হঠাৎ করে কমে গিয়েছে কলকাতায় বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা। এ নিয়ে চিন্তিত কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকার হাজার হাজার ব্যবসায়ী।
পদ্মা সেতু হওয়ার পর যেভাবে কলকাতার নিউমার্কেট এলাকায় বাংলাদেশি হোটেল পাড়া বলে খ্যাত এলাকাগুলোতে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছিল; সেই ভিড় এখন প্রায় ইতিহাস। বিশেষ করে, গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশি পর্যটকদের উপস্থিতি আশঙ্কাজনকহারে কমে গেছে। কেন এই হাল? তার কারণ খুঁজে বের করে দ্রুত সেগুলো সমাধানের জন্য জরুরি বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন হোটেল পাড়ার শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
সোমবার ( ৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মার্কুইজস্ট্রিটের একটি আবাসিক হোটেলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সংশ্লিষ্ট একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে কাজ শুরু করেছি। বাংলাদেশি পর্যটকরা আমাদের কাছে লক্ষ্মী। তাদের কী সমস্যা সেটা আমরা আন্তরিকভাবে খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি এর মধ্যে তিনটাকে খুবই গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এগুলো হলো: প্রথমত, বাংলাদেশে থেকে ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তিতে জটিলতা, দ্বিতীয়ত, সীমান্তে দুই পাশে ইমিগ্রেশন-কাস্টম অতিক্রম করতে দীর্ঘ লাইন এবং অনেক ক্ষেত্রেই ছোটখাটো কাগজপত্র নিয়ে সীমাহীন ভোগান্তি এবং তৃতীয়ত, কলকাতায় হোটেল পাড়ার পর্যটকদের সার্বিক পরিষেবা। সোমবারের বৈঠকে মূলত এই বিষয়গুলো কীভাবে নিরসন করা সম্ভব হবে সেটা নিয়ে বেশ কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
মার্কুইজ স্ট্রিটের দুজন শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা নাছির আহমেদ এবং মনতোষ সরকার জানান, ‘বাংলাদেশি পর্যটকদের সুষ্ঠু পরিষেবা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। কোনওভাবেই একজন বাংলাদেশিও যাতে কোনও রকম প্রতারণার শিকার না হন, তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবছি। প্রয়োজনে একটা হট লাইন চালু করা হবে। যেকোনও বাংলাদেশি পর্যটক তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন। আমরা দ্রুত তার সমাধানের উদ্যোগ নেব।’
এছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তি যাতে আরও সহজ করা হয় এজন্য ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করার উদ্যোগ নিচ্ছেন কলকাতার ব্যবসায়ীর। প্রয়োজনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও তারা বৈঠক করবেন। কারণ বাংলাদেশি পর্যটক কমে গেলে আখেরে ভারতের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই পর্যটক ও মেডিকেল ভিসা প্রাপ্তি কীভাবে আরও সহজতর করা সম্ভব হয় সেটার একটা খসড়া প্রস্তাব সোমবারের বৈঠকে পাস হবে বলেও ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানিয়েছেন।
কলকাতার নিউমার্কেট এলাকার সদরস্ট্রিট, মার্কুইজস্ট্রিট, ফ্রিস্কুল স্ট্রিট, রফি আমমেদ কিদয় স্ট্রিটসহ আশপাশের বহু স্ট্রিটে অসংখ্য আবাসিক হোটেল রয়েছে। এছাড়াও নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসার প্রায় সিংহভাগই বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর নির্ভর করে। সেই সঙ্গে সেখানে রয়েছে ছোটবড় খাবারের ও ওষুধের দোকান। এ ছাড়া কলকাতা-ঢাকা রুটের সরাসরি ও কাটা সার্ভিসের পরিবহন সংস্থার অফিসও আছে কলকাতায়। সব মিলিয়ে প্রায় লক্ষাধিক লোকের জীবন-জীবিকা পুরোপুরি নির্ভর করে বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর।
একটি অনলাইন বার্তা সংস্থার খবর
পূর্বকোণ/এএইচ