো প্রকাশ করা হয়নি।
প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর ২০১৫ সালের ১৫ জুন চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আগামী ১৫ জনু এ দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট