চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ১:৪১ পূর্বাহ্ণ

ঁ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই
ঁ ল্যাবের টেকনিশিয়ান নেই
ঁ দীর্ঘদিন বিভিন্ন পদশূন্য
ঁ প্রায় যন্ত্রপাতি অকেজো

রোগী আছে কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই, এম্বুলেন্স আছে, চালক নেই, ল্যাব আছে টেকনিশিয়ান নেই, অনেক পদ আছে কিন্তু সেগুলো পূরণের জন্য পর্যাপ্ত ডাক্তার নেই। যন্ত্র আছে তবে দীর্ঘদিন থেকেই নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এভাবে শুধু নেই আর নেই নিয়ে কোন রকম খুঁড়িয়ে চলছে চট্টগ্রামের উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সগুলো। যার কারণে চরম অবহেলা আর অব্যবস্থাপনার শিকার হতে হয় রোগীদের। চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি আর ওষুধের স্বল্পতায় বরাবরই ব্যাহত হচ্ছে প্রান্তিক এসব এলাকার চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম।
প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে সরকারের সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তা ব্যাহত হচ্ছে প্রতিটি পদে পদে। উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স, উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলো লোকবল সংকটের মধ্য দিয়ে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে জোড়াতালি দিয়ে। অন্যদিকে, রয়েছে নানান রকম অব্যবস্থাপনাও। সব হাসপাতালের চিত্রই যেন একই।
নিজস্ব প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে এসব চিত্র ফুটে উঠেছে।
সীতাকু- : ডাক্তারদের আন্তরিকতা থাকলেও শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতির অভাবে পর্যাপ্ত সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন সীতাকু- স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২০ জন চিকিৎসকের স্থানে আছেন মাত্র ৯ জন। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ছাড়া নেই কোন চিকিৎসক। পরীক্ষার জন্য একটি ল্যাব থাকলেও টেকনিশিয়ান নেই। একমাত্র এক্স-রে মেশিনটিও অকেজো। দীর্ঘদিন ধরে অকেজো পড়ে রয়েছে জেনারেটরটিও। নেই উপযুক্ত অপারেশন থিয়েটার। এতে গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসার জন্য এসে হতাশা হয়ে প্রতিদিন ফিরে যাচ্ছেন অসংখ্য রোগী। পাঁচ লাখ মানুষের সেবার জন্য একমাত্র সরকারি এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকলেও স্বাভাবিক রোগ ব্যাধির চিকিৎসা নিতে এসেও প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছে না।
মিরসরাই : সংকটের চিত্র রয়েছে মিরসরাইতেও। তবুও কোনমতে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা। ২১ জন চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছে ১৪ জন। মাত্র দুজন উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও দুটি পদই শূন্য। সংকট রয়েছে সেবিকা, নিরাপত্তা প্রহরী, আয়া ও সুইপার পদেও। দন্তচিকিৎসক থাকলেও নেই চিকিৎসা সরঞ্জাম। কয়েক বছর ধরে নষ্ট এক্সরে মেশিনটি। গাইনি বিভাগের আল্ট্রাসনোগ্রাফি যন্ত্র থাকলেও অপারেটর না থাকায় এটি কোন কাজেই আসছে না। মা ও শিশু স্বাস্থ্য, নিরাপদ সাধারণ ডেলিভারি ও সাধারণ রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে রয়েছে মোট ১৩টি পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে। তবে অধিকাংশ পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র চলছে পরিত্যক্ত ও অনুপযোগী ভবনে।
সন্দ্বীপ : জলরাশিবেষ্টিত মূল ভূখ- থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপেরও অন্যতম প্রধান সমস্যা স্বাস্থ্যসেবা। এই দ্বীপের মানুষের সেবা পৌঁছাতে সরকারিভাবে ৩১ শয্যার হাসপাতাল থাকলেও সেগুলোতেও চিকিৎসা নেই বললেই চলে। চিকিৎসক সংকট, যন্ত্রপাতি পরিচালনার জন্য জনবলসহ রয়েছে নানা সমস্যা। জরুরি সেবা দেয়ার জন্য দুটি সি-এম্বুল্যান্স থাকলেও চালক ও জ্বালানির ব্যবস্থা না থাকায় তা রোগীদের কোন উপকারেই আসছে না। যদিও এসব বিষয়ে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে দিলেও কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রাঙ্গুনিয়া : ১৪ বছর ধরে রাঙ্গুনিয়া স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের বারান্দায় বাক্সবন্দি পড়ে আছে জীবানুমুক্তকরণ যন্ত্র। বছরের পর বছর যন্ত্রটি হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে থাকায় এটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা। কর্তৃপক্ষ বলছেন, অপারেশন থিয়েটার চালু না থাকায় কোনো কাজে লাগছে না। অবেদনবিদ (এনেসথেসিস্ট) না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে হচ্ছে না অপারেশনও। তাই মেশিনটিও চালু করার প্রয়োজন মনে করছেন না। দন্ত রোগের চিকিসা না হওয়া, এক্স-রে মেশিন নষ্ট। রোগ নিরাময়ের কেন্দ্রটি এখন নিজেই মুমূর্ষু। পরামর্শ ছাড়া কোনো সেবাই নেই এখানে। জটিল কিছু হলে রেফার করা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে । প্রায় ৫ লাখ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতালটিতে চিকিৎসকের প্রবল সংকট রয়েছে।
ফটিকছড়ি : ৬০ বছরের পুরনো ভবনে জোড়াতালি দিয়ে চলছে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা। স্বাধীনতার পূর্বে নির্মিত ভবনটি এখন পুরোপুরিই ঝুঁকিপূর্ণ। যদিও মূল ভবনের পাশে নতুন ৫০ শয্যাবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু জনবল সংকট আর আনুষঙ্গিক সুবিধা না থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। ফটিকছড়ির পাশাপাশি হাটহাজারীর দু-তিনটি ইউনিয়ন এবং মানিকছড়িরসহ প্রতিদিন প্রায় পাঁচশ’ মানুষ এখানে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল আর যন্ত্রপাতির অভাবে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এখানকার সাধারণ মানুষ।
রাউজান : রাউজানের স্বাস্থ্যসেবার কার্যক্রম চলছে অনেকটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। উপজেলা স্বাস্থ্যÑকমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ডাক্তার, কর্মচারী ও নার্সদের রয়েছে প্রকট সংকট। রোগীদের সেবায় ২টি এম্বুলেন্স থাকলেও দীর্ঘদিন থেকেই অকেজো পড়ে আছে। একই সাথে চিকিৎসকদের নিয়মমাপিক উপস্থিতিতে অনেকটাই সেবা পাচ্ছেন না এই জনপদের সাধারণ মানুষ। বহির্বিভাগে প্রচুর রোগী অপেক্ষায় থাকলেও চিকিৎসকদের সাক্ষাত না পেয়েই ফিরতে হয় তাদের। এছাড়া চেম্বারে রোগী দেখা শুরুর পরও ডাক্তাররা চা-নাস্তা এবং বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করেন, রোগীদের বাইরে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় রাখেন বলেও অভিযোগ রোগীদের।
বোয়ালখালী : ১৩৭.২৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বোয়ালখালীর প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষের সেবা কেন্দ্র ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এছাড়া ৬টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ১৬টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও ২৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও কোনো অবস্থাতেই পর্যাপ্ত নয়। তারপরও যা রয়েছে তাতে চরম অবহেলা আর অব্যবস্থাপনার শিকার হতে হয় রোগীদের। চিকিৎসকদের অনুপস্থিত আর ওষুধের স্বল্পতায় বরাবরই ব্যাহত হচ্ছে সেবা কার্যক্রম। একপ্রকার বাধ্য হয়ে শহরে গিয়ে সেবা গ্রহণ করতে হয় অসহায় অসচ্ছল পরিবারকে। একমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহিঃবিভাগের সেবা বলতে নেই কিছুই। একটু বেশি কাটা গেলেই চমেক হাসপাতালে রেফারে সীমাবদ্ধ। এছাড়া ইউনিয়ন ও কমিউনিটি ক্লিনিকে নির্দিষ্ট সময়ে সর্দি-কাশি জাতীয় সেবা ছাড়া বেশি কিছু পাওয়া যায় না।
হাটহাজারী : হাসপাতালের জরায়ুমুখ ও স্তন-পরীক্ষা (ভায়া) সেন্টার ও অপারেশন থিয়েটারের (ওটি) সামনেই দীর্ঘদিন থেকে পড়ে আছে বিভিন্ন ওষুধের কার্টন ও হাসপাতালের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। এসবের ফাঁক গলেই রোগী ও সংশ্লিষ্টদের ভায়া সেন্টার এবং ওটি’র ভেতরে যেতে হয়। হঠাৎ নতুন কেউ এলে বলতে বাকি থাকবে না এটা কি মালের গুদাম নাকি একটি হাসপাতাল। কোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ থাকলেও অপারেশন থিয়েটার ও ভায়া সেন্টারে নিয়মিতই থাকে বন্ধ। অনেকেই চিকিৎসার জন্য এখানে আসলেও সেবাবিহীন ফিরতে হয় তাদের। এ চিত্রই বলে দিচ্ছে কেমন সেবা পাচ্ছেন এখানকার মানুষ। তবুও দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন পাড়ি দেয় রোগীরা। কিন্তু সেবা না নিয়েই চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই। বিশাল ওটি সেকশন থাকলেও অবেদনবিদ ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ না থাকায় প্রায় পুরো মাসই বন্ধ থাকে ওটি কক্ষ। একই অবস্থা রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং কক্ষের। পদ নেই বলেই বন্ধ থাকে সবসময়।
আনোয়ারা : জনবল ও বিশুদ্ধ পানিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত আনোয়ারা হাসপাতাল। এতে কাক্সিক্ষত সেবাও মিলছে না। চিকিৎসা সেবা নিতে হাসপাতালে আসা নিয়মিত রোগীরা নানা অভিযোগের কথা বললেও নেই প্রতিকার। কর্মস্থলে অনেক চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি আর দায়সারা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো যেন নিত্য দিনের ঘটনা। আনোয়ারায় বিভিন্ন শিল্প কারখানা গড়ে ওঠায় রোগীর সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পেলেও সে অনুযায়ী এখন সেবা নিতে সবাইকে ছুটতে হয় শহরেই। ২০০৬ সালে চালু হওয়া একমাত্র অপারেশন কক্ষটিও ডাক্তার ও যন্ত্রপাতির অভাবে এখানো চালু করা যায়নি। দীর্ঘদিন থেকেই নষ্ট হয়ে পড়ে আছে একমাত্র এম্বুলেন্সটিও। চিকিৎসকদের ২১টি পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১১ জন। নার্স, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীসহ অনেক পদই শূন্য রয়েছে।
লোহাগাড়া : অবকাঠামো-সরঞ্জাম সবই আছে। শুধুমাত্র চিকিৎসক ও পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। ১০ জন কনসালটেন্টের মধ্যে আছেন শুধুমাত্র ২ জন। অর্থোপেডিক, মেডিসিন, সার্জারি, কার্ডিওলজি, এনেসথেসিয়া, নাক-কান-গলা, ডেন্টাল সার্জন প্রভৃতি পদ বরাবরই শূন্য। এছাড়া মেডিকেল এসিসটেন্ট, ফার্মাসিস্ট, স্বাস্থ্য সহকারী, স্টোরকিপার, স্বাস্থ্য পরিদর্শকের পদেও রয়েছে জনবল সংকট। যে কারণে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হানিফ জানান, সবসময় চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসলেও শুধুমাত্র চিকিৎসকের অভবেই অনেকটাই হিমশিম খেতে হচ্ছে।
চন্দনাইশ : দুই লাখ জনগোষ্ঠীর সেবা নিশ্চিতে ২০০৭ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখনো পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি চন্দনাইশ স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স। ৩১ শয্যার জনবল ও সরঞ্জাম দিয়েই কোন রকম চলছে সেবা কার্যক্রম। তাছাড়া দীর্ঘদিন থেকেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকায় সেবা থেকে বঞ্চিত এখানকার সাধারণ মানুষ। ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও আজ পর্যন্ত কোন বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের মূলভবনসহ অন্য ভবনগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। তবুও সেবা কোন মতেই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এখানকার চিকিৎসকরা। চন্দনাইশ সদরে ৫০ শয্যা ও দোহাজারীতে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট পৃথক পৃথক দু’টি হাসপাতাল ছাড়াও ২৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ৬টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। সবগুলোর চিত্রই একই।
পটিয়া : ৬ বছর পর ডিজিটাল এক্সরে মেশিন পাওয়া গেলেও পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ বছর ধরে অকেজো পড়ে আছে ডেন্টাল মেশিন। শুধু এই মেশিনটিই নয়, বিভিন্ন সরঞ্জামাদির সংকট থাকায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবগত থাকলেও কোন সুরাহা মেলেনি। সম্প্রতি হাসপাতালে আসা ডিজিটাল এক্সরে মেশিনটি স্থাপন করা হলেও টেকনিশিয়ানের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে সেবা কার্যক্রম। যার জন্য অন্য হাসপাতাল থেকে ধার করে মাঝেমধ্যে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল সহকারী পদ শূন্য থাকায় রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন পিয়ন। এতে করে অনেক বিপদেরও সম্মুখীন হতে হয়। তাছাড়া শয্যা সংকটের কারণে রোগীদের ফ্লোরে রেখেই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। সম্প্রতি ২০ জন চিকিৎসক নিয়োগ পেলেও এখন পর্যন্ত নেই বিশেষজ্ঞ কোন চিকিৎসক। যার জন্য রোগীদের ভরসা করতে হয় শহর কিংবা প্রাইভেট হাসপাতালের প্রতি।
বাঁশখালী : ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও চিকিৎসক সংকটে দিনদিন পিছিয়ে পড়েছে বাঁশখালীর চিকিৎসা ব্যবস্থা। চিকিৎসক থেকে শুরু করে চতুর্মুখী সংকটে সেবা থেকে বঞ্চিত উপকূলীয় এ এলাকার সাধারণ মানুষ। ফলে এখানকার সকলকে বরাবরই তাকিয়ে থাকে শহরের হাসপাতালের দিকে। দীর্ঘদিন থেকে চিকিৎসক সংকটের কারণ থাকলেও সম্প্রতি ১৯ জন ডাক্তার নিয়োগ দিলেও এখনো ইউনিয়ন পর্যায়ে চিকিৎসা সেবা শুরু করেনি। যার ফলে অসহায় দরিদ্র পরিবারের লোকজন সেই চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গড়ে ৩০/৪০ জন রোগী ভর্তি থাকলেও নেই সমপরিমাণ ওষুধ বরাদ্দ। বরাদ্দকৃত ওষুধ স্বল্পতার অজুহাতে শুধুমাত্র ট্যাবলেট ও স্যালাইন বিতরণ করা হয় এমন অভিযোগ রোগীদের। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নেই অপারেশনের কার্যক্রমও।
কর্ণফুলী : যেখানে সাধারণ মানুষ সেবা নিতে যাবে, সেই ভবনেই নেই কর্ণফুলীতে। দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার অধিবাসীর স্বাস্থ্যসেবা পাঁচটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র থাকলেও চিকিৎসকসহ নানান সমস্যায় কাক্সিক্ষত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না কর্ণফুলীবাসী। নতুন করে গঠিত হওয়া এ উপজেলায় এখনো প্রতিষ্ঠিতই হয়নি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। পাঁচ ইউনিয়নে নেই কোন চিকিৎসক। উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার থাকলেও তাদের দেখা পায় না রোগীরা। যা আছে তাতেই স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে না জনসাধারণ।

লেখক ঁ নিজস্ব প্রতিবেদক
|

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট