চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিপাকে চবি শিক্ষার্থীরা

রায়হান উদ্দিন, চবি

২৭ জুন, ২০২১ | ১০:১১ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘদিন বন্ধের পর গত ১৫ জুন সশরীরে একাডেমিক পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। পরবর্তীতে বিভিন্ন বিভাগ পরীক্ষার রুটিনও প্রকাশ করে। কিন্তু পরীক্ষাগুলো শুরু না হতেই সোমবার থেকে সরকার দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করে। ফলে সরকারের সাথে সমন্বয় করে শনিবার বিকেলে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব পরীক্ষা স্থগিত করে। কিন্তু রাতে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ৩০ জুন অর্থাৎ কঠোর লকডাউনের আগ পর্যন্ত পরীক্ষা চালিযে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও সরকারের সাথে সমন্বয় করতেই এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, ‘সরকার সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে লকডাউন ঘোষণা করায় আমরা পরীক্ষা চালিয়ে যাবো। বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দের মৌখিক পরামর্শে পরবর্তী সরকারি প্রজ্ঞাপন না আসা পর্যন্ত ৩০ জুন পর্যন্ত পরীক্ষা চলবে। এরপর পরীক্ষা স্থগিত হবে কিনা সে বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’ প্রশাসনের হুট করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনকে দূরদর্শিতার অভাব বলে মনে করছেন পরীক্ষা দিতে এসে হয়রানির সম্মুখীন হওয়া অনেক শিক্ষার্থীরা। বিকেলে পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টা জানতে পেরে অনেক শিক্ষার্থী বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন বলে দাবি তাদের। অন্যদিকে পরীক্ষার নেওয়ার সিদ্ধান্তে আশার আলো দেখলেও ৩০ জুনের পর পরীক্ষা স্থগিত হলে পরবর্তী শিক্ষাজীবন ও চাকরিতে প্রবেশ নিয়ে আবারও সংশয়ে পড়তে হবে শিক্ষার্থীদের। পরীক্ষা নিয়ে প্রশাসন প্রহসন শুরু করছে দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ ঝাড়ছেন ভোগান্তিতে পড়া এসব শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। পরীক্ষা শুরুর নির্দেশনা দেওয়ার পর হল বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই মেসে অবস্থান করে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন এসব শিক্ষার্থী। কিন্তু এখন আবার হঠাৎ পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় মেস ছেড়ে যাবেন কি না, সেটা নিয়েও দ্বিধায় রয়েছেন। এছাড়া শারীরিক ও মানসিকভাবেও তারা ভেঙে পড়েছেন। তারা বলছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রীতিমতো রসিকতা করা হচ্ছে।

যা বলছেন শিক্ষার্থীরা :
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মুশফিক রাহাত পূর্বকোণকে বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষার মাঝামাঝি বন্ধ কেন করতে হবে? এত দূর-দুরান্ত থেকে সবাই নিজ দায়িত্বে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরীক্ষা দিতে আসছে। যখন চাইলাম পরীক্ষা দিয়ে দিলাম, যখন ইচ্ছা বন্ধ করে দিলাম। আমাদের জান, মাল এর মূল্য নাই?’
তাজিন সুলতানা নামে এক ছাত্রী বলেন, ‘হল না খুলে, পরীক্ষা নেয়ার কথা বলে আমাদের চট্টগ্রামে টেনে আনা হলো। জায়গা ম্যানেজ করতে কতটা কস্ট হয়েছে তা বলা বাহুল্য।

কর্তৃপক্ষের বক্তব্য :
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের কষ্ট বুঝছি। কিন্তু এ মুহূর্তে আমাদের কিছু করার নেই। সরকারি সিদ্ধান্ত আমাদের মেনে চলতে হবে।’

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট