মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডিআর কঙ্গো) বিদ্রোহী এম-২৩ গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন জাতিসংঘের ১৩ জন শান্তিরক্ষী। নিহতদের নয়জনই দক্ষিণ আফ্রিকার। রবিবার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
দক্ষিণ আফ্রিকার সামরিক বাহিনী বলেছে, কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলীয় গোমা শহরে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের অগ্রযাত্রাকে ব্যর্থ করে দেওয়ার সময় তাদের নয়জন সৈন্য মারা গেছেন। অন্যদিকে, নিহত বাকি শান্তিরক্ষীদের তিনজন মালাউইয়ান এবং একজন উরুগুয়ের সৈন্যও রয়েছেন।
বিবিসি বলছে, সংঘাত তীব্র হওয়ার সাথে সাথে জাতিসংঘ সমস্ত অপ্রয়োজনীয় কর্মীদের গোমা থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। এই শহরে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। এম-২৩ গ্রুপ রক্তপাত এড়াতে গোমায় কঙ্গোলিজ সৈন্যদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, সহিংসতা বন্ধে বৈশ্বিক আহ্বানের মধ্যেই তিনি কঙ্গো এবং রুয়ান্ডার নেতাদের সাথে কথা বলেছেন। যদিও বিদ্রোহে সমর্থন দেয়ার অভিযোগে কঙ্গো প্রতিবেশী রুয়ান্ডার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। এমন অবস্থায় ম্যাক্রোঁ শনিবার কঙ্গো এবং রুয়ান্ডার নেতাদের সাথে পৃথক ফোনকলে লড়াই বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন বলে তার কার্যালয় জানায়।
অন্যদিকে, কঙ্গোর সীমান্তে জড়ো হচ্ছে রুয়ান্ডার সেনারা। তারা যেকোন সময় কঙ্গোতে হামলা চালাতে পারে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান শনিবার জানিয়েছে, কঙ্গোর আঞ্চলিক রাজধানী গোমা দখলে সেখানকার সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সহায়তা করবে রুয়ান্ডার সেনারা।
ইতোমধ্যে গোপনে কঙ্গোতে রুয়ান্ডার শত শত সেনা প্রবেশ করেছে। এমন অবস্থায় সোমবার (২৭ জানুয়ারি) কঙ্গোর সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক হবে। এর আগেই আঞ্চলিক রাজধানী গোমা দখলের পরিকল্পনা করছে রুয়ান্ডার সেনা ও সশস্ত্র বিদ্রোহীরা।
নাম গোপন রাখার শর্তে সংবাদমাধ্যম অবজারভারকে একটি সূত্র বলেছে, কঙ্গোর ওপর চাপ প্রয়োগ করতে রুয়ান্ডা তাদের সেনাদের সীমান্তে জড়ো করেছে। এছাড়া রুয়ান্ডার সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ সিনিয়র কমান্ডার দেশটির গিসেনি শহরে অবস্থান নিয়েছেন। যা গোমা সীমান্ত থেকে মাত্র এক মাইল দূরে অবস্থিত।
২০১২ সালেও গোমা দখল করেছিল বিদ্রোহীরা। ওই সময় রুয়ান্ডা ব্যাপক আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়লে দ্রুতসময়ের মধ্যে বিদ্রোহীরা গোমা থেকে সরে গিয়েছিল। গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, এবার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বড় কোন পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই গোমা দখল করতে চায় রুয়ান্ডা ও বিদ্রোহীরা।
পূর্বকোণ/মাহমুদ