চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

চমেক হাসপাতাল সীমাবদ্ধতার মাঝেও সেবায় সেরা

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ১:৩৬ পূর্বাহ্ণ

চিকিৎসায় সাফল্যে বৃহত্তর চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষের ভরাসার স্থল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল। যদিও শয্যা ও অপর্যাপ্ত জনবলের পাশাপাশি রয়েছে পাহাড়সম নানান সংকট। এর পরও এই হাসপাতাল এখন মানুষের আস্থার ঠিকানা। যার ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জটিল ও দুরারোগ্য নানান সমস্যায় আক্রান্ত রোগীরা ছুটে আসেন সরকারি এই হাসপাতালে। শুধু চট্টগ্রামই নয়, অন্য জেলা থেকেও রোগীরা সেবা নিতে প্রতিদিন ভিড় করছেন চমেক হাসপাতালে। তবে সকল সমস্যা সমাধানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের রয়েছে বড় পরিকল্পনাও। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সেবার মান আরও বৃদ্ধি পাবে।
পূর্বকোণের সাথে একান্ত আলাপকালে এমনটিই জানালেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসেন উদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী বাড়ছে এখানে। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে এই হাসপাতালে সেবা নেওয়ার সংখ্যাও বেড়েছে অনেক। তারমধ্যে ২০১৮ সালে চমেক হাসপাতালে সেবা নিয়েছেন ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৩ জন রোগী। কিন্তু ২০১৯ সালে সেবা নিয়েছেন ১৪ লাখ ২১ হাজার ২৩৫ জন। এই পরিসংখ্যানেই বলে দেয় সেবাখাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল অনেকদূর এগিয়েছে। যদিও অনেকগুলো সমস্যা এখনো বিদ্যমান। তবে সেগুলোও সমাধানের পথ খুঁজছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এর বাইরে নতুন নতুন চিন্তা ভাবনাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল পরিচালক। এরমধ্যে শয্যাবাড়ানো, জনবল কাঠামো উন্নীতকরণ, আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন ও নতুন নতুন বিভাগ চালুসহ নানান সেবা কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ রয়েছে।
আগের চেয়ে সেবার পরিমাণ অনেক বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে আগে যে পরিমাণ দালাল ছিল তা নেই। বর্তমানে দালালমুক্ত করা হয়েছে। অনেকগুলো যন্ত্রাংশ না থাকলেও এখন নতুন নতুন অনেক যন্ত্রাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগের চেয়ে চেষ্টা করছি, যেন সেবায় কোন ঘাটতি না থাকে, যার ফলও আমারা পেয়েছি। আমাদের অনেক সংকট রয়েছে, তবুও সেবার ক্ষেত্রে কোন ক্রটি নেই বললেই চলে।
বড় বাধা জনবল সমস্যা : ১৯৬০ সালে মাত্র ১২০ শয্যা ও অল্প কিছু রোগী নিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করে এ হাসপাতাল। পরবর্তীতে চারধাপে এর উন্নয়ন হয়। প্রথমবার ১৯৬৯ সালে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট, দ্বিতীয়বার ১৯৯৬ সালে ৭৫০ শয্যা, এরপর ২০০১ সালে ১০১০ শয্যায় উন্নিত করা হয়। সর্বশেষ ২০১৩ সালে ১৩১৩ শয্যার হাসপাতালে রূপান্তরের জন্য প্রশাসনিক বিভাগ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পায়। তবে শয্যা বাড়লেও বাড়েনি জনবল। তখন থেকেই মাত্র ৫০০ শয্যার জনবল দিয়েই চলছে হাসপাতালটি। কিন্তু দীর্ঘ সাত বছর কেটে গেলেও এখন পর্যন্ত এই জনবল বাড়েনি। যদিও জনবল বাড়ানো জন্য একাধিকবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে চিঠি চালাচালি হয়েছে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগেও এ বিষয়ে একাধিক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু জনবল বাড়েনি।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক বলেন, পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় নিয়মিতই সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। যেখানে ১০ থেকে ১৫ জন জনবল দরকার, সেখানে দিতে পারছি মাত্র ২ বা ১ জনকে। কিন্তু তাদের দিয়েতো আর ২৪ ঘণ্টা কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। জনবল না থাকায় আমাদের কাজে অনেক ব্যঘাত হচ্ছে।
জনবল সমস্যা উত্তরণ শীঘ্রই : দীর্ঘদিন থেকে পাঁচশ শয্যার জনবল বৃদ্ধমান থাকলেও শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধান হবে বলে আশাবাদ চমেক হাসপাতালের পরিচালকের। তিনি বলেন, জনবল সমস্যা সমাধানে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। সর্বশেষ ১৩১৩ শয্যার জনবল কাঠামো চেয়ে একটি প্রতিবেদন চেয়েছে মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনটি সম্প্রতি মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। তা বর্তমানে বিবেচনায় আছে। আশা করছি কিছুটা হলেও সমাধান হবে। তবে কবে পাওয়া যাবে তা জানা সম্ভব না হলেও মন্ত্রণালয় বলছে শীঘ্রই বাস্তবায়িত হবে। আশা করতে পারি আগামী বছরেই জনবল সংকট কিছুটা লাঘব হবে। মনে রাখতে হবে জনবল নিয়োগ একটা দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। কারণ, এটার সাথে অর্থেরও একটা সম্পর্ক রয়েছে। তাছাড়া একটা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হলে অনেকগুলো বিষয়ে যাচাই-বাচাইয়ের বিষয় রয়েছে। সে পর্যন্ত অন্তত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
নতুন পরিকল্পনা: স্বাস্থ্যসেবা খাতে উন্নত করা সরকারের বড় একটি পরিকল্পনা রয়েছে। তার জন্য জনবলের নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন। তারমধ্যে চমেক হাসপাতালেও অনেকগুলো পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, ১৩১৩ শয্যার বিপরীতে প্রায় তিন থেকে চারগুণ রোগী সবসময় ভর্তি থাকেন। হাসপাতালের বিদ্যমান শয্যা সংখ্যার সাথে নতুন করে ৬৮৭ শয্যা যোগ হয়ে তা ২ হাজারে উন্নীতর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সম্প্রতি মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রতিনিধি দল এসে পরিদর্শন করেছেন। একই সাথে জায়গার পরিমাপসহ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন তারা। নতুন করে যোগ হওয়া এসব শয্যা মেডিকেল কলেজের পুুরাতন ভবনের স্থানে ১৪তলা বিশিষ্ট আধুনিক বিল্ডিংয়ে স্থাপন করা হবে। এছাড়া একশ’ শয্যার ক্যান্সার ওয়ার্ড করার পরিকল্পনা রয়েছে। যার বিষয়ে ইতোপূর্বে পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। তবে সেটিও খুব দ্রুত সময়ে কাজ শুরু হবে। এর বাইরে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ সেবা কার্যক্রম চালু করা হবে। যেখানে হাসপাতালের নিচ তলায় জরুরি রোগীরা খুব দ্রুত সময়ে তাদের সেবা নিতে পারবেন। এসব ছাড়াও আরও একাধিক পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, বর্তমান হাসপাতালে যে পরিমাণ যন্ত্রপাতি আছে, তার সাথে সামঞ্জস্ব রেখে আধুনিকমানের আরও বেশি যন্ত্রপাতি ক্রয় করার চিন্তা রয়েছে। যে সকল যন্ত্রপাতি আমাদের রয়েছে, তারমধ্যে অনেকগুলো পরীক্ষা হলেও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাইরে গিয়ে করাতে হচ্ছে। তবে নতুন যে সকল যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হবে, তা স্থাপন করতে পারলেও কাউকেই আর বাইরে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে না। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে একটি পর্যাবেক্ষণ করা হচ্ছে। যেখানে যেসকল পরীক্ষার-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতির প্রয়োজন আছে, তা শীঘ্রই স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি হাসপাতালের আইসিইউ সম্প্রসারণের কাজ চলছে। হাসপাতালে যে পরিমাণ আইসিইউ শয্যার প্রয়োজন রয়েছে, তা নেই। বর্তমানে হাসপাতালের আইসিউতে ১৪শয্যা রয়েছে। এখন তা ১৮শয্যায় উন্নীত করা হবে। পাশাপাশি এ বিভাগে আরও যন্ত্রাংশের প্রয়োজন আছে। তাও ব্যবস্থা করার চিন্তাভাবনা রয়েছেন।

সবসময় চাপের মধ্যে থাকতে হয় চমেক হাসপাতালকে : ১৩১৩শয্যার বিপরীতে প্রায় তিন থেকে চারগুণ রোগী সবসময় ভর্তি থাকে এখানে। তার মধ্যে একজন রোগীর সাথে দুই-তিনজন স্বজনও থাকে। এমনিতেই রোগীর সংখ্যা বেশি, তার সাথে স্বজনদের চাপ। সবমিলিয়ে চাপের মধ্যেই থাকতে হয় চমেক হাসপাতালকে। রোগীর সাথে একজন সাহায্যকারী লাগে তা ঠিক আছে। কিন্তু চার-পাঁচজন থাকা খুবই দুঃখজনক। হাসপাতালের পরিধি নেই যে, রোগীর সাথে তাদের ২/৪ জন স্বজন রাত্রিযাপন করবে। অথবা তাদের প্রতিটি ওয়ার্ডে তাদের জন্য বসা,থাকা খাওয়াসহ কোন ব্যবস্থাই নেই। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছেÑরোগী ভর্তি থাকে ওয়ার্ডে, আর স্বজনরা হাসপাতালের বরান্দায় কিংবা সিঁড়িসহ বিভিন্ন ফ্লোরে বসে থাকে। অনেকেই বাসা-বাড়ির মতো ফ্লোরে ম্যাট্রিস বিছিয়ে ঘুমিয়েও পড়ে। তারাই হাসপাতালের বারান্দায় বসে খাবার গ্রহণসহ বিভিন্নভাবে ময়লা করে রাখে। এই সমস্যা নিয়ে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেকেই রোগীর বিছানায় বসে কিংবা শুয়ে থাকেন। কিন্তু তাদের সরে যাওয়ার জন্য বলা হয়। তবুও সরে না। কিন্তু এসব বিষয় সবার অনুধাবন করা উচিত। তাদের সবার মনে রাখা উচিত, এটি হাসপাপতাল। রোগীদের সেবা দিতে চিকিৎসক-নার্স কাজ করে থাকেন। এটা কোন হোটেল নয়। দেখা যায় চিকিৎসকরা তাদের সরে যেতে বললে তারাই বিভিন্ন ভাবে বাইরে গুজব ছড়ায়। সেবা নেই, ব্যবহার ভাল না, ইত্যাদি। কিন্তু বরাবরই প্রশ্ন থেকে যায়, হাসপাতালে রোগী ভর্তি করানো হয়, সুস্থতার জন্য। অসুস্থতার জন্য নয়। তাহলে একটি রুমের পাঁচ জনের ধারণ ক্ষমতায় যদি ২০ জন থাকে। এমনিতেই রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে। এসব বিষয় অনেকেই বুঝে না।
স্থানীয় হাসপাতালে সেবা বাড়লে চাপ কমবে চমেকে : চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রোগীর চাপ থাকার কারণ দেখিয়ে পরিচালক বলেন, জেলা-উপজেলাসহ স্থানীয় যেসকল হাসপাতাল রয়েছে, সে সকল হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম আরও বেশি সমৃদ্ধ করার দরকার। তা হলে চমেক হাসপাতালে অনেকাংশেই রোগী চাপ কমে আসবে। একই সাথে চিকিৎসা সেবা দিতেও চিকিৎসক-নার্সদের হয়রানি হতে হচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে কোন রোগী সেবা নিতে গেলেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চমেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনীতে একটা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আছে। রাঙ্গমাটি ও কক্সবাজারে রয়েছে। প্রতিটি জেলা উপজেলায় সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। কিন্তু তাতে সেবা নিয়ে রোগীরা সন্তুষ্ট নয়। এসব হাসপাতাল আরও বেশি উন্নত করা দরকার। একটা রেফারেল সিস্টেম হওয়া উচিত। বিশেষ করে উপজেলা হাসপাতালে কোন রোগী ভর্তি হলে, সরাসরি বিভাগীয় হাসপাতালে রোগীকে রেফার না করে আগে জেলা হাসপাতালে পাঠানো দরকার। কিন্তু এখন দেখা যায়, একটু কিছু হলেই চট্টগ্রামে পাঠায়। কিন্তু তা যদি না করে একটা রেফারেন্স সিস্টেম বজায় থাকতো, তাহলে হাসপাতালে রোগীদের চাপ যেমন কমে আসতো, তেমনি রোগীর কষ্টও অনেকাংশে লাঘব হতো। একই সাথে তাদের ব্যয়ের বিষয়টিও হ্রাস পেত। এর বাইরে আমি মনে করি শুধুমাত্র চট্টগ্রাম জেলায় যে পরিমাণ মানুষের বসবাস। সে তুলনায় সরকারি হাসপাতাল খুবই অপ্রতুল। একটি জেনারেল হাসপাতাল আর একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রয়েছে। তবে এখানে আরও ২/১টি জেনারেল হাসপাতালের প্রয়োজন রয়েছে চট্টগ্রাম এলাকার জন্য।
চিকিৎসকদের প্রতি আস্থা থাকতে হবে : হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মাত্র চারজন চিকিৎসক আছেন। কিন্তু জরুরি বিভাগে প্রতিদিন যে পরিমাণ রোগী সেবা নিতে আসে, তাতে তাদের সেবা দিতে গিয়ে গলদঘর্ম হতে হয় দায়িত্বরত চিকিৎসকদের। অসেক সময় দেখা যায়-একসাথে রোগী আসেন দশ থেকে পনের জন। তখন চিকিৎসক রোগীর অবস্থা বুঝেই সেবা দিয়ে থাকেন। যার অবস্থা গুরুতর তাকে আগে দেখতে হবে। যেটা কম গুরুত্ব সেটা একটু পরে দেখলেও হয়। কিন্তু দেখা যায় রোগীর সাথে থাকা স্বজনরা এটা নিয়েও নানানভাবে বিভ্রান্ত করে থাকেন। তার মধ্যে সবার মাঝে একটা জিনিস কাজ করে, আমাকেই চিকিৎসক আগে দেখতে হবে। এই চিন্তাভাবনাও আমাদের পরিবর্তন করা উচিত। চিকিৎসক কখনোই রোগীর খারাপ চায় না। তাদের প্রতি আমাদের আস্থা যেমন রাখতে হবে, তেমনি তাদের সহযোগিতাও করতে হবে আমাদের।
মাঝে মাঝে এমন কিছু বিষয় নিয়ে কিছু মানুষ ভুল ও বিভ্রান্তকর তথ্য ছড়ায়, যাতে অনেক কষ্ট লাগে। অনেকেই বলেন ডাক্তার ভুল চিকিৎসা দিচ্ছেন। কিন্তু যারা এই কথা বলেন, তারা নিজেরাও জানেনা কোন ভুল আর কোনটা সঠিক। তাহলে তিনি ভুল বলার কোন অধিকারও রাখে না। এসব কথা বার্তায় সাধারণ মানুষের মাঝে একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। আস্থা রাখতে হবে। কোন চিকিৎসক চাইবে না তার নিজের বদনাম হোক। প্রত্যেকে চেষ্টা করে তার সাধ্যমতো সেবা দিতে।
সংবাদ প্রকাশ কাজের গতি বাড়ায় : এক প্রশ্নের জবাবে সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ কাজের জন্য অনেক ভালো উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবসময় মিডিয়া আমাদের সহযোগিতা করে আসছে। সংবাদ প্রকাশ হলে কাজেরও বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কোন অনৈতিক কিছু হলে যারা এর সাথে সংশ্লিষ্ট তারাও সচেতন হচ্ছে। পত্রিকায় যদি ওঠে গেটের সামনে ময়লা পড়ে আছে, তাহলে হাসপাতালের পরিচ্ছন্ন বিভাগ ও সিটি কর্পোারেশন সাথে সাথে সচেতন হয়ে যাবে। এম্বুলেন্স যদি বেশি থাকে কিংবা মানুষ প্রতারিত হচ্ছে, তাহলে দালালরা ভয়ে থাকবে। আমরাও এ বিষয়ে তাদের কঠোরতা দিতে পারবো। এই সব রিপোর্ট হলে আমাদেরও সংশোধনের সুযোগ পাওয়া যায়। পাশাপাশি মানুষ সচেতন হচ্ছে। অতএব এটাকে নেগেটিভ নেওয়ার কিছুই নেই বলে মনে করি। কিন্তু কিছু কিছু জায়গা আছে, যাতে সবাইকে বুঝতে হবে এটি একটি হাসপাতাল।
প্রসঙ্গত : ১৯৫৭ সালের এক ঐতিহাসিক দিনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয়। প্রাথমিকভাবে আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালে পাঁচলাইশ এলাকায় ৮০ একর জায়গার উপর মূল ৬তলা ভবন স্থাপন করা হয়। ১৯৬০ সালে মাত্র ১২০ শয্যা ও অল্প কিছু রোগী নিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করে এ হাসপাতাল। পরবর্তীতে চার ধাপে এটি বর্তমানে ১৩১৩ শয্যার হাসপাতলে রূপান্তরিত হয়।
লেখক * পরিচালক, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট