চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জৈষ্ঠ্যের খরতাপে হাঁসফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ মে, ২০১৯ | ২:৫৫ পূর্বাহ্ণ

জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরুতেই তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে জনজীবন। আবহাওয়া অফিস থেকে চট্টগ্রামে বয়ে চলা তাপপ্রবাহকে মৃদু বলা হলেও গরম অনুভব হচ্ছে অনেক বেশি। যেন প্রকৃতির বুকে আগুন ঢালছে সূর্য। হঠাৎ হঠাৎ মেঘে ঢাকা পড়লেও তাপপ্রবাহের কোন পরিবর্তন নেই। আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হচ্ছে এ মাসের মধ্যে তাপমাত্রা কমার কোন সম্ভাবনা নেই। বরং তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের সর্বোচ্চ তাপমাত্র ছিল ৩৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ২৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন মঙ্গলবার চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ম তাপামাত্রা ছিল ২৭.৬ সেলসিয়াস। এছাড়াও গত এক সপ্তাহের আবহাওয়ায় চট্টগ্রামের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪.৪ থেকে ৩৫.০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা ছিল। এতেই বুঝা যায়, তাপমাত্রা অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে, সূর্যের প্রচন্ড উত্তাপে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। রোদের তেজে ঘর থেকে বের হচ্ছে না অনেকেই। আবার অতি গরমে তীব্র যানজটে আরও দুর্ভোগ বেড়েছে। প্রখর রোদ আর তাপমাত্রার কারণে দিনের বেলায় দুর্বিসহ হয়ে ওঠেছে নগরীর কর্মজীবী মানুষের জীবন।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, প্রাক্ বর্ষায় বৃষ্টি কম হলে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। দেশের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টিপাত মোটামুটি হচ্ছে। কিন্তু দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম। তাই গরম বেশি পড়ছে। তবে মে মাসের শেষ দিকে সাগরে একটি নি¤œচাপ হতে পারে, ওই নি¤œচাপ থেকে যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে তাপমাত্রা কমবে বলে জানান, চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস।
এদিকে, আবহাওয়ার এই তারতম্যের কারণে নগরীর প্রতিটি ঘরেই শিশু থেকে বয়স্ক পর্যন্ত সকলেই জ¦র, সর্দিকাশিসহ ভাইরাস জনিত রোগজীবাণু বাসা বাঁধছে। গরমের কারণে ভাইরাসজনিত এসব রোগে আক্রান্ত বেশি হচ্ছে শিশুরা। এছাড়া ডায়রিয়াতো আছেই। এমন গরমে বাইরের খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সর্তক থাকার পরামর্শ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু বিভাগের শিশু মেডিসিন ও সার্জারি ওয়ার্ডেই প্রায় সাড়ে চার’শ শিশু ভর্তি রয়েছেন। তারমধ্যে বেশিরভাগ শিশুই জ¦র, সর্দিকাশি, ব্রঙ্কিওলাইটিস, ডায়রিয়াসহ ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত বলে জানান চিকিৎসক।
অন্যদিকে, ঈদের আগে তাপমাত্রা কমে না আসলে ঈদে লোকসান গুনতে হবে বলে আশংক্সক্ষা ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীরা জানান, গরমের কারণে দিনের বেলায় মার্কেটগুলোতে ক্রেতারা আসতে চায়না। যার কারণে ঈদের বেচা-কেনাও কম হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এবারের ঈদে লোকশানে পড়তে হবে। তবে ইফতারের পর থেকে ক্রেতাদের আনাগোনা কিছুটা বেড়ে যায় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা উজ্জল কান্তি পাল পূর্বকোণকে বলেন, ‘বর্ষা না আসা পর্যন্ত খরতাপের এমন দাপট অব্যাহত থাকবে। তবে চট্টগ্রামের কোথাও কোথাও ঝড় বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি হলে তাপপ্রবাহ কমে আসবে। জুনের প্রথম দিকে মৌসুমি বায়ু নিয়ে বর্ষার আগমন ঘটতে পারে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সগরে একটি নি¤œচাপ আছে, নি¤œচাপটি সৃষ্টি হলে আগামী মাসের শুরুতেই বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন তাপমাত্রা কমে আসবে’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট