চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পর্দা উঠল প্রাণের বই মেলার

বই মেলা উদ্বোধনে তথ্যমন্ত্রী বিদেশিদের কাছে নালিশ করে জাতিকে খাটো করবেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৭:০৫ পূর্বাহ্ণ

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, বিএনপি’র নেতিবাচক রাজনীতি না থাকলে গত ১১ বছরে আমাদের দেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যেতে পারতো। বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে নালিশ করে দেশ ও জাতিকে খাটো না করার জন্য বিএনপির প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। গতকাল (সোমবার) বিকালে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম চত্বরে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনকালে মন্ত্রী এ অনুরোধ জানান।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) আয়োজিত সম্মিলিত এ বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বইমেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। বইমেলা মঞ্চে দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী ও মেয়র।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, গতকাল দেখলাম বিএনপির পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি বিদেশি রাষ্ট্রদূত-কূটনীতিকদের সঙ্গে বসে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে তাদের কাছে নালিশ করেছে। ভোট দিলো বাংলাদেশের মানুষ। ভোট হলো ঢাকা শহরে। যদি কোনো নালিশ থাকে তাহলে ঢাকা শহরের ভোটারদের কাছে, বাংলাদেশের মানুষের কাছে নালিশ দিতে হবে। কথায় কথায় বিদেশিদের কাছে এই যে ধর্ণা দেয়া, এতে দেশ এবং জাতিকে অপমান করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপিকে আমি অনুরোধ জানাবো, আপনাদের যদি কোনো নালিশ থাকে সেটি জনগণের কাছে উপস্থাপন করুন, নালিশ থাকলে নির্বাচন কমিশনে উপস্থাপন করুন। প্রয়োজনে আদালতে যান। দয়া করে বিদেশিদের কাছে আমাদের ঘরের বিষয় নিয়ে নানা ধরনের নালিশ করে দেশ ও জাতিকে বিদেশিদের কাছে খাটো করবেন না।

সভাপতির বক্তব্যে মেয়র আ জ ম নাছির বলেন, বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে ৭০ লাখের বেশি মানুষ। বইমেলার অভাব ছিলো। বিক্ষিপ্ত বইমেলা হতো। চসিক সম্মিলিত বইমেলার আয়োজন করেছে। যান্ত্রিকতার যুগ চলছে। মঙ্গলে মনুষ্যবিহীন যান পাঠাচ্ছে। সামনে রোবট পাঠাবে। প্রযুক্তির উৎকর্ষের পাশাপাশি মানুষ যন্ত্রে রূপান্তরিত হচ্ছে। আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। মানুষ যাতে মানুষ থাকে, মানবিক গুণাবলি অক্ষুণœ সে জন্য বইয়ের বিকল্প নেই। অনেক অভিভাবক বই না দিয়ে সন্তানকে স্মার্ট ফোন দেন। স্মার্ট ফ্যামিলি দেখানোর জন্য ১২ বছরের সন্তানের হাতেও স্মার্ট ফোন তুলে দিচ্ছে। আজকের পৃথিবীর বাস্তবতায় মানবিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই।
স্বাগত বক্তব্যে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামশুদ্দোহা বলেন, গত বছরের চেয়ে কলেবর বেড়েছে এবারের বইমেলার। আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান জিমনেসিয়ামে নিয়ে আসা হয়েছে। ৬০টি স্টল বেড়েছে।

বইমেলার যুগ্ম আহ্বায়ক, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি শাহ আলম নিপু বলেন, আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। কারণ মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর নামে এ বইমেলা উৎসর্গ করা হয়েছে।
কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক বলেন, এ মেলা চট্টগ্রামবাসীর বইয়ের ক্ষুধা মেটাবে। মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র তৈরিতে বইমেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ধন্যবাদ বক্তব্য দেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, চসিকের সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, আবিদা আজাদ প্রমুখ। মন্ত্রীকে ফুল ও সম্মাননা স্মারক দিয়ে বরণ করেন মেয়র।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামশুদ্দোহা, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি শাহ আলম নিপু, সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, হাসান মুরাদ বিপ্লব, চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া প্রমুখ।

মেলায় বাতিঘর, বলাকা, বাতিঘর প্রকাশনী, আবির প্রকাশন, কালধারা, প্রজ্ঞালোক, শৈলী প্রকাশন, অনুপম, কাকলী, জ্ঞানকোষ, গলুই, শালিক, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, বিশ্বসাহিত্য ভবন, একাত্তর প্রকাশনী, গাজী, হাওলাদার, শব্দশিল্প, সময়, সৃজনী, আদর্শ, ইত্যাদি, চারুলিপি, রাতুল, চর্চা, গ্রন্থপ্রকাশ, সাদার্ন ইউনিভার্সিটি প্রেস, সপ্তডিঙা, এশিয়া পাবলিকেশনস, পাঞ্জেরি পাবলিকেশন্স, বার্ড কম্প্রিন্ট এন্ড পাবলিকেশন, তা¤্রলিপি, প্রতীক, পুঁথিনিলয়, প্রথমা, নালন্দা, ইউনিভার্সেল একাডেমি, চিলড্র্রন্স পাবলিকেশন, কিডস পাবলিকেশন, রঙ পেন্সিল, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, নন্দন বইঘর, আপন আলো, মম প্রকাশ, শিশু প্রকাশ, আদিগন্ত, রাদিয়া, প্রসিদ্ধ, সালফি, শিখা, অনন্যা, পঙ্খিরাজ, সাহিত্য বিচিত্রা, কথা বিচিত্রা, আলোকধারা, নলেজ মিডিয়া, মুক্তদেশ, জ্যোৎস্না, মূর্ধণ্য, চন্দ্রবিন্দু, রোদেলা, বঙ্গবন্ধু গবেষণা কেন্দ্র, বিজ্ঞান একাডেমি, ঝিনুক, পার্ল, কালিকলম, সুচয়নী, শামীম পাবলিশার্স, বঙ্গজ, শোভাপ্রকাশ, হরিৎপত্র, সাহিত্য বিকাশ, দাঁড়িকমা, কথন, বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি, পেন্সিলসহ ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২০৫টি স্টল রয়েছে।
মেলায় রয়েছে এক টাকায় আহার, লিটলম্যাগ কর্নার, নিষ্পাপ অটিজম ফাউন্ডেশন, চসিকের জরুরি মেডিকেল টিমসহ বেশ কিছু বিশেষায়িত স্টল এবং ফ্রি ওয়াইফাইসহ সেলফি কর্নার।
২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বইমেলা চলবে। ছুটির দিন বইমেলা শুরু হবে সকাল ১০টায়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট