চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আজ মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর
আজ মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর

আজ মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর

রায়হান আজাদ

২০ মে, ২০২০ | ৩:২৮ অপরাহ্ণ

আজ বহুল প্রতিক্ষিত লাইলাতুল কদর তথা কদরের রাত। এ রাতে আল্লাহ পাকের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ রাত এত বেশি ফজিলত ও বরকতময় যে, যার তুলনা তামাম মাখলুকাতের আর কোন কিছুর সাথে হয় না। এ রাতের সত্যায়নে সুরাতুল কদর ছাড়াও সুরা দোখানে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “হামীম, শপথ সুষ্পষ্ট কিতাবের। আমি একে (কুরআন শরীফ) নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী। আপনার পালনকর্তার পক্ষ হতে রহমত স্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ”।-(আদ্ধসঢ়; দোখান ১-৬)

লাইলাতুল কদরে হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম ফেরেশতাদের একটি বিরাট দল নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং যত নারী পুরুষ নামাজ অথবা যিকর-আযকারে মশগুল থাকে তাদের জন্য রহমতের দু‘আ করেন।- মাযহারী। হাদীস শরীফে রেওয়ায়েত হয়েছে, “রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রী উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা একবার নবীজীর খেদমতে আরজ করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কদরের রাত তো মর্যাদার রাত। একটু বলেন কীভাবে এ রাতে প্রার্থনা করবো? জবাবে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, হে আয়েশা, আল্লাহর দরবারে অশ্রু সজল নয়নে কায়মনোবাক্যে দু‘আ করবে- “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন করীম, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা‘ফু আন্নি”- অর্থঃ হে আল্লাহ আপনি তো মহান ক্ষমাশীল, ক্ষমা করাকে পছন্দ করেন। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করুন।

লাইলাতুল কদরের করণীয় সম্পর্কে হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন,“ যে ব্যক্তি কদরের রাতে ঈমান সহকারে সাওয়াবের আশায় ইবাদত করে তার পূর্বের গুনাহসমূহ মাফ করা হয়।-  (বুখারী শরীফ) সুতরাং এ রাতে নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, তাসবীহ-তাহলীল, দান-ছাদাকা, ওয়াজ-নছীহত, দরুদ শরীফ ইত্যাদি ইবাদতের মাধ্যমে পুরো রাত জেগে কাটাতে হবে। আল্লাহর কাছে অঝর নয়নে কান্না করে তাওবাহ-ইসতিহফারের মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নিতে হবে। তবে সবসময়ের জন্য মনে রাখতে হবে, এ রাতের যাবতীয় ইবাদত কিন্তু সুন্নাত-নফল পর্যায়ের। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কোন অবকাশ নেই। কিন্তু জীবনের কোন সময়েই যেন কোন মুসলমান ফরজ ত্যাগ না করে এবং হালাল ছাড়া আর কিছু গ্রহণ না করে সে ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। কারণ যার দৈনন্দিন ফরজে যথাযথ গুরুত্ব নেই এবং যিনি হালাল খাবার খান না, আল্লাহ পাক তার কোন আমলই গ্রহণ করেন না। এ রাতে ফেরেশতারা রহমতের সাওগাত নিয়ে মুসলমানের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ালেও যারা মুশরিক, যাদুকর, নেশাখোর, ব্যভিচারী, মা বাবার অবাধ্য, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী, কৃপণ, খুনি ও ঘুষখোরের ধারে কাছেও যান না।

আসুন, অত্যন্ত ভক্তি ও শ্রদ্ধা সহকারে সারারাত নফল ইবাদতের মাধ্যমে হাজার মাস থেকে শ্রেষ্ঠ রাত্রি লাইলাতুল কদরের ফযীলত অন্বেষণ করি। করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতা থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের তাওবা কবুল করে রহমত নাযিল করুন। আমিন।

পূর্বকোণ/ এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট