চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

দ্বিগুণ খরচে দুবাই হয়ে কুয়েতে ফিরছে বাংলাদেশিরা

দ্বিগুণ খরচে দুবাই হয়ে কুয়েতে ফিরছে বাংলাদেশিরা

কুয়েত সংবাদদাতা

১৫ অক্টোবর, ২০২০ | ৭:০৬ অপরাহ্ণ

করোনার কারণে চলতি বছরের ১৩ মার্চ হতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেয় কুয়েত। করোনার কারণে ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার আগে ছুটিতে গিয়ে আটকেপড়া প্রবাসীরা পড়েছেন বিপাকে। গত ১ আগস্ট সীমিত পরিসরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নেয় কুয়েত। করোনা পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্থান, মিশর, নেপালসহ বর্তমানে ৩৪ দেশের সাথে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কুয়েত।

দীর্ঘদিন ছুটিতে দেশের থাকায় হতাশগ্রস্থ আর অর্থ কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করছে প্রবাসী পরিবারগুলো। ফ্লাইট চালুর আশার অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে অনেকেই হারিয়েছেন চাকুরি আবার অনেকের হারিয়েছেন কুয়েতে প্রবেশে বৈধতা আকামার মেয়াদ। কুয়েতে থেকে ছুটিতে গিয়ে যে সকল প্রবাসীদের আকামার মেয়াদ রয়েছে তারা উপায় খুজছেন নিজ কর্মস্থলে ফিরতে। প্রবেশ নিষিদ্ধ ৩৪ দেশ ব্যতীত অন্য যেকোনো দেশ হয়ে কুয়েত প্রবেশের সুযোগ রয়েছে তবে ওই দেশের ১৪ দিন থাকার পর পিসিআর সনদ নিয়ে কুয়েতে প্রবেশ করতে হবে। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভ্রমণ ভিসা সহজ হওয়াতে মিশর,ভারত, পাকিস্থানের নাগরিকরা সংযুক্ত আরব আমিরাত হয়ে ১৪ দিন থাকার পর পিসিআর সনদ নিয়ে কুয়েতে প্রবেশ করেছ। অন্য দেশের নাগরিকরা এক লাখ টাকার মধ্যে কুয়েতে প্রবেশে খরচ হলেও সেক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের খরচ হচ্ছে দুই লাখ থেকে তিন লাখ টাকার মতো।

ট্রাভেল এজেন্সির কন্ট্রাক করে ঝুঁকি নিয়ে এত টাকা দিয়ে যাদের খুব বেশি জরুরি প্রয়োজন শুধু তারাই আসছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর হতে দুবাইয়ের ভিজিট ভিসা নিয়ে আসা অনেক প্রবাসীকে যেতে দেয়া হয়নি। যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ট্রাভেল এজেন্সিগুলো বেশি টাকা নেয়ার কারণে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে দুবাইয়ে ভিসা ও টিকেট নিয়েছে কোন ট্রাভেল এজেন্সির সাথে কন্ট্রাক করেনি তাই তাদের যেতে দেয়া হচ্ছে না।

ভিজিট ভিসায় দুবাইতে অবস্থানরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী বলেন, ভারত, পাকিস্তান, মিশরের নাগরিকরা কম খরচে দুবাই হয়ে কুয়েতে প্রবেশ করছে কোন ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় না। আমাদের বাংলাদেশি প্রবাসীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির লোক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টাকা কামানো নেশায় মেতে উঠে। সিন্ডিকেটের বাহিরে কেউ যেতে চাই তাকে বিমানবন্দরে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয়।

দুবাই হয়ে কুয়েতে আসা মোহাম্মদ সেলিম হাওলাদার বলেন, দুবাই হয়ে কুয়েতে আসা আমাদের বাংলাদেশিদের জন্য অন্য দেশের তুলনায় খরচ তুলনামূলক অনেক বেশি এবং যাত্রীদের ঝুঁকি নিতে হয়। দেশ থেকে আসতে পিসিআর সনদ নিতে হয়। ৩৪ দেশ ব্যতীত দুবাই বা অন্য যেকোন দেশে ১৪ দিন থাকার পর সেই দেশ হতে পিসিআর সনদ নিয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কুয়েত প্রবেশ করতে হয়। এক্ষেত্রে কুয়েতে আসতে দুবাইতে ভিজিট ভিসার বিভিন্ন দেশের যাত্রীর সংখ্যা বেশি হওয়াতে দুবাই থেকে কুয়েতের টিকেটে মূল্য অন্য যেকোন সময়ের তুলনা অনেক বেশি। দুবাই কুয়েত টিকেটের চাহিদা বেশি থাকার কারণে দেখা দিয়েছে টিকেট সংকট।

ভিজিট ভিসায় যাত্রীদের যে ঝুঁকি সে বিষয়ে তিনি বলেন, দুবাইয়ে আসার পর যদি সে করোনা পজেটিভ হয় অথবা দুবাই ও কুয়েত সরকার তাৎক্ষণিক কোন সিদ্ধান্তের কারণে যদি কুয়েতে প্রবেশ করতে না পারে এক্ষেত্রে ট্রাভেল এজেন্সি কোন ধরণে দায়ভার বহন করে না। এ সময় যাত্রীরা আর্থিক ক্ষতি সম্মুখীন হতে পারে। দুবাই থেকে কুয়েতের ফ্লাইট মূল্য বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৬শ’ থেকে সাড়ে ৭শ’ দিনার। যেটা স্বাভাবিক মূল্য ছিল ৬০-১২০ দিনার। যার কারণে দুবাই ১৪ দিন থাকার পর পিসিআর সনদ নিয়ে ওমান ও কাতার ট্রান্জিট হয়ে কুয়েতে প্রবেশ করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কুয়েত সফরে এসে কুয়েতের নতুন আমির শেখ নওয়াফ ও কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশের সাথে কুয়েতে ফ্লাইট চালুর আহ্বান জানান।

 

 

পূর্বকোণ/রিপন-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট