চট্টগ্রাম রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

তিন বছর ধরে ঝুলছে প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩১ মে, ২০২৩ | ১২:০৩ অপরাহ্ণ

২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর কর্ণফুলী নদীর ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙনরোধে আশ্বাস দিয়েছিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম।  ২০২১ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি। প্রকল্পটির পেছনে ঘুরতে ঘুরতে পারপারে চলে গেলেন সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ। এর আগে প্রয়াত সংসদ সদস্য মইনউদ্দিন খান বাদলও দীর্ঘদিন ঘুরেছিলেন। তারপরও আলোর মুখ দেখেনি প্রকল্পটি।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (রাঙামাটি বিভাগ) তনয় কুমার ত্রিপুরা পূর্বকোণকে বলেন, ‘কর্ণফুলী নদী ও সংযুক্ত খালের ভাঙনরোধ প্রকল্পটি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের পর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছে। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রকল্পটি এগোচ্ছে। আশা করছি, শিগগিরই প্রকল্পটি একনেক সভায় উত্থাপন করা হবে।’

 

পাউবো জানায়, প্রকল্প প্রস্তাবনায় মেয়াদকাল ধরা হয়েছে গত বছরের জুলাই থেকে। ২০২৫ সালের জুন মাসে প্রকল্প শেষ করার কথা রয়েছে। সরকারের অর্থায়নে প্রকল্প ধরা হয়েছে। কিন্তু বৈশি^ক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে চাপা পড়ে প্রকল্পটি।

 

গত বছরের শুরুতে প্রকল্পটির ডিপিপি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কর্ণফুলী নদী, বোয়ালখালী-চন্দরিয়া ও রায়খালী খালসহ সংলগ্ন খালের ভাঙনরোধ প্রকল্পটি কাটছাঁটের পর ১৪৪ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় সাশ্রয় ও নতুন প্রকল্পে নিরুৎসাহিত করার কারণে এক বছর ধরে প্রকল্পটি মন্ত্রণালয়ে পড়ে রয়েছে। সম্প্রতি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হয়ে পরিকল্পনা কমিশনে যাচ্ছে।

 

কর্ণফুলী নদী ও খালের ভাঙন দীর্ঘদিনের। ভাঙনরোধে আশ্বাস ছাড়া বড় কোনো প্রকল্প নেওয়া হয়নি। ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে সংসদ সদস্য মইনউদ্দিন খান বাদল (প্রয়াত) ৭২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। ২০১৮ সালের এপ্রিলে কর্ণফুলী নদীর ভাঙনরোধে ৩৫১ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রয়াত সংসদ সদস্য মইনউদ্দিন খান বাদল এ প্রকল্প নিয়ে বোয়ালখালীবাসীকে অনেক স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। এছাড়াও রাঙ্গুনিয়া আসনের সংসদ সদস্য এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নির্বাচনী এলাকা শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নে ভাঙনরোধে সিসি ব্লক বসানো হয়েছে। মোছলেম উদ্দিন আহমদ চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর নদী ও খালের ভাঙনরোধে বড় প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেন। প্রকল্পের ডিপিপিও জমা দেওয়া হয় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু বড় প্রকল্পে সরকারের অর্থ সাশ্রয়ের ফাঁদে পড়ে বছরখানেক আটকে থাকে প্রকল্পটি। ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি মোছলেম উদ্দিন আহমদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ভাঙনরোধে নতুন করে প্রকল্পের উদ্যোগ নেয়া হয়। গত ৫ ফেব্রুয়ারি মারা যান মোছলেম উদ্দিন আহমদও।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মোছলেম উদ্দিনের মৃত্যুর পর পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী প্রকল্পটির খোঁজ-খবর নেন। দীর্ঘদিন ধরে মন্ত্রণালয়ে পড়ে থাকার পর প্রকল্পটি পাস করা হয়। একনেক সভায় পাঠানোর চেষ্টা করছেন তিনি। ওই কর্মকর্তা বলেন, মোছলেম উদ্দিন ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী একসঙ্গে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙনরোধের আশ্বাস দিয়েছিলেন। জীবদ্দশায় প্রকল্পটি পাস করানোর চেষ্টাও করেছিলেন তিনি। এখন মোছলেম উদ্দিনের মৃত্যুর পর পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী প্রকল্পটি অনুমোদন করানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট